খুলনা | মঙ্গলবার | ২২ এপ্রিল ২০২৫ | ৯ বৈশাখ ১৪৩২

নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা পারস্পরিক সৌহার্দ্যই কাম্য

|
১২:২৯ এ.এম | ১১ জুন ২০২৪


গত ৫ জুন শেষ হয়েছে দেশে চার ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। সবশেষ ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে স্থগিত হওয়া ১৯ উপজেলায়ও রোববার ভোটগ্রহণ হয়েছে। নির্বাচন তুলনামূলকভাবে মোটামুটি শান্তিপূর্ণ থাকলেও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে সারা দেশে একাধিক স্থানে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার ঘটনা। খবরে প্রকাশ, সবশেষ চার উপজেলায় নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সহিংসতায় পিটিয়ে মারধর, ভাঙচুর, লুটসহ বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। আমাদের দেশে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার বিষয়টি নতুন নয়। যদিও প্রতিবারই আইন-কৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশন দাবি করে, এ ধরণের সহিংসতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে; কিন্তু প্রকৃত পরিস্থিতি বলে অন্য কথা। প্রতিবারই দেখা যায়, কোথাও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর, আবার কোথাও বা বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকদের ওপরও হামলা হয়। অনেক জায়গায় আবার দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও হয়। নির্বাচনের পর এমন সহিংসতা স্বভাবতই উদ্বেগজনক। বস্তুত দেশে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা যেন রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। অথচ বিশ্বের কাছে আমরা শান্তিপ্রিয় জাতি হিসাবে পরিচিত। যেখানে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে পরিচিতি পাচ্ছে, শান্তিরক্ষী বাহিনী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তি স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে; সেখানে নির্বাচনি সহিংসতার সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা শুধু দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থেই নয়, বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখার জন্যও প্রয়োজন।
অতীতে আমরা দেখেছি, নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার অধিকাংশ ঘটনায় দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়নি, বরং রাজনৈতিক দলগুলো এ ধরণের সহিংসতাকে সামাজিক, গোষ্ঠীগত ও পারস্পরিক সম্পর্কচ্ছেদের কারণ হিসাবে অভিহিত করেছে। নির্বাচনের পর দেখা যায়, বিজয়ী দল এমন এক ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে, যা প্রতিপক্ষকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলে। পশ্চিমা দেশে পরাজিতরা নির্বাচনি ফলাফল মেনে নেয় এবং বিজয়ীরা এমন বিনয়ী আচরণ করেন, সমগ্র রাজনৈতিক পরিমন্ডলে সুবাতাস বয়ে যায়। আমাদেরও এ সংস্কৃতি অনুসরণ করতে হবে। নির্বাচনের পর প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা যেন কোনোরকম হয়রানি বা নির্যাতনের শিকার না হন, সেদিকে প্রশাসনকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তায়। নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার লাগাম টানতে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে-এটাই কাম্য।

্রিন্ট

আরও সংবদ