খুলনা | শনিবার | ১২ অক্টোবর ২০২৪ | ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

বাগেরহাটে টানা বৃষ্টিতে শহরে হাটু পানি, জলাবদ্ধতায় দূর্ভোগ চরমে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট |
০৬:১২ পি.এম | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪


টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে জেলা জুড়ে। হাট বাজার, রাস্তাঘাট গ্রাম-শহর অধিকাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। বিভিন্ন সড়কের উপর পানি থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারী ও যানবাহন চালকরা। শুক্রবার বিকেল থেকে আজ রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত বিরামহীন বৃষ্টিতে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বাগেরহাটে।

এদিকে বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বাগেরহাটের উপকুলজুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সাগরে থাকা মাছধরা ট্রলারগুলো নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।
রবিবার দুপুরে বাগেরহাট শহর ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ এলাকার অলিগলি পানিতে তলিয়ে গেছে। শহরের খানজাহান আলী রোড, রেল রোড, সাধনার মোড়, শালতলা, পিটিআই মোড়, খারদার স্কুল রোড, জেলা হাসপাতাল মোড়, জেলা ডাকঘরের সামনে, বাসাবাটি, মিঠাপুকুরপাড় মোড়, পৌরসভার পাশে, জাহানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পেছনসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে। বাগেরহাট মিঠাপুকুরের কচুরিপানা ভেসে আসছে পাকা সড়কে  ও বাসাবাড়িতে। সড়কে পানি জমে থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। পানিবন্দি পরিবারগুলো এখন দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে।বিড়ম্বনায় পড়েছে শহর ব্যবহারকারীরা। জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ম আয়ের মানুষ।

অন্যদিকে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে রামপাল, মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও কচুয়ার বেশকিছু এলাকায় মৎস্যঘের ডুবে মাছ বের হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বৃষ্টি আরো  দু-একদিন স্থায়ী হলে এসব এলাকার বেশিরভাগ ঘের ডুবে যাবে বলে দাবি মাছ চাষীদের।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ এস এম রাসেল বলেন, এখনও উল্লেখযোগ্যভাবে মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার খবর আসেনি। তবে বৃষ্টির স্থায়ীত্ব বাড়লে মৎস্য ঘের ভেসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তরিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, প্রাকৃতি দূযোগে লাগাতার বৃষ্টিতে পৌরশহরের প্রায় সকল অলিগলি পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতায় মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়। দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

আমলাপাড়ার সড়কে বাসিন্ধা মমিতা সেন নামের এক গৃহবধূ বলেন, বসত ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় শনিবার রাতে রান্নাবান্না বন্ধ থাকায় শুকনা খাবার খেতে হয়েছে। এখন বাবার বাড়ি যাচ্ছি, এখানে থাকার পরিবেশ নেই।

বাগেরহাট শহরের রিকশা চালক রবিউল ইসলাম বলেন, দুই দিন  ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। সকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার পরেও,বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে বেরিয়েছি। রাস্তাঘাট গুলো গর্ত হয়ে গেছে ,পানিতে পাকা সড়কে গর্ত দেখা যায় না। তারপরও খেটের তাগিতে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। লোকজন নেই, তারপরও দুই চারজন যা পাচ্ছি এই দিয়েই সংসার চালাতে হবে।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল বিরুনী বলেন, পশুর নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে যাদি বৃষ্টি অব্যাহত থাক তাহলে নদীর পানি আরও বৃদ্বির সম্ভবনা রয়েছে।  

্রিন্ট

আরও সংবদ