খুলনা | সোমবার | ২৬ মে ২০২৫ | ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘ইতিহাস জানেনা বলেই নিজেদের রাজাকার বলতে শিক্ষার্থীরা লজ্জা পাচ্ছে না’

খবর প্রতিবেদন |
০২:৫৭ পি.এম | ১৫ জুলাই ২০২৪


নিজেদের ‘রাজাকার’ বলে স্লোগান দেওয়া কোটা আন্দোলনকারীরা একাত্তরের গণহত্যা, মা-বোনের ওপর পাশবিক নির্যাতন এবং এদের সহায়তাকারী রাজাকারদের ভূমিকা সম্পর্কে জানে কি না সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘আমি রাজাকার’ স্লোগান তোলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যারা রাজাকার বলে স্লোগান দিচ্ছে তারা কি মুক্তিযুদ্ধের আসল ইতিহাস জানে? মুক্তিযুদ্ধের পাশবিকতা তারা দেখেনি। দুর্ভাগ্য তারা কি শিখলো? ইতিহাস জানেনা বলেই নিজেদের রাজাকার বলতে শিক্ষার্থীরা লজ্জা পাচ্ছে না।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভাবতে অবাক লাগে রোকেয়া হলের মেয়েরাও বলে তারা রাজাকার। তারা কী শিক্ষা পেলো! তারা কী জানে ২৫ মার্চ কী হয়েছিল!

তাদের স্লোগানে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতে এরা দেখেনি। তাই নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না।’

আজ সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধোর চেতনাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। লাখো শহীদ রক্ত দিয়ে গেছে। লাখো মা-বোন নির্যাতিত। তাদের এই অবদান ভুললে চলবে না। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকার বাহিনী যেভাবে এদেশের অত্যাচার করেছে, আমার খুব দুঃখ লাগে যখন রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও বলে তারা রাজাকার।’

তিনি বলেন, ‘তারা কি জানে একাত্তর সালের পচিশে মার্চ কি ঘটেছিল সেখানে? তিন’শ মেয়েকে হত্যা করেছিল, ৪০ জন মেয়েকে ধর্ষণ করেছিল। পাকিস্তানি ক্যাম্পে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। অনেক মেয়ে শাড়ি বা ওরনা নিয়ে ফাঁসি দিয়েছিল বলে তাদের সেগুলো পড়তে দেয়া হতো না। ওই এক কাপড়ে বসিয়ে রাখতো। দিনের পর দিন তাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করা হতো।’

এমন একজন মেয়েকে উদ্ধারের এক ঘটনার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের মিত্র শক্তি ভারতীয় একজন শিখ সৈন্য তার মাথায় পাগড়ি খুলে ওই উদ্ধারকৃত মেয়েকে তার গায়ে পেঁচিয়ে নিয়ে আসে। এটি একটি ঘটনা মাত্র। এমন বহু ঘটনা আছে।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘সরকারি কাজে গতিশীলতা আনয়ন, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, দুর্নীতি দমনে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন, সেবার মানোন্নয়ন এবং দফতর/সংস্থাসমূহের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং সুশাসন প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ সুদৃঢ় করার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১(২)-এর আলোকে সেবামুখী জনপ্রশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারি কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি আওয়ামী লীগ সরকারই সর্বপ্রথম ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চালু করে। এর ধারাবাহিকতায় আজ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ১১তম বারের মতো স্বাক্ষর হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা, কাঠামোগত সংস্কারের নিরন্তর উদ্যোগ চালিয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির বাস্তবায়নে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননাপ্রাপ্ত ১১টি মন্ত্রণালয়/বিভাগকে আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি। সার্বিক মূল্যায়নে প্রথম স্থান অর্জনকারী বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ২০১২ সালে শুদ্ধাচার চর্চা ও দুর্নীতি প্রতিরোধের মাধ্যমে ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের লক্ষ্যে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়ন করে। ২০১৫ সাল থেকে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে উত্তম শুদ্ধাচার চর্চাকারীদের শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যক্তি পর্যায়ে শুদ্ধাচার পুরস্কারপ্রাপ্ত শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এর সচিব মো. মাহবুব হোসেনকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

্রিন্ট

আরও সংবদ