খুলনা | সোমবার | ১৩ জানুয়ারী ২০২৫ | ৩০ পৌষ ১৪৩১

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাল ভারত

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
০১:৫৩ এ.এম | ১০ জুন ২০২৪


পাওয়ারপ্লে শেষের পরেও জয়ের সম্ভাব্যতায় দেখানো হয়েছিল পাকিস্তানের জয়ের সম্ভাবনা ৯২ শতাংশ। ব্যাটে-বলে সমান রান দরকার ছিল জয়ের জন্য। ১২ ওভারে ৭২ রান করে সেই লক্ষ্যে ঠিকই টিকে ছিল তারা। পরের ৩০ বল থেকে উঠেছে মোটে ১৭ রান। উইকেট হারিয়েছে ৩টি। নাসাউ কাউন্টির বোলিং সহায়ক পিচে আরও একবার দেখা গেল বোলারদের কারিশমা।

পাকিস্তান কেন আনপ্রেডিক্টেবল, তা বোঝা গেল আরও একবার। ব্যাটারদের কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে বলতে গেলে জেতা ম্যাচ হেরে বসেছে পাকিস্তান। ১২০ রানের ক্ষুদ্র টার্গেটে এসেও পাকিস্তানকে থামতে হয়েছে ১১৪ রানে এসে। ৬ রানের এই অবিশ্বাস্য হারে পাকিস্তানের বিদায়টাও প্রায় অনিবার্য হয়ে পড়েছে এবারের বিশ্বকাপ থেকে। হার্দিক পান্ডিয়া-জাসপ্রিত বুমরাহরা ভারতকে এনে দিয়েছেন মনে রাখার মতো এক জয়। এটি ভারতের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে কম রান ডিফেন্ড করে জয়।

ইনিংসের ১৯তম ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহ করেছেন স্মরণীয় এক ডেথ ওভার। জয়ের ক্ষণিক আশাও পাকিস্তান হারিয়ে ফেলে সেখানেই। ১৯তম ওভারে এসেছে মোটে ৩ রান। শেষ ওভারে বাকি ১৮ রান তোলা হয়নি গ্যারি কার্স্টেন শিষ্যদের। আর্শদ্বীপ সিংয়ের ওভারের প্রথম বলে আউট হলেন ইমাদ ওয়াসিম। পরের ৫ বলে তারা নিয়েছে ১০ রান। এই নিয়ে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ৮ম ম্যাচের মধ্যে ৭ম পরাজয়ের স্বাদ পেল পাকিস্তান। 

বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান প্রথম দুই ওভারে ১৫ রান তুলে ভালো শুরুর আভাস দেন।

পঞ্চম ওভারে যশপ্রীত বুমরার বলে বাবরকে দারুণ ক্যাচে ফেরান সূর্যকুমার যাদব। ভাঙে ২৬ রানের জুটি। উসমান খানকে নিয়ে রিজওয়ান সতর্ক ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানকে পথ দেখাতে থাকেন। ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৫৭ রান তোলে পাকিস্তান।

অক্ষর প্যাটেল বল হাতে নিয়েই ভেঙে দেন ২৮ রানের জুটি। উসমানের (১৩) বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে সফল হয় ভারত। হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ফখর জামানের (১৩) দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে ভারতকে উচ্ছ্বাসে ভাসান রিশাভ পান্ত।

সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। শেষ ৬ ওভারে ৪০ রান দরকার ছিল। রিজওয়ান আশার আলো হয়ে জ্বলছিলেন। কিন্তু বুমরার দুর্দান্ত ডেলিভারিতে তিনি বোল্ড হলে পথ হারায় পাকিস্তান। ৪৪ বলে ৩১ রান করেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।

এরপর হার্দিকের বলে শাদাব খানকেও (৪) দারুণ ক্যাচে প্যাভিলিয়নে পাঠান পান্ত। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় রান রেট বাড়তে থাকে। চাপে পড়ে পাকিস্তান। ইফতিখার আহমেদকে (৫) আর্শদীপ সিংয়ের ক্যাচ বানান বুমরা।

শেষ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮ রানের। আর্শদীপ বল হাতে নেন। প্রথম বলেই ইমাদ ওয়াসিম (১৫) ক্যাচ দেন পান্তকে। পরের দুটি বলে সিঙ্গেল নেন নাসিম শাহ ও শাহীন আফ্রিদি। শেষের আগের দুটি বলে বাউন্ডারি মারেন নাসিম। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। শেষ বলে দরকার ছিল ৮ রান। হয়েছে ১ রান। ৭ উইকেটে ১১৩ রানে থামে পাকিস্তান।

চার ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন বুমরা। দুটি উইকেট পান হার্দিক।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে ভারতও সুবিধা করতে পারেনি কোনোক্রমেই। বরং মোহাম্মদ আমির, নাসিম শাহ এবং হারিস রউফদের বোলিং তোপে মাত্র ১১৯ রানেই গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস। তাতে ভারতও দেখেছিল লজ্জার কিছু রেকর্ড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটি ছিল তাদের চতুর্থ সর্বনিম্ন স্কোর। আর অলআউট হওয়া ইনিংসে এটি দ্বিতীয়। প্রথম ব্যাট করে বিশ্বকাপে এত কম রানে কখনোই অলআউট হয়নি তারা।

বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা থেকে শুরু করে সুর্যকুমার যাদব কিংবা শিভাম দুবে, মোটাদাগে ব্যর্থ সবাই। খেললেন কেবল ঋষভ পান্ত। তার ৪২ রানটাই ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝে বড় প্রাপ্তি। শেষদিকে আর্শদ্বীপ সিং রান করায় ভারতের রান গিয়েছে ১১৯ পর্যন্ত। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পক্ষেই বাজি ধরার লোক ছিলেন বেশি।

কিন্তু ভারতীয় বোলারদের দুর্দান্ত বোলিং আর পাকিস্তানি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত আর জয় পাওয়া হয়নি ম্যান ইন গ্রিনদের। নিউইয়র্কে আরও একবার ভারতের কাছে হতাশ হতে হলো পাকিস্তানের ক্রিকেট ভক্তদের। 

্রিন্ট

আরও সংবদ