খুলনা | শনিবার | ১২ অক্টোবর ২০২৪ | ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

বিদ্যুৎ গ্রাহকদের দুর্ভোগ দাম সহনীয় করা হোক

|
১২:০৬ এ.এম | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪


আধুনিক জীবনযাত্রায় বিদ্যুৎ ছাড়া জীবন অচল। অথচ এই বিদ্যুৎ নিয়ে এখন গ্রাহকদের রীতিমতো নাকানি-চুবানি খেতে হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১৪২ শতাংশ। আছে মিটারভাড়া, ডিমান্ড চার্জ, ভ্যাট, সার্ভিস চার্জসহ নানা রকম চার্জ। এসব নিয়ে গ্রাহকদের অভিযোগের অন্ত নেই। ভৌতিক বিলের অভিযোগও কম নয়। প্রি-পেইড গ্রাহকদের অভিযোগ, আগে যে পরিমাণ টাকা রিচার্জ করলে মাস চলে যেতো, এখন সেই একই পরিমাণ টাকা রিচার্জ করা হলেও তা মাস শেষ হওয়ার অনেক আগেই শেষ হয়ে যায়। এভাবে বিদ্যুতের খরচ বাড়লেও একই হারে বাড়ছে না মানুষের আয়। ফলে কেবলই বাড়ছে ভোগান্তি।
দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুতের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। সাধারণ বাতি-ফ্যান থেকে শুরু করে টিভি, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ ওভেনসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের অভাব নেই। এসিও এখন নাগরিক জীবনের অংশ হয়ে গেছে। ফলে সাধারণ অনেক পরিবারকেও এখন পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয়। গণমাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সাত হাজার ৬০০ টাকা দামের এক ফেজের একটি মিটারের জন্য প্রতি মাসে ভাড়া দিতে হয় ৪০ টাকা করে। ফলে ১০ বছরের কিছু সময় পর মিটারের টাকা পরিশোধ হয়ে যায়। অথচ তার পরও প্রতি মাসে ভাড়া কাটা হয়। আর ডিমান্ড চার্জ নেওয়া হয় প্রতি কিলোওয়াটে ৪২ টাকা।
একজন গ্রাহক জানান, তিনি বাসার মিটারের জন্য আগের মাসের ৭ তারিখে এক হাজার টাকা রিচার্জ করেছিলেন। আগে এতে মাস চলে যেতো। এখন মাস চলে না। আবার রিচার্জ করতে হয়। তিনি জানান, এক হাজার টাকা রিচার্জে কেটে নেওয়া হয় মিটারভাড়া বাবদ ৪০ টাকা, ডিমান্ড চার্জ ৮৪ টাকা, ভ্যাট ৪৭ টাকা ৬২ পয়সা, সার্ভিস চার্জ ১০ টাকা। অভিযোগ আছে, পোস্ট-পেইড গ্রাহকদেরও।
জানা যায়, দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের মোট উৎপাদন সক্ষমতা ৩১ হাজার ৫২০ মেগাওয়াট। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উৎপাদিত হয়েছে ১৬ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট। বাড়তি সক্ষমতা ব্যবহার না হলেও নিয়মিত ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হচ্ছে। আর তা উৎপাদিত ইউনিটের দামে যুক্ত হয়। আর সেই চাপ গিয়ে পড়ে ভোক্তার ওপর। আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ তিন মেয়াদে গত ৩০ জুন পর্যন্ত ৭৩টি আইপিপি (ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) ও ৩০টি রেন্টাল (ভাড়ায় চালিত) বিদ্যুৎকেন্দ্রকে প্রায় এক লাখ ছয় হাজার কোটি টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয়েছে। আর তা পরিশোধ করতে হয়েছে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের।
আমরা আশা করি, গ্রাহকদের স্বার্থে বিদ্যুৎ খাতের যৌক্তিক সংস্কার করা হবে এবং বিদ্যুতের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা হবে।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ