খুলনা | রবিবার | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৩১ ভাদ্র ১৪৩১

শিগগিরই অন্তর্বতী সরকার হবে সব হত্যার বিচার হবে

জনগণকে মারামারি-সংঘাত থেকে বিরত থাকার আহবান সেনাপ্রধানের

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৭ এ.এম | ০৬ অগাস্ট ২০২৪


জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেছেন, মারামারি করে আর কিছু পাব না। ধ্বংসযজ্ঞ, সংঘাত, অরাজকতা থেকে বিরত হন। সবাই মিলে সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে যাব।
সেনাবাহিনীর প্রধান বলেন, এখন রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল চলছে। একটি অন্তর্বতী সরকার গঠন করা হবে। সব হত্যার বিচার হবে। সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখেন। আমরা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সোমবার বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্যদান কালে তিনি এসব কথা বলেন।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখেন। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন, একসঙ্গে কাজ করি। দয়া করে সাহায্য করেন। মারামারি সংঘাত করে আর কিছু পাব না। সংঘাত থেকে বিরত হোন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়েছি। সব হত্যার বিচার হবে। সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখেন।  
রাজনীতিক ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। শিক্ষক আফিস নজরুল ও জোনায়েদ সাকিও বৈঠকে ছিলেন।   বৈঠকে আওয়ামী লীগের কেউ ছিলেন না বলেও জানান সেনাবাহিনীর প্রধান।
তিনি বলেন, ছাত্রদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি। ছাত্ররা শিক্ষক আসিফ নজরুলকে শ্রদ্ধা করেন। তাকে অনুরোধ করেছেন যোগাযোগ করতে। ইতিমধ্যে আসিফ নজরুল একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। এসময় ছাত্রদের শান্ত হওয়ার পরামর্শ দেন সেনাবাহিনী প্রধান।
জনগণের উদ্দেশ্যে সেনাপ্রধান বলেন, দেশে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখেন। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন, একসঙ্গে কাজ করি। দয়া করে সাহায্য করেন। মারামারি সংঘাত করে আর কিছু পাবো না। সংঘাত থেকে বিরত হোন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়ি।
তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কারফিউ থাকবে না। আমি নির্দেশ দিয়েছি সেনাবাহিনী গুলি চালাবে না। পুলিশ গুলি চালাবে না। আপনারা ধৈর্য ধরুন। আমাকে সাহায্য করুন। তবে দুয়েকদিন সময় লাগতে পারে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলাপ করবে সেনাবাহিনী।
সেনাপ্রধান বলেন, দেশে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখেন। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন, একসাথে কাজ করি। দয়া করে সাহায্য করেন। মারামারি সংঘাত করে আর কিছু পাবো না। সংঘাত থেকে বিরত হোন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়েছি।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, সব হত্যা ও অন্যায়ের বিচার হবে। সব দাবি পূরণ করা হবে, দেশকে শান্তিপূর্ণ অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে। সংঘাত ও অরাজকতায় আর কিছু অর্জন সম্ভব হবে না। সে পর্যন্ত সহিংসতা পরিহার করে ধৈর্য ধরার আহŸান জানানো হয়েছিল। 
তিনি বলেন, সবাই মিলে সব সমস্যার সমাধান করবো। পরিস্থিতি শান্ত হয়ে গেলে কারফিউ, গোলাগুলির প্রয়োজন নেই। 
বর্তমান সংকট নিরসনে সব দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সেনা সদর দফতরে আলোচনা করেছেন বলেও জানান সেনাপ্রধান।
মাত্র এক মাসের কিছু বেশি সময় আগে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তার সুদীর্ঘ ৩৯ বছরের বর্ণাঢ্য সামরিক জীবন কমান্ডার, স্টাফ ও প্রশিক্ষকের অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। ব্যক্তিজীবনে তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক।
১৯৮৫ সালের ২০ ডিসেম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য হিসেবে ১৩তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। সামরিক জীবনের শুরু থেকে বিভিন্ন কোর্সে ভালো ফলাফলের ক্রমধারায় তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজ, মিরপুর থেকে সাফল্যের সঙ্গে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।
পরবর্তী সময়ে তিনি জয়েন্ট সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ, যুক্তরাজ্য থেকেও গ্র্যাজুয়েট হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স অব ডিফেন্স স্টাডিজ (এমডিএস) সম্পন্ন করেন। এছাড়া যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে মাস্টার্স অব আর্টস ইন ডিফেন্স স্টাডিজ ডিগ্রি অর্জন করেন।
জেনারেল ওয়াকার ২০০৯ সালের ১২ ফেব্র“য়ারি থেকে ২০১০ সালের ৮ জুন পর্যন্ত ১৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-অধিনায়ক ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহ দমনে নিষ্ঠা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন।
২০১১ সালের ২৭ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত দুই বছরেরও বেশি সময় ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ছিলেন তিনি। জিওসি হিসেবে ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের ২৩ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত তিন বছর নবম পদাতিক ডিভিশন কমান্ড করেন।
এরিয়া কমান্ডার, সাভার এরিয়া ও জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) নবম পদাতিক ডিভিশন হিসেবে তিনি টানা তিন বছর সফলভাবে বিজয় দিবস প্যারেড ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬-এর প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। এই বিরল কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ‘সেনাগৌরব পদক’ (এসজিপি) এ ভূষিত হন।

্রিন্ট

আরও সংবদ