Shomoyer Khobor
সুরাইয়া ইসলাম মীম | প্রকাশিত ২১ জানুয়ারী, ২০২১ ০০:৫১:০০
ইশরাত জাহান মিতু। ২৩ বছর বয়সী একজন পেশাদার ফিটনেস ট্রেইনার। এখন তার তারুণ্যে ভরপুর সময়। জীবনের এই দুরন্ত সময়কে কাজে লাগিয়ে গতানুগতিকতার বাইরে এসে এই তরুণী এখন এখন শরীর চর্চা তথা বডি ফিটনেস সেন্টারের উদ্যোক্তা।
ফিটনেস সেন্টার, যা শুধুমাত্র পুরুষদেরই ব্যবসা সেই ধারনাকে পাল্টে দিয়ে খুলনা মহানগরীতে প্রথম অ্যারোবিকস ফিটনেস সেন্টারের উদ্যোক্তা হয়েছেন এই তরুণী। তার এই ফিটনেস সেন্টারের নাম ‘ফিট উইথ অ্যারোবিকস্’।
আজ মিতুর ৭০ জনেরও বেশি ফিটনেস শিক্ষার্থী। একাডেমিকসহ অনলাইনেও দেশ ও দেশের বাইরে শিক্ষার্থী রয়েছে তার। আজ এই সফলতার অতীত শুরু হয়েছিল নিজের বেডরুম থেকেই। এটি জানতে হলে যেতে হবে আরো অনেক পেছনে, ২০১৯ সালে।
শূন্য টাকা এবং ৫ বছরের এক্সারসাইজের অভিজ্ঞতা থেকে শুরুটা ছিল। আজকের সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন তাঁর মা। সব সময় তাঁর পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছেন, অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। আজ তিনি এই জায়গায় আসতে পেরেছেন তার মায়ের অনুপ্রেরণায়।
মিতু জানান, প্রথমে তিনি শিক্ষার্থীদের বাসায় যেয়ে অ্যারোবিকস শেখাতেন। এই সময়ে তিনি বাসায় বাসায় হেটে গিয়েছেন অনেক পথ। শিক্ষার্থী অবস্থায় তিনি টাকা সাশ্রয় করতেন এভাবেই তবুও থেমে যাননি নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নে। এরপর নিজের বেডরুমেই ৬ শিক্ষার্থীকে নিয়েই শুরু হয় আর ৪৫ দিনের মধ্যেই তার দুইটা ফিটনেস ব্যাচ শুরু হয় ২০ জনের। ৩ মাসের মধ্যেই তার আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
৩ মাস পরেই শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পাওয়ায় বাসার পাশেই ৪ হাজার টাকা দিয়ে বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন মিতু। এভাবেই কার্যক্রম শুরু মিতুর স্বপ্নের ফিটনেস সেন্টার। মহানগরীতে নারীদের জন্য একাধিক অ্যারোবিকস ফিটনেস সেন্টার ছিলো না। ‘ফিট উইথ অ্যারোবিকস’ প্রথম-যার উদ্যোক্তাও এই ইশরাত জাহান মিতু।
‘ফিট উইথ অ্যারোবিকস’ প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে মিতু জানান, এই পেশা তার ভালবাসার জায়গা। ভবিষ্যতে অ্যারোবিকস নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যেতে চাই। এই প্রতিষ্ঠান আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। এই স্বপ্নটি এখন আলোয় এসেছে। শুধুমাত্র নারীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত এই অ্যারোবিকস সেন্টারে অনলাইন এবং অফলাইনে নারীরা শরীর চর্চা করতে পারবেন। অ্যারোবিকস করে যে কোন বয়সে নিজেকে ফিট রাখার জন্য প্রস্তুত করা যাবে। সম্ভব হবে শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা ফ্যাট কমানো। ওজন কমানো বা ওজন বৃদ্ধি রোধ করা। সিজারিয়ান নারী দেহের ওজন কমানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তারা এখানে আসেন অ্যারোবিকসের মাধ্যমে ওজন কমাতে।
তরুণ নারী উদ্যোক্তা ইশরাত জাহান মিতু বলেন, নারীরা সাধারণত অ্যারোবিকস সেন্টারের উদ্যোক্তা হতে চান না। কিন্তু আমি সাহস করেছি, ঝুঁকি নিয়েছি। আগে একটি ফিটনেস সেন্টারে চাকুরি করতাম, এখন নিজের স্বাধীন কর্মসংস্থান হয়েছে। ভবিষ্যতে ‘ফিট উইথ অ্যারোবিকস’ এর নতুন শাখা তৈরি হবে এবং সেখানে অনেক নারীর কর্মসংস্থান হবে। এই স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান নিয়ে আমি এগিয়ে যেতে চাই বহুদুর।