খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

‘শেখ হাসিনার ৫০ বছরের রাজনীতি, প্রতিশোধের রাজনীতি’

দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিহত করার আহবান মাওলানা মামুনুলের

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০১:২০ এ.এম | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪


বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেছেন, ১৯৭৫ সাল থেকে ২০২৪ সাল, ১৫ আগস্ট থেকে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ৫০ বছরের রাজনীতি, প্রতিশোধের রাজনীতি। বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে তিনি প্রতিশোধ গ্রহণ করেছেন। এদেশের মানুষ যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেই ব্যবস্থা তিনি করেছেন। দেশটা যেন তলাবিহীন ঝুড়িতে রূপান্তরিত হয় সেই ব্যবস্থা তিনি করেছেন। আমার কাছে আশ্চর্য লাগে-একটা বিধবা নারীর কত টাকা লাগে? লক্ষ কোটি টাকা আমার গরিব দেশ থেকে পাচার করলা, দেশের শ্রমিকরা মেহনত করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বিদেশ থেকে আমাদের ছেলেরা-মেয়েরা কষ্টার্জিত পয়সা দেশে পাঠায়। আর আশা করে বাংলাদেশ উন্নত হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বরে গণসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, তোমরা মেগা মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভীতকে ধসিয়ে দিলে। আসলে তাদের এত টাকার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু চুরি করেছে শুধু এই জন্য যেন বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে। বাংলাদেশটাকে আরেকটা দেশের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার চক্রান্ত করেছে।
মামুনুল হক ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, যদি বন্ধুত্বের চিন্তা নিয়ে আমাদের দিকে হাত বাড়ান তাহলে আমরা হাত আপনাদের দিকে প্রসারিত করব। আর যদি প্রভুত্বের চিন্তা নিয়ে হাত বাড়ান তবে সেই হাত আমরা উপড়ে ফেলবো।
তিনি বলেন, দেশে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। খুবই ভালো উদ্যোগ, তবে তাদের কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে। শেখ হাসিনা এবং তার দোসর- যারা এই দেশে গুম, খুন, করেছে, এই দেশের অর্থ বিদেশে যারা পাচার করেছে তাদের প্রত্যেকের বিচার করতে হবে। প্রয়োজনে ইন্টারপোলে রেড এ্যালার্ট জারি করে তাদের প্রত্যেককে দেশে ফিরিয়ে এনে এই দেশের মাটিতে বিচার করতে হবে।
মামুনুল হক আরো বলেন, আমাদের সন্তানেরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে বিজয় অর্জন করেছে। সেই অর্জন যতটা কঠিন হয়েছে তার থেকে বড় কঠিন অর্জন ধরে রাখা। তাই এই বিজয় ধরে রাখতে মানুষকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার জন্য সকলের প্রতি আহŸান জানান।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা মুজিবুর রহমান। সমাবেশে বিভিন্ন থানা ও উপজেলা থেকে আগত নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
বাগেরহাট : বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার প্রায় ১৬ বছর অবৈধ ভাবে দেশ শাসন করেছে। পরিশেষে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা ভারতে বসে বিভিন্ন ভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না ইনশাআল­াহ। সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি রক্ষা করতে হবে। তাই সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে খেলাফত মজলিসের সকল নেতা-কর্মীদের পাহারায় থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বাগেরহাট জেলা শাখার সভাপতি মুফতি রমিজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্ম-মহাসচিব মুফতি শারাফাত হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত জালালী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাওলানা রুহুল আমিন খানসহ খেলাফত মজলিস-এর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
মামুনুল হক আরও বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে রাতের অন্ধকারে রাজধানীর শাহবাগে বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা হতে হয়েছে নবী প্রেমিক বহু হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা-কর্মীকে। ২০২৪ সালের জুলাই মাস জুড়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পরাজয় শুরু হয়। খুনি হাসিনা, সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ, যুবলীগ, হাতুড়ি লীগ, হেলমেট লীগ সশস্ত্র অবস্থায় এদেশের শান্তিপ্রিয় কোমলমতি ছাত্র জনতার বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লো, আর গুলি করে একের পর এক হত্যা করা হলো আমাদের সন্তানদেরকে। 
মামুনুল হক বলেন, হিন্দু ভাইয়েরা আপনারা যত খুশি মূর্তি বানান আমরা আপনাদের পাহারা দিবো। কিন্তু রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থ নিয়ে কোন বাবার মূর্তি করতে দেওয়া হবে না। যারা তৈরি করবে তাদের হাত ভেঙে দেওয়া হবে।
আমরা দেখেছি শেখ হাসিনার রাজনীতির কূটকৌশল ছিল সংখ্যালঘুদের রাতের অন্ধকারে কাল নাগিনী হয়ে ছোবল মারতো। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয় না। বাংলাদেশের আলেম সমাজ ইমাম সমাজ এদেশের ইসলাম প্রিয় জনতা এক মাস পর্যন্ত হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানদের ধর্মীয় উপাসনালয় পাহারা দিয়েছে। আমরা আগামী দিনেও এই দেশে স¤প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত ধরে রাখবো। এই দেশ মুসলমানের এই বাংলাদেশ হিন্দুদের এই বাংলাদেশ বৌদ্ধদের এই বাংলাদেশ খ্রিস্টানদের। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের বাংলাদেশ। এই দেশ এগিয়ে যাবে ইনশাআল­াহ। শেখ হাসিনা মোদি সরকারের অধীনে রয়েছে। কিন্তু সেখানে বসে যদি আমাদের এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যদি কোন ষড়যন্ত্র করে তবে ছাড় দেওয়া হবে না। ভবিষ্যতে ষড়যন্ত্রকারীরা যতই ষড়যন্ত্র করুক বাংলাদেশকে আর কখনোই পিছনে নিতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারী দেন তিনি।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ