খুলনা | রবিবার | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সুন্দরবনে অগ্নিকান্ড : দেশের ফুসফুসকে আগলে রাখতে হবে

|
১২:১৯ এ.এম | ১০ মে ২০২৪


শনিবার সকালে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমোরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি এলাকায় আগুন লাগে। এ আগুন প্রায় ৪ একর বনভূমিতে বিস্তৃত হয়ে পড়েছে বলে জানা যায়। গত দু’দিনে ফায়ার সার্ভিস এবং কোস্টগার্ড ও নৌ-বাহিনীর দু’টি পৃথক টিম আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনলেও রোববার বিকাল পর্যন্ত ওই এলাকার কিছু জায়গায় ধোঁয়া দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, মধু আহরণকারীদের মশাল কিংবা জেলেদের ফেলে দেওয়া সিগারেটের আগুন থেকে এ বড় ধরণের অগ্নিকান্ডের সূচনা হয়েছে।
অভিজ্ঞতা বলছে, গত ২২ বছরে সুন্দরবনে অন্তত ২৪ বার আগুন লেগেছে। বলা যায়, প্রতিবছরই সুন্দরবনের কোনো না কোনো এলাকা পুড়েছে আগুনে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো ঘটছে শুষ্ক মৌসুমেই অর্থাৎ মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত। কথা হচ্ছে, এই যে বারবার সুন্দরবনে আগুন লাগছে, এটা কি চলতে থাকবে অনন্তকাল? প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের পর দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। কমিটিগুলো যথারীতি প্রতিবেদনে কিছু বিষয়ে সুপারিশও করে থাকে; কিন্তু সেসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয় না। ফলে ফি বছরই আমরা প্রত্যক্ষ করছি আগুন। আমাদের কথা হলো, তদন্ত কমিটির সুপারিশ যদি আমলে না নেওয়া হয়, তাহলে এ ধরনের কমিটি গঠনের অর্থ কী? এবারও চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষককে প্রধান করে ধানসাগর ও জিউধরা স্টেশন কর্মকর্তার সমন্বয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা জানি না, এবারের তদন্ত কমিটির সুপারিশও বাস্তবায়িত হবে কিনা। এত বড় একটা বিপর্যয় হেলাফেরার চোখে দেখা হলে সুন্দরবনের ভবিষ্যৎ অস্তিত্ব নিয়েই সংশয় থেকে যায়।
তিন বছর আগে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে বলেছিলেন, সুন্দরবনের আয়তন বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের কথা হলো, বর্তমানে যা আছে, সেটাই তো রক্ষা করতে পারছি না। সুন্দরবনকে বাংলাদেশের ফুসফুস বলা হয়। এটা শুধু দেশের প্রধান বনাঞ্চল নয়, এটি ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজও। উপকূলীয় অঞ্চলে জলোচ্ছ¡াস ও ঘূর্ণিঝড় থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার ক্ষেত্রে এই বন প্রধান প্রতিরক্ষাব্যূহও বটে। সুতরাং এই বনে ঘনঘন অগ্নিকাণ্ড রোধ করতে হবে। বনসম্পদ চুরির স্বার্থে সম্পদ বিনষ্ট করে শুভংকরের ফাঁকির খেলা চলছে কিনা, এটাও এক বড় প্রশ্ন। আমরা সুন্দরবনে আর অগ্নিকাণ্ড দেখতে চাই না। অগ্নিকাণ্ড রোধে সব ধরনের সম্ভাব্য কারণ দূর করতে হবে অবশ্যই।

্রিন্ট

আরও সংবদ