Shomoyer Khobor
এস এম আমিনুল ইসলাম | প্রকাশিত ২০ মার্চ, ২০২১ ০০:০০:০০
খুলনায় ঊর্ধ্বমুখী নির্মাণ সামগ্রীর দাম। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে কোম্পানি ভেদে গড়ে রড টন প্রতি ১৩-১৪ হাজার টাকা, সিমেন্ট বস্তাপ্রতি ৬০-৭০ টাকা, ঢেউ টিন প্রতি বান্ডিলে ১৫শ’ টাকা ও প্লাস্টিক পাইপের দাম শতকরা ৪০-৫০ ভাগ বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ভোক্তাদের। বিপাকে ব্যবসায়ীরাও। পাশাপাশি চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের গতি নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।
জানা গেছে, দেশীয় অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও নির্মাণ কাজের অপরিহার্য উপাদান রড-সিমেন্টের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলেছে। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে (জানুয়ারি-ফেব্র“য়ারি) ইমারত নির্মাণের অন্যতম উপকরণ এম এস, বিএসআরএম, কেএসআরএম, সিএসআরএম, এসএসআরএম, জিপিএইচ ইস্পাত, বিএসআইসহ কোম্পানি ভেদে প্রতি টন রডের দাম বেড়েছে গড়ে ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা।
অন্যদিকে বর্তমানে বাজারে এ্যালিফ্যান্ট ব্রান্ডের ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা সিমেন্টের দাম ৪৮০ থেকে ৪৯০ টাকা। দুই মাস আগে প্রতি বস্তা সিমেন্ট ৩৮০ থেকে ৩৯০ টাকার মধ্যে ছিল। বস্তা প্রতি সিমেন্টের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। এছাড়া বসুন্ধরা, শাহ সিমেন্ট, ক্রাউন, প্রিমিয়াম, সেভেন রিংসসহ কোম্পানি ভেদে বস্তাপ্রতি দাম গড়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
রড টন প্রতি | ১৩-১৪ হাজার টাকা |
সিমেন্ট বস্তাপ্রতি | ৬০-৭০ টাকা |
ঢেউ টিন প্রতি বান্ডিলে | ১৫শ’ টাকা |
প্লাস্টিক পাইপ | শতকরা ৪০-৫০ ভাগ বেড়েছে |
শুধু রড ও সিমেন্ট নয়! উপকরণের মধ্যে ঢেউ টিন ও প্লাস্টিক পাইপেরও দাম বেড়েছে। আবুল খায়ের-এর গরু মার্কা, আনোয়ারের মুরগী মার্কাসহ কোম্পানি ভেদে প্রতি বান্ডিলে ১৫শ’ টাকা। বিআরবি, ন্যাশনাল পরিমাল, আরএফএল, মদিনা, হাতিমসহ কোম্পানিভেদে দাম বেড়েছে শতকরা ৪০-৫০ ভাগ। এ অবস্থায় হিমশিম খেতে হচ্ছে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের।
ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক মালবাহী জাহাজ চীন চড়া রেটে ভাড়া করে নিয়ে গেছে। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধি ও সিজনাল কিছু কারণও থাকে। এই সময়ে নির্মাণ সামগ্রীর চাহিদা বেশি থাকে। ফলে অস্বাভাবিকভাবে নির্মাণ উপকরণের দাম বেড়েছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়, রড-সিমেন্টের দাম বেড়ে যাওয়ায় সব ধরনের উন্নয়ন কাজে এর প্রভাব পড়ছে। যে কারণে হয় ঠিকাদারদের বেশি খরচে কাজ চালিয়ে যেতে হবে, না হয় রড়ের দাম কমার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। বেশির ভাগ ঠিকাদারই দাম কমার জন্য উন্নয়ন কাজ ফেলে রেখে অপেক্ষা করবেন। এতে করে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
আবাসন ব্যবসায়ীরা জানান, আবাসন খাতেও নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে। ঘুরে দাঁড়ানোর মুহূর্তে উপকরণের দাম বৃদ্ধি এ খাতটিকে বিরূপ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেবে এমন শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে কামরু আহসানসহ নিম্ন-মধ্য আয়ের জনগোষ্ঠী বলেন, তারা সাধারণত কাঁদা-মাটি, কাঁচা-পাকা ইটের বা চাঁচের দেওয়াল দিয়ে ঘিরে টিনের ছাউনি দিয়ে বসবাস করেন। কিন্তু টিনের দাম বৃদ্ধিতে আগামী বর্ষা মৌসুমে তাদের দুর্ভোগে পড়তে হবে।