খুলনা | রবিবার | ১০ নভেম্বর ২০২৪ | ২৬ কার্তিক ১৪৩১

শিগগির দেশে ফিরছেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী

খবর প্রতিবেদন |
০৪:২৬ পি.এম | ০৬ অগাস্ট ২০২৪


শিগগির দেশে ফিরছেন মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এক ভিডিও বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি নিজেই।

আজ মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, অনেকে আমাকে মেসেজ করে ও ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে জানতে চেয়েছেন আমি কবে দেশে ফিরবো। আমি তাদের বলতে চাই, আমি দ্রুতই দেশে ফিরবো। আপনাদের সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষাতে রয়েছি আমি নিজেও। শিগগির সাম্য, মানবিকতার মুক্ত-স্বাধীন, বাংলাদেশে আমি আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই।

দীর্ঘ ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, তাজা রক্তের মাধ্যমে যারা আন্দোলনকে সফল করেছেন সেই শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ও রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং এখনো কষ্ট করে যাচ্ছেন তাদের শুভেচ্ছা জানাই।

আন্দোলন সফরের পর দেশে যেসব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এ নিয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন দায়িত্বশীল আচরণ করতে পারলেই সঠিকভাবে বিজয় উদযাপন হবে।

সংখ্যালঘুদের প্রতি অন্যায় না করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, বর্তমানে অনেকে সুযোগ নিয়ে সংখ্যালঘুদের উপসনালয় ও স্থাপনায় চালাবে এবং ইসলামপন্থী ও  মাদরসার ছাত্রদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করবে। তাই যারা এই বিজয়ে খুশি নয় তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।  

তিনি বিশেষ করে মাদরাসার ছাত্রদের বলেন, আপনারা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। কেউ যেন তাদের ওপর আক্রমণ করতে না পারে যে বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন থাকুন। এসব ক্ষেত্রে যদি আমরা ভুল করে ফেলি তাহলে বাংলাদেশে ইসলাম অনেক পিছিয়ে পড়বে।

সদ্য পদত্যাগী স্বৈরাচার সরকারের পতনের ঘটনা সামনে এনে তিনি বলেন, ক্ষমতার দম্ভে আমরা নিজেদের প্রকৃত অবস্থা ভুলে যাই, যাচ্ছেতাই আচরণ করি মানুষের সঙ্গে। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনা আমাদের দেখিয়ে দিল কোনো অত্যাচারই দীর্ঘস্থায়ী নয়, তাই এসব ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। তিনি বলেন, যারা নতুন সরকার ব্যবস্থায় আসবে তাদেরকেও এ বিষয়টি মনে রাখতে হবে এবং শিক্ষা নিতে হবে। তাদেরকেও অত্যাচার পরিহারের পথ অবলম্বন করতে হবে।

বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের দেশে এক সরকার যায়, অন্যজন আসে, বিদ্বেষ-জিঘাংসা চলতেই থাকে। নতুন সরকার ব্যবস্থায় আমারা এমন কিছু দেখতে চাই না। আমরা ঐক্যবদ্ধ ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে চাই।

বিজয়ের পর সংযত আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিজয় উদযাপনে এমন কিছু করি যা সমর্থনযোগ্য নয়, এর অন্যতম উদাহরণ হলো অনেকেই গতকাল সংসদ-গণভবনে লুটপাট-চুরি এজাতীয় লজ্জাজনক কাজ করেছি। এ ঘটনায় মিডিয়াতেও লাইভ দেখানো হয়েছে, এর মাধ্যমে আমরা আসলে বিশ্ব দরবারে কী বার্তা দিলাম। যারা দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে, তারাও তো এ নিয়ে বিশ্বকে একটা ভুল বার্তা দিতে সক্ষম হবে। এ বিষয়টি আমাকে অবাক ও ক্ষুদ্ধ করেছে।

আমাদের এতটুকুবোধ থাকা উচিত যে এগুলো রাষ্ট্রীয় সম্পদ। তিনি বলেন, গণভবন থেকে একটা হাঁস, বালিশ নিয়ে এসে আপনি কতটুকু লাভ করলেন? এর মাধ্যমে পুরো বিশ্বের কাছে একটি নেতিবাচক বার্তা গেল। এটা কখনো কাম্য হতে পারে না।

যাদের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করলাম, তাদের আর আমাদের কোনো পার্থক্য থাকলো না, তারাও লুটপাট-চুরি করতো বিজয়ের পর আমরাও সেই পথে হাঁটলাম। তারা সুযোগ পেয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ লুট করেছে আর আমরা যতটুকটু সুযোগ পেলাম ততটুকু লুট করলাম। পার্থক্য থাকলো কোথায়!

আপনারা ক্ষোভ থেকে এসব করেছেন হয়তো কিন্তু কখনোই তা কাম্য নয়। আমরা বলি সকল দেশের রাণী সেজে সেতো আমারা জন্মভূমি। কিন্তু আমরা যেই উদাহরণ তৈরি করলাম তা বিশ্ব দরবারে একটি ভুল বার্তা দিল। এজন্য আমাদের এসব ফিরিয়ে দিতে হবে এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

তিনি বলেন আমরা যদি আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন না করি তাহলে কোনো ভালো নেতৃত্বই আমাদের উপকার করতে পারবে না।

তিনি বলেন, বিজয়ের এই মুহূর্তে আমার কথাগুলো তিক্ত মনে হতে পারে, কিন্তু তবুও আমাকে এসব বলতে হচ্ছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ