খুলনা | বুধবার | ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

শিক্ষার্থীকে গুলি করার ভিডিও ভাইরাল, পুলিশ সদস্য গ্রেফতার

খবর প্রতিবেদন |
০১:৫০ এ.এম | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪


বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গাজীপুরে গুলি করে কলেজছাত্র হৃদয়কে (২০) হত্যার ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।  গ্রেফতার পুলিশ সদস্যের নাম মোঃ আকরাম হোসেন (২২)। তিনি গাজীপুর শিল্প পুলিশে কর্মরত ছিলেন।
হৃদয় টাঙ্গাইলের গোপালপুরের আলমনগর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি জেলার হেমনগর ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ালেখার পাশাপাশি গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।  শনিবার গাজীপুর মহানগর পুলিশের কোনাবাড়ী জোনের সহকারী কমিশনার সুবীর কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, গত ৫ আগস্ট গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন হৃদয়। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দেখে হৃদয় রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। পরে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই সময় পুলিশের কয়েকজন সদস্য কোনাবাড়ী এলাকার দায়িত্বে ছিলেন। এ সময় তাঁরা হৃদয়কে রাস্তার পাশ থেকে ধরে নিয়ে চড়থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্য আকরাম তাঁকে গুলি করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।  এ ঘটনায় ২৬ আগস্ট নিহতের ফুপাতো ভাই মোঃ ইব্রাহীম বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল রাতে কিশোরগঞ্জের পারাইল এলাকা থেকে আকরামকে গ্রেফতার করে। 
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার সুবীর কুমার সাহা বলেন, ‘পুলিশ সদস্য আকরাম অতি উৎসাহিত হয়ে হৃদয়কে গুলি করেছেন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। প্রাথমিকভাবে যে তদন্ত করা হয়েছে, সেখানে পুলিশ সদস্য আকরামের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।’ 
তাঁকে গ্রেফতারের পর শনিবার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন আদালতে তোলা হয়। আদালত সোমবার শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
বাদী মামলায় উলে­খ করেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল¬া ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের নির্দেশে অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জন সন্ত্রাসী ছাত্রদের ওপর হামলা চালান। এ সময় আমার মামাতো ভাই হৃদয় প্রাণভয়ে পাশের একটি দোকানে আশ্রয় নেন। এর কিছুক্ষণ পরেই অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যরা মোঃ হৃদয়কে দোকান থেকে টেনেহিঁচড়ে রাস্তার ওপরে নিয়ে যান। পরে তাঁকে পুলিশ সদস্যরা ঘেরাও করে আগ্নেয়াস্ত্র পেটে ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করে লাশ গুম করেন। যা আমি ও আমার আশপাশের লোকজন ভিডিও ধারণ করি। ওই ঘটনায় ৫৭ জনের নাম উলে­¬খ করে অজ্ঞাত ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ছয়জন পুলিশ ওই যুবককে ধরে নিয়ে পাশের গলিতে নিয়ে যান। পরে তাঁরা তাঁকে চারদিক দিয়ে ঘিরে ফেলেন। এর মধ্যে থেকে এক পুলিশ সদস্য হৃদয়ের মুখে চড়-থাপ্পড় মারেন। এরপর পুলিশের মধ্য থেকে এক সদস্য তাঁর পেটে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। এতে তাৎক্ষণিক তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং আশপাশে রক্তে ছেয়ে যায়। এ সময় ভিডিওতে দেখা যায়, আরও পাঁচজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসে। লাশ সেখানে কিছু সময় পড়ে থাকতে দেখা যায়।

্রিন্ট

আরও সংবদ