খুলনা | রবিবার | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বান্দরবানের সোনালী ব্যাংকের ৬ শাখায় লেনদেন স্থগিত, রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়িতে সতর্কতা

থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হানা, ১৭ লাখ টাকা লুট

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪১ এ.এম | ০৪ এপ্রিল ২০২৪


ডাকাতির ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের বান্দরবানের উপজেলা পর্যায়ের ৬টি শাখায় লেনদেন সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির ১৯টি এবং খাগড়াছড়ির ৯টি শাখায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় সতর্কভাবে লেনদেন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে সোনালী ব্যাংকের জিএম (দক্ষিণ) সাইফুল আজিজ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, বুধবার বেলা ১১টার দিকে বান্দরবানের থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়।
সোনালী ব্যাংকের রুমা উপজেলা শাখায় দুর্ধর্ষ ডাকাতির পর এবার বান্দরবানের থানচিতে দিনে দুপুরে সোনালী ও কৃষি ব্যাংক লুট হয়েছে।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অস্ত্রধারী ৩০ জন আনসার বাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় তিনটি চান্দের গাড়িতে করে এসে প্রায় একই সময় সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের শাখা কার্যালয়ে প্রবেশ করে। ১০ মিনিটের মধ্যে অস্ত্রধারীরা সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের ৩০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকার বেশি এবং ১৫টি স্মার্টফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের আসার খবর পেয়ে অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যায়। তবে দুই ব্যাংকের ভল্ট অক্ষত আছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দু’টি গাড়িতে করে মোট ২৫-৩০ জনের একটি সশস্ত্র দল এ ডাকাতিতে অংশ নেয়। থানচি থানার ওসি জসিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে আছি।’
সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ওমর ফারুক বলেন, ‘ডাকাতরা ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। আমাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে অফিশিয়ালি ঠিক কত টাকা লুট হয়েছে তা তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না।’
সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক ভুক্তভোগী গ্রাহক আরমান বলেন, ‘আমি ভেতরে ছিলাম, ডাকাতরা মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে মোবাইল ফোনসহ আমার সঙ্গে থাকা সব টাকা নিয়ে গেছে।’
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মামুন জানান, দু’টি ব্যাংক থেকে মোট ১৭ লাখ ৪৫ হাজার লুট করে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসী দল।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে রুমায় সোনালী ব্যাংক থেকে অস্ত্র ও টাকা লুট করে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ৫০-৬০ জনের সশস্ত্র দল রুমা সোনালী ব্যাংকে প্রবেশ করে। এ সময় অস্ত্রের মুখে ব্যাংকের পাহারায় থাকা পুলিশ, আনসার সদস্যদের দু’টি সাব-মেশিন গান ও এর ৬০ রাউন্ড গুলি, আটটি চাইনিজ রাইফেল ও এর ৩২০ রাউন্ড গুলি এবং চারটি শটগান ও ৩৫ রাউন্ড গুলি লুট করে তারা। এ সময় ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এদিকে বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি ও আগ্নেয়াস্ত্র লুটের ১৪ ঘণ্টা পার হলেও মামলা হয়নি। বুধবার সকালে জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
তার আগে, মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রুমায় সোনালী ব্যাংক থেকে অস্ত্র ও টাকা লুট করে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল।
ভল্ট অক্ষত লুট হয়নি টাকা : বান্দরবানের রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকের শাখা থেকে কোনো টাকা লুট হয়নি। মঙ্গলবার রাতে ডাকাতি হওয়া ওই ব্যাংকের ভল্ট অক্ষত আছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি এ কথা জানান।
শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, সিআইডির চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ইউনিটের দু’টি দল রুমায় গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। পরে ব্যাংকের ভল্ট খুলে সব টাকা গুণে দেখা হয়। দেখা যায়, মঙ্গলবার রাখা ১ কোটি ৫৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকার পুরোটা রয়েছে। 
তিনি বলেন, একসঙ্গে দু’টি চাবি দিয়ে ভল্ট খুলতে হয়। কোনো কারণে অস্ত্রধারীরা হয়তো ভল্ট খুলতে পারেনি।
স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনা ঘটিয়েছে কেএনএফ সদস্যরা। তারা ব্যাংকের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সদস্য এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে পাহারায় থাকা আনসার সদস্যদের কাছ থেকে দু’টি এসএমজি (লাইট মেশিন গান) ও ৬০টি গুলি, ৮টি চীনা রাইফেল ও ৩২০টি গুলি এবং ৪টি শটগান ও ৩৫টি কার্তুজ নিয়ে গেছে। এছাড়া কেনএনএফের অস্ত্রধারীরা যাওয়ার সময় সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ব্যবস্থাপক নিজামুদ্দিনকে নিয়ে যায় বলে স্থানীয় লোকজন বলছেন। আজ বিকেল পর্যন্ত তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। 
এদিকে বুধবার দুপুর একটার দিকে বান্দরবানের থানচি উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের দু’টি শাখায় ডাকাতি করে অস্ত্রধারীরা। তারা সাড়ে ১৭ লাখ টাকা নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন ব্যাংক দু’টির কর্মকর্তারা।

্রিন্ট

আরও সংবদ