খুলনা | শুক্রবার | ০৪ জুলাই ২০২৫ | ২০ আষাঢ় ১৪৩২

সাভারে তেলের লরি উল্টে আগুনে পুড়লো ৫ গাড়ি

দগ্ধ ৭ জনই বার্ন ইনস্টিটিউটে, প্রাণ গেল যশোরের ইকবালসহ দুই জনের

খবর প্রতিবেদন |
০১:১১ এ.এম | ০৩ এপ্রিল ২০২৪


রাজধানীর সাভারের জোরপুল এলাকায় একটি তেলের লরির সঙ্গে পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ওই দুইটি যানসহ মোট পাঁচটি গাড়িতে আগুন লাগে। এ ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন ও সাতজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাভার ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল ইসলাম ও ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক মোঃ তরিকুল ইসলাম।
এর আগে, এদিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হেমায়েতপুরের জোরপুল এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর পরে ওই রুটে দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল।
নিহতদের মধ্যে একজনের নাম ইকবাল হোসেন। তিনি যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার বাসিন্দা। এছাড়া অপরজনের নাম মোঃ নজরুল ইসলাম। তার বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া বাকি সাতজন হলেন মিলন মোল­া (২২), মীম (৫), আল আমিন (৩৫), নিরঞ্জন (৪৫), হেলাল (৩০), আব্দুস সালাম (৩৫) ও সাকিব (২৪)। তাদের মধ্যে মিলন মোল­া শরীরের ৪৫ শতাংশ, শিশু মীমের শরীরের ২০ শতাংশ, আল আমিনের  ১০ শতাংশ, নিরঞ্জনের ৮ শতাংশ, আব্দুস সালামের ৫ শতাংশ ও  হেলাল, সাকিব ও নিহত নজরুল ইসলামের শরীরের ১০০ শতাংশ পুড়ে যায়।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক মোঃ তরিকুল ইসলাম জানান, সকালে সাভারে লরি উল্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হাসপাতালে আটজন দগ্ধ রোগী এসেছেন। তাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম নামে একজনকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই পথে মৃত্যু হয়। তিন জনের শরীরের ১০০ শতাংশই পুড়ে গেছে। বাকিদের তুলনামূলক কম পুড়েছে। তবে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নজরুল ইসলাম নামে একজনের মৃত্যু হয়। বাকি সাত জনকে জরুরি বিভাগে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাদের ড্রেসিং সম্পন্ন না হলে দগ্ধের পরিমাণ জানা সম্ভব হচ্ছে না। দগ্ধদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান তিনি।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, ভোর ৫টা ৩৮ মিনিটে লড়ি উল্টে আগুন ধরার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিস। প্রথমে সাভার ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। আগুনের তীব্রতা বেশি থাকায় পরে হেমায়েতপুর ট্যানারি শিল্প এলাকার দুইটি ইউনিট ও রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আরও একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যোগ দেয়। সকাল ৫টা ৩৮ থেকে ৭ টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। লরির আগুন ছড়িয়ে চারটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেটকারও পুড়ে যায়। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয় ও আটজনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।
সাভার ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। আটজন দগ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  
সাভার হাইওয়ে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই বাবুল আক্তার বলেন, সকালে লরি উল্টে আগুন ধরে গেলে চারটি ট্রাক ও একটি প্রাইভেটকার পুড়ে যায়। এ সময় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান জানান, সকাল ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর সকাল ৮টার দিকে এই রুটে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজামান জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা হবে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের জোরপুল এলাকায় সড়ক বিভাজকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তেলবাহী লরি উল্টে আগুন ধরে যায়। পরে সেটি পাশের প্রাইভেটকারসহ ৫টি ট্রাকে ছড়িয়ে পড়ে। 

্রিন্ট

আরও সংবদ