খুলনা | শনিবার | ১২ অক্টোবর ২০২৪ | ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

বন্যা উত্তর গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুদ্ধার জরুরি

|
১২:৪০ এ.এম | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪


বন্যার্তদের পুনর্বাসন এবং গ্রামীণ অর্থনীতির পুনরুদ্ধার দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতই জরুরি হয়ে পড়েছে। সা¤প্রতিক দেশের পূর্বাঞ্চলের বন্যায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, গ্রামীণ অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে তাকে সামাল দিতে না পারলে জনজীবনে বিপর্যয় ঘটবে। 
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিসের তথ্য সূত্রে দেশের দক্ষিণ ও উত্তর পূর্বাঞ্চলে সা¤প্রতিক বন্যায় ৫৯ লাখের বেশি মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছে। ইউনিসেফ জানিয়েছে বন্যায় ১০ লাখেরও বেশি শিশু ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কারো কোনো প্রস্তুতি ছিল না। হঠাৎ বন্যায় ১১ জেলা তলিয়ে গেল পানির নীচে। বিগত ৩৪ বছরে দেশের পূর্বাঞ্চলে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। মানুষ কোনো কিছু বুঝে উঠতে পারার আগেই এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। ঘর-বাড়ি সহায় সম্বল ফেলে আদম সন্তানেরা নিরাপদ আশ্রয় খুঁঁজতে ছুটতে থাকে। নোয়াখালী, ফেনী, লহ্মীপুর এবং কুমিল­ায় নিরাপদ আশ্রয়ের সুযোগ পায়নি। নিজ বাড়িতে আটকা পড়ে কেউ বাড়ির ছাদ, টিনের চাল বা খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করে। চারিদিকে অন্ধকার, খাবার নেই, বিশুদ্ধ পানি নেই এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির চিত্র ভুক্তভোগী ছাড়া বোঝা যাবে না। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে অনেক ঘর বাড়ি তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ, মাছের খামার। ভেসে গেছে গৃহপালিত গবাদিপশু, হাঁস-মুরগী আসবাবপত্র ইত্যাদি। টাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যে ক্ষতি হয়েছে তা মেরামতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন।
পরিস্থিতির আকষ্মিকতায় অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিঃস্ব হয়ে এক কাপড়ে হাজির হয়েছে। এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। হতাহতের সংখ্যা, ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নির্ভুলভাবে নিরুপণ করতে হবে। সঠিক নিরুপণের পরে পুনর্বাসন ও পুনর্গঠনে কি পরিমাণ অর্থের দরকার পড়বে তা জানতে পারব। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষিখাত। সেই সাথে ক্ষুদ্র কারখানা, কুটির শিল্পের গতি একবারে স্থবির হয়ে পড়েছে। মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ৬৮টি উপজেলা, ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন এবং পৌরসভার সংখ্যা ৫০৪টি।
এ ভয়াবহ বন্যায় তাৎক্ষণিক ক্ষতি ছাড়াও তার যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সুদুর প্রসারি। বন্যায় গৃহহীন হওয়া, পানি ও রোগের প্রাদুর্ভাব ছাড়াও মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং হাতাশার নেতিবাচক প্রভাব কম নয়। সরকার যদি গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সময়োপযোগী পদক্ষেপ না নেয় তাহলে দেশে দারিদ্র ও বেকারত্বের হার বাড়বে। দেশের অন্যান্য জটিল পরিস্থিতির সাথে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংককে গ্রামীণ অর্থনীতি টেকসই কর্মহীন জনগোষ্ঠিকে সাবলম্বী করতে এখনই ফলপ্রসূ বিশেষ প্রকল্প হাতে নিতে হবে। এনজিও এবং দাতাসংস্থার সাহায্য ছাড়াও সুদমুক্ত ঋণদানের সতর্ক ব্যবস্থা নিতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ