খুলনা | মঙ্গলবার | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১ আশ্বিন ১৪৩১

সরকারি ১ হাজার একর জমি দখল বসুন্ধরার আলম-আনভীরের

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৫ এ.এম | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪


শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্র“প বসুন্ধরা গ্র“পের বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সরকারের খাস, নালা, নদীসহ ৮০০ একর (২ হাজার ৪০০ বিঘা) এবং ভাওয়াল রাজ এস্টেটের ২১৬ একরসহ মোট ১ হাজার ১৬ একর জমি বেআইনিভাবে দখল করার অভিযোগ রয়েছে বসুন্ধরা গ্র“পের বিরুদ্ধে।
বসুন্ধরা গ্র“পের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান শাহ আলম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ এই শিল্প গ্র“পের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং (অর্থ পাচার) অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার সিআইডি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
সিআইডির হোয়াটসঅ্যাপ গ্র“পে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন উৎস থেকে জানা গেছে, বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্পের প্রস্তাবিত জমির কিছু অংশ রাজউকের অনুমোদন থাকলেও অধিকাংশই রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই ক্ষমতা ও অর্থের বলে জনসাধারণের ও সরকারি সম্পত্তি যেমন খাল, বিল, নদী, খাস জমি, পতিত ভূমি, কবরস্থান, বধ্যভূমি ইত্যাদি ভরাট করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। বসুন্ধরা রিভারভিউ আবাসন প্রকল্পের ক্ষেত্রেও রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে জায়গা দখল ও ভরাটের কাজ করে জনসাধারণ তথা সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে থেকে প¬ট বিক্রয়ের মাধ্যমে অগ্রিম এককালীন ও কিস্তির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বিভিন্ন ব¬কে ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া যায়, যার আনুমানিক মূল্য দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি। এসব জমি নিজেদের দখলে নিতে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নেয় বসুন্ধরা গ্র“প। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সরকারের খাস, নালা, নদীসহ ৮০০ একর (২ হাজার ৪০০ বিঘা) এবং ভাওয়াল রাজ এস্টেটের ২১৬ একরসহ মোট ১ হাজার ১৬ একর জমি  বেআইনিভাবে দখল করার অভিযোগ রয়েছে বসুন্ধরা গ্র“পের বিরুদ্ধে।
সিআইডি জানায়, বসুন্ধরা গ্র“প দেশের বিভিন্ন তপশিলি ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত জামানত না রেখে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বিঘাপ্রতি ২০-২৫ লাখ টাকায় কেনা জমি; কাঠাপ্রতি ৩ কোটি টাকা দাম দেখিয়ে ৪২ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়েছে। এই ঋণের বেশির ভাগ অর্থ পাচার করা হয়েছে দুবাই, সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, লন্ডন, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। বসুন্ধরা গ্র“পের সিঙ্গাপুর অফিস দেখাশোনা করছেন শাহ আলমের বড় ছেলে সাদাত সোবহান তানভীর। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে একের পর এক প্রকল্প দেখিয়ে হাজার হাজার  কোটি টাকা ঋণ নিলেও সেসব ঋণ পরিশোধ না করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ঢাকার কেরানীগঞ্জে বসুন্ধরা রিভার ভিউ প্রজেক্টে অবস্থিত বসুন্ধরা ওয়েল ও গ্যাস নামক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবসা-বাণিজ্যের নামে মানি লন্ডারিংয়ের আশ্রয় নিয়ে বিদেশ থেকে আনুমানিক ২ হাজার কোটি টাকার বিটুমিন আমদানি করে। পরবর্তীকালে আমদানিকৃত বিটুমিন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে ইচ্ছামতো দাম নিয়ন্ত্রণ করে মনোপলি বিজনেসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে।
সিআইডি আরো জানায়, দেশের স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটের অন্যতম নিয়ন্ত্রক বসুন্ধরা গ্র“পের এমডি সায়েম  সোবহান আনভীর। ঐ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে দেশে একটি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রায়ই স্বর্ণের বাজার অস্থিতিশীল করে তোলার তথ্য পাওয়া যায়।
এছাড়া বসুন্ধরা গ্র“পের স্বার্থসংশ্লি¬ষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জাল জালিয়াতি, শুল্ক ফাঁকি, ভ্যাট ফাঁকি, আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েসিং করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার সংক্রান্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মানি লন্ডারিং অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিআইডি। 
সূত্র : ভোরের কাগজ অনলাইন।

্রিন্ট

আরও সংবদ