খুলনা | শুক্রবার | ১৩ জুন ২০২৫ | ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দুর্নীতির মূলোৎপাটন করতে হবে

|
১২:২০ এ.এম | ১৬ জুলাই ২০২৪


কিছুদিন আগে শেষ হওয়া জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, দুর্নীতি করলে কারো রক্ষা নেই। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। যারাই দুর্নীতি করবে, ধরা হবে। সা¤প্রতিক সময়ে দুর্নীতির বেশ কিছু খবর আলোচিত হচ্ছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ দুর্নীতি জেঁকে বসেছে। রাষ্ট্রের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও অবৈধ উপার্জনের অভিযোগ উঠছে। অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া যাচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রতিদিনই দুর্নীতির অসংখ্য খবর আসছে। অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে দেশে আইন রয়েছে, বিধি-বিধান রয়েছে, নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু এসব আইন, বিধি-বিধানের সঠিক প্রয়োগ কি করা হচ্ছে? নাকি একজন আরেকজনকে সুরক্ষা দিচ্ছেন, সহযোগিতা করছেন এবং মিলেমিশে অন্যায় করে অবৈধভাবে সম্পদ হাতিয়ে নিচ্ছেন। আর এভাবেই প্রশাসন লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে।
স¤প্রতি সবার সামনে চলে এসেছে পিএসসি’র প্রশ্ন ফাঁসকান্ড। এ ঘটনায় ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, অপরাধ তদন্ত বিভাগের জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাওয়া গেছে যে শতাধিক সদস্যের মাধ্যমে বড় কর্মকর্তারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। গ্রেফতার একজন সিআইডির কাছে পিএসসি’র অনেক শীর্ষ কর্মকর্তার নাম বলেছেন। মামলায় এজাহারভুক্ত ১৪ জনসহ সন্দেহভাজন অন্তত ৭৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে সিআইডি। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে দু’জনের বাড়ি বগুড়ার গাবতলীতে।
তাঁদের গ্রেফতারের পর একে একে বেরিয়ে আসছে অবৈধভাবে চাকুরি পাইয়ে দেওয়ার অনেক তথ্য।
শুধু পিএসসি নয়, দেশের বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। পত্রিকার প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, স¤প্রতি পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো জাল সনদসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে এক হাজার ১৫৬ জন শিক্ষকের জাল সনদের তথ্য দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৭৯৩ জন শিক্ষকের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ, ২৯৬ জনের কম্পিউটার শিক্ষার সনদ এবং ৬৭ জনের বিএড, গ্রন্থাগার, সাচিবিক বিদ্যা ও অন্যান্য বিষয়ের সনদ জাল।
সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি দমনের উদ্দেশ্যে ২০১২ সালের ১৮ অক্টোবর ‘সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় : জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল’ শিরোনামে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়ন করা হয়। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা অনেক বাড়ানো হয়। উদ্দেশ্য ছিল প্রশাসনকে স্বচ্ছ করা, কিন্তু বাস্তবে কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না।
দুর্নীতিকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থে জনপ্রশাসনের এমন সর্বগ্রাসী দুর্নীতির লাগাম টানতে হবে। দেখাতে হবে জিরো টলারেন্স। দুদককে শক্তিশালী করতে হবে। দুর্নীতি উন্নয়নের অন্তরায়। এর মূলোৎপাটন করতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ