খুলনা | রবিবার | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৩১ ভাদ্র ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রী-পরিবারের দাবি

শেখ পরিবারের প্রভাবে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসির রায় হয় প্রিতমের

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:৫৩ এ.এম | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪


কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেলের হস্তক্ষেপে নগরীর বসুপাড়া এলাকার আরিফুল ইসলাম প্রিতমকে ধর্ষণ মামলায় জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এ মামলায় মেডিকেল পরীক্ষা থেকে শুরু করে ঘটনাস্থলের কোনো ভিডিও ফুটেজে প্রিতমের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া গেলেও তাকে শোনানো হয়েছে ফাঁসির রায়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব  অভিযোগ করেন আরিফুল ইসলাম প্রিতমের স্ত্রী সাজিয়া হক। 
সংবাদ সম্মেলনে প্রিতমের স্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের ২৯ জুন বসুপাড়া বিহারী কলোনীতে একটা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরের দিন সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলার আবেদন করে ভিকটিম সোনালী আক্তার স্বর্ণা। সে আবেদনে শান্ত, নুরুন্নবী, শাহাদাৎ, মিম, মইন, আকাশের নাম উলে­খ করা হয়। তবে পরবতীর্তে মূল মামলার নথিতে হঠাৎ করে দেখা যায় প্রিতমের নাম। সেখানে তার বাবার নামও উলে­খ করা হয়নি। অজ্ঞাত বলা হয়। পরে শেখ সোহেলের প্রভাব খাটিয়ে কতিপয় আ’লীগ নেতা এ মামলার রায় বের করে। সেই রায়ে প্রিতমসহ ৬ জনের ফাঁসির আদেশ দেন খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আঃ সালাম খান।
তিনি আরো বলেন, তার শ্বশুরবাড়ির পরিবার বিএনপিপন্থী হওয়ায় এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে প্রিতমের পরিবারকে ভোট না দিতে দেয়ায় কতিপয় আ’লীগ নেতাদের সাথে তার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে তাকে ফাঁসানো হয় এ মামলায়। স্থানীয় যুবলীগ নেতা সওকত, সোহেলসহ তাদের সহযোগীরা কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেলের মাধ্যমে এ মামলায় তার স্বামীকে ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি এ মামলার সুষ্ঠু তদন্তসহ সঠিক বিচারের দাবি জানান প্রিতমের স্ত্রী। এ সংবাদ সম্মেলনে প্রিতমের মা, চাচাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 
প্রতিমের স্ত্রী জানান, তার স্বামী আরিফুল ইসলাম প্রিতম ঘটনার দিন তার সাথেই ছিল। এ মামলার কোনো তথ্যে তার বিরুদ্ধে সঠিক প্রমাণ নেই। মেডিকেল সার্টিফিকেট থেকে শুরু করে ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ কোনো জায়গায় তার স্বামীকে দেখা যায়নি। ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা সরাসরি তার কাছে স্বীকার করেছে তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে এই মামলায় প্রিতমকে জড়ানো হয়েছে। তার ভিডিও রেকর্ড তার কাছে আছে। তাহলে কেনো তাকে ফাঁসির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে? আমি চাই আবারো এই মামলার তদন্ত হোক। সত্য বেরিয়ে আসুক। ক্ষমতাবলে প্রভাবিত হয়ে যে রায় দেয়া হয়েছে তা বাতিল করে পুনরায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে রায় দেয়ার জন্য আবেদন জানান তিনি। 
এ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া হয় ‘আমাকে কি দ্রুত ফাঁসি দেয়া যায় না?’ এই শিরোনামে জেল থেকে প্রিতমের লেখা একটি খোলা চিঠি। সেখানে তিনি উলে­খ করেন, বিগত সরকারের কিছু লোভাতুর মানুষের লালসার বলি হয়েছে সে। নির্বাচন কেন্দ্রিক কিছু ঝামেলার জের ধরে এই মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে। মামলার বাদীকে দিয়ে অপরাধীদের সাথে কিছু নিরাপরাধ মানুষকে জড়িয়ে মামলা করে। তাহলে ৫০ লাখ টাকা পাওয়া যাবে বলে বাদীকে আশ^স্ত করে তারা। তিনি জানান, এই ঘটনার সাথে আমার দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। তাই এই বার্তার মাধ্যমে মহামান্য কোর্ট বিষয়টি আমলে নিয়ে পুনঃতদন্ত সাপেক্ষে পুনঃবিচারের ব্যবস্থা করলে নিরাপরাধ মানুষগুলো ন্যায় বিচার পাবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ