খুলনা | রবিবার | ১০ নভেম্বর ২০২৪ | ২৬ কার্তিক ১৪৩১

দোয়া কবুলের মুহূর্ত ইফতারি

মুফতি রবিউল ইসলাম রাফে |
০২:১৪ এ.এম | ০৪ এপ্রিল ২০২৪


আজ ২৪ রমজান। নাজাতের দশকের আজ চতুর্থ দিন। রহমত ও মাগফিরাতের দশক শেষে আমরা উপনীত হয়েছি নাজাতের দশকে। দেখতে দেখতে প্রায় শেষ হয়ে এলো অশেষ কল্যাণ ও নেকীর এই মাস। রমজানের শেষ দশকে জাহান্নাম থেকে বেশী সংখ্যক কয়েদীকে মুক্তি দেয়া হয়। তাছাড়া তাদের গোনাহও মাফ করে দেয়া হয় যারা কষ্ট করে সারাটি মাস রোজা পালন করে। এই কারণে এই দশককে নাজাতের দশক হিসেবে অবিহিত করা হয়। এক হাদিসে প্রিয় নবী এরশাদ করেন, রমজানের প্রতি দিবা-রাতে জাহান্নামের কয়েদীদেরকে মুক্তি দেয়া হয় এবং প্রতি দিবা-রাতে মুসলমানের একটি দোয়া অবশ্যই কবুল করা হয় (তারগীব)। এ কারণে আমাদেরও বেশী বেশী দোয়া করা দরকার যাতে আল­াহ তায়ালা মেহেরবানি করে আমাদেরকে দোজখের শাস্তি থেকে নাজাত দান করেন। হাদিসে এই মাসে চারটি কাজ বেশী বেশী করার কথা বলা হয়েছে। তা হলো কলেমা শরীফ পড়া, এস্তেগফার, জান্নাত প্রাপ্তির জন্য দোয়া এবং জাহান্নাম থেকে নাজাতের দোয়া। পুণ্যময় মাসে আল­াহপাক বান্দাদের মাফ করে থাকেন এবং দোয়া কবুল করেন। রমজানে এই দোয়া আমরা বেশি বেশি করতে পারি; লা ইলাহা ইল­ল­াহ, আসতাগফিরুল­াহ, নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া না’উযুবিকা মিনান্নার। অর্থাৎ, আল­াহ ছাড়া কোন মা’বুদ নাই। হে আল­াহ, আপনার কাছে আমরা মাগফিরাত ও জান্নাত চাচ্ছি এবং জাহান্নামের আগুন থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আরও একটি দোয়ার কথা হাদিসে এসেছে। তা হল, ইয়া ওয়াছি’আল ফাদলি, ইগফিরলী। অর্থ, হে প্রশস্ত রহমতের মালিক, আমাকে মাফ করে দাও। রমজান মাসে সব সময়ই দোয়া কবুল হয়, তবে দোয়া কবুলের  সবচেয়ে উপযুক্ত সময় ইফতারির ঠিক আগ মুহূর্ত। 
এক হাদিসে রাসুলে কারীম (সাঃ) এরশাদ করেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ব্যর্থ হয় না। এক. ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া। দুই. ন্যায় বিচারক বাদশাহের দোয়া। তিন. মজলুমের দোয়া (আহমদ)। কিন্তু ইফতারের সময় আমরা এমন ভাবে খাওয়াতে ঝাঁপায়ে পড়ি যে খোদ ইফতারের দোয়াও ভুলে যায়। ইফতারের প্রসিদ্ধ দোয়া হল, আল­াহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া বিকা আমানতু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু ওয়া আ’লা রিযকিকা আফতারতু। অর্থাৎ হে আল­াহ আমি আপনার জন্যই রোজা রেখেছি, আপনার প্রতিই ঈমান এনেছি, আপনার উপরই ভরসা করেছি এবং আপনার রিজিক দ্বারাই ইফতার করছি। ইফতারি শুরুর পরে আমরা এই দোআ পড়তে পারি, যাহাবাযযামায়ু ওয়াবতাল­াতিল উরূকু ওয়া ছাবাতাল আজরু ইনশাআল­হ, অর্থঃ-তৃষ্ণা মিটে গেছে। শিরাগুলো সিক্ত হয়েছে। ইনশাআল­াহ প্রতিদান পাওয়া যাবে (আবু দাউদ:২৩৫৪)। হাদিসে আর একটি ব্যাপক অর্থবোধক দোয়ার কথা এসেছে। তা হলো, আল­াহুম্মআ ইন্নী আছআলুকা বিরহমাতিকাল­াতী ওয়াছিয়াত কুল­া শাইইন আন তাগফিরলী, অর্থঃ-হে আল­াহ! আমি তোমার ঐ রহমতের ওছিলা দিয়ে তোমার নিকট প্রার্থনা করছি যা সকল বস্তুকে বেষ্টন করে আছে। তুমি আমার গোনাহ মাফ করে দাও। রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস। তাই আসুন, নাজাতের এই দশকে আমরা সবাই মিলে মহান আল­াহর কাছে কায়মনোবাক্যে মাফ চায় যাতে তিনি আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। 
লেখক : আরবী সাহিত্যিক ও মুহাদ্দিস, জামি’য়া ইসলামিয়া মারকাযুল উলূম, বাগমারা, খুলনা।

্রিন্ট

আরও সংবদ