খুলনা | শনিবার | ২১ জুন ২০২৫ | ৭ আষাঢ় ১৪৩২

আরও ছাড় খেলাপি ঋণ আদায়ে, সুফল মিলবে কি?

|
১২:২৭ এ.এম | ১২ জুলাই ২০২৪


দেশের আর্থিক খাতের অন্যতম দুষ্টক্ষত খেলাপি ঋণ। এ সমস্যা দেশের অর্থনীতিতে কী ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছে তা বহুল আলোচিত। অতীতে নানা উদ্যোগ গ্রহণের পরও এক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত সুফল মেলেনি। এমনকি নানা ধরণের ছাড় দেওয়ার পরও খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক; বরং দিন দিন তা বেড়েছে।
ঋণ আদায় বাড়াতে এবং খেলাপি ঋণ কমাতে এবারও ঋণখেলাপিদের ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জারি করা এক সার্কুলারে জানানো হয়, যারা পরিস্থিতির কারণে খেলাপি, তারা ঋণের মোট বকেয়ার কমপক্ষে ১০ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে এই সুবিধা নিতে আবেদন করতে পারবেন। পুরো ঋণ ৩ বছরের মধ্যে শোধ করতে হবে। 
খেলাপি ঋণ আদায় বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আগেও এমন ছাড় দিতে আমরা দেখেছি; কিন্তু বাস্তবে আশানুরূপ ফল মেলেনি। বরং কিছুসংখ্যক ঋণখেলাপি তাদের ঋণ নবায়নের সুযোগ পেয়েছেন। এ ধরনের বেশকিছু সিদ্ধান্ত যে হিতে বিপরীত হয়েছে, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন সময়ে সতর্কবাণী দিয়েছেন। এই ছাড়ের মাধ্যমে হয়তো খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হবে, তবে ঋণ আদায় তেমন একটা বাড়বে না। কাজেই জাল-জালিয়াতি বা অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণ আদায়ের এ প্রক্রিয়া মোটেই ইতিবাচক নয়। বরং জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শাস্তি নিশ্চিত করাই হবে সঠিক পদক্ষেপ। কারণ খেলাপি ঋণ আদায়ের পরিবর্তে এ ধরনের প্রক্রিয়া ব্যাংক খাতের ভিত্তিই দুর্বল করে দেয়।
আমরা মনে করি, আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করা এবং খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার জন্য একটি কার্যকর রোডম্যাপ তৈরির বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতি, উচ্চ খেলাপি ঋণের বাস্তবতায় দ্রুত একটি রোডম্যাপ তৈরি করে তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া ঋণখেলাপিদের পরিচয় জনসমক্ষে প্রকাশ করা, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা, বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়াই উচিত বলে মনে করি আমরা। ভুলে গেলে চলবে না, ব্যাংক দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। তাই প্রলেপ না দিয়ে এ খাতে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

্রিন্ট

আরও সংবদ