খুলনা | রবিবার | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৩১ ভাদ্র ১৪৩১

চলমান সংকট সমাধানে সহনশীল মনোভাবের বিকল্প নেই

|
১২:১৩ এ.এম | ০৩ অগাস্ট ২০২৪


শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী সরকারি চাকুরিতে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সবপক্ষ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগতও জানিয়েছে। তবে হত্যা-সহিংসতার বিচারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের একাংশ এখনো রাজপথে থাকতে চাইছে। পরিতাপের বিষয়, এখনও দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন, বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশি এ্যাকশন, গ্রেফতারের মতো ঘটনা আমাদের দেখতে হচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি যে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়েছে, তা বলা যাবে না। জনপ্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিসের কর্মঘণ্টা আগের নিয়মে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হলেও কারফিউ পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয়নি। রেল যোগাযোগ চালু হয়নি, দূরপাল­ার যানবাহনের দেখাও মিলছে কম। সব মিলিয়ে জনজীবন কবে স্বাভাবিক হবে, এ প্রশ্ন এখন সবার।
দু’সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের কোটাবৈষম্য দূর করার মতো অহিংস আন্দোলন কীভাবে সহিংসতায় রূপ নিল, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহিংসতার পেছনে দায়ীদের গ্রেফতারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করলেও যেসব বেসামরিক নাগরিক পুলিশের হাতে নিহত হয়েছেন, তাদের কারও পরিচয় প্রকাশ কিংবা দোষীদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা, তা-ও স্পষ্ট নয়। 
সবার নিরাপত্তার স্বার্থেই গত ক’দিনের উদ্ভূত পরিস্থিতির নেপথ্য কারণ আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। যদিও তা তদন্তসাপেক্ষ, তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা যেভাবে একে অপরকে দোষারোপ করছেন, তাতে চলমান তদন্ত কার্যক্রম প্রভাবিত ও বাঁধাগ্রস্ত হতে পারে, তা স্মরণে রাখতে হবে। বরং দোষারোপ এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখাই সবার জন্য হবে অধিক শ্রেয়। আলোচনায় সব সংকটের সমাধান যে মেলে, তা অতীতেও বহুবার প্রমাণিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদেরও আলোচনার মাধ্যমে পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। হতাহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও নিরপরাধ আটক ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তিদানে উদ্যোগী হলে চলমান সংকট দ্রুতই কেটে যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
বিদ্যমান পরিস্থিতিকে শান্ত করার প্রতি মনোযোগি না হয়ে তা প্রতিহত করার পন্থা অবলম্বন করলে মানুষের জানমালের ক্ষতি হওয়া ছাড়াও অর্থনীতিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা কারও জন্যই মঙ্গলজনক হবে না। জনমনে অসন্তোষ দেখা দিলে তা সামাজিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। দেখা দিতে পারে মত ও দর্শনগত বিভাজন। নিকট অতীত ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে দেশে সহিংস পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে নাশকতামূলক কর্মকান্ডে যে ব্যাপক ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় সম্পদহানি হয়েছিল, তার নেতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতেও পড়েছিল। তাই সংকট উত্তরণে সব পক্ষ সহনশীল মনোভাবের পরিচয় দেবে, এটাই প্রত্যাশা।

্রিন্ট

আরও সংবদ