খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১

তালা উপজেলায় টানা বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও মৎস্য ঘের

তালা প্রতিনিধি |
১১:২৭ পি.এম | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্ন চাপের ফলে গত তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে তালা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ ফসলি জমি, বেশ কিছু মাছের ঘের ও পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অবস্থা আরও দুই-একদিন চলবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।
রোববার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ৩ দিনে গড়ে সমগ্র সাতক্ষীরা জেলা জুড়ে ১৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তালা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মৎস্য ঘের, আমন ধান এর আবাদ, কাঁচা সবজি, হলুদ ক্ষেত, ঝাল বেগুনসহ বিল অঞ্চল বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়ে কৃষকদের কৃষি ফসল ও মৎস্যঘের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। বহু মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়েছে। মানুষের স্বাবাভিক জীবন যাপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে মৎস্য ঘের, আমন ধান ও কৃষিপণ্যের মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। খালে বিলে গ্রামের মানুষরা জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা যায়। 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে আমন ধানের ক্ষেত। পানিতে ভেসে গেছে বেশ কিছু মাছের ঘের, পুকুর ও ফসলি জমি। পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট। কোন কোন এলাকায় বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে গেছে লোকালয়। কিছু কিছু অঞ্চলে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করেছে নোংরা পানি। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। বিশুদ্ধ পানির সংকট আর বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এসব এলাকা। বেড়েছে সাপ পোকা মাকড়ের উৎপাত। বৃষ্টির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। বিশেষ করে দৈনন্দিন উপার্জনের উপর নির্ভরশীল দরিদ্র পরিবারগুলো নিদারুণ কষ্টে পড়েছেন। বৃষ্টির কারণে উপার্জন বন্ধ থাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। সেই সাথে গো-খাদ্য নিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন গবাদিপশু লালন পালনকারীরা। বৃষ্টির পরিমাণ আরো বাড়লে আমন ধানের ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। অপর দিকে মাঝিয়াড়া কেরামত খাঁ ইদগাহ হতে শাহাপুর দধিসারা, চন্ডিপুর খালটি শালতা নদীর সাথে পানি নিষ্কাশনের যোগসূত্র। সাবেক চেয়ারম্যান সাংবাদিক এস এম নজরুল ইসলাম উলে­খিত খালসহ শালতা নদী পুনঃখনন করে এ অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছিলে। যার ফলে এ অঞ্চলের কৃষকরা তাদের ফসল সফল ভাবে উৎপাদন করছিলেন। কিন্তু উক্ত খালে নেটপাটা, শেওলা বা তার পর থেকে আর কোন সংস্কার না করায় পানিষ্কাশনের বাধাগ্রস্ত হয়ে হাজার হাজার বিঘা জমিতে আমন ধানসহ কাঁচা ফসল তলিয়ে গিয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে কৃষকদের পথে বসার উপক্রম হবে। অনুরুপ মোবারাকপুর, হরিশচন্দ্রকাটি, খাজরা বিল, বারুইহাটি বিল, খানপুর বিলসহ উপজেলা ১২টি ইউনিয়নে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার একই অবস্থা পরিলক্ষিত হয়। 
এদিকে, জেয়ালা নিকারী পাড়ায় পানি নিষ্কাশনের গতিপথ বন্ধ করে ঘর তৈরি করায় গ্রামটির একাংশ প্লাবিত হয়ে পানিতে ডুবে রয়েছে জনগণ। শত শত জনগণ সেনা ক্যাম্পে গেলে সেনাবাহিনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার তালাকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন বলে জানা গেছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। 
সাতক্ষীরা জেলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জুলফিকার আলী রিপন জানান, টানা তিনদিন থেমে থেমে বৃষ্টিতে সাতক্ষীরা জেলার প্রায় সকল উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি, বেশ কিছু মাছের ঘের ও পুকুর পানিতে ডুবে গিয়েছে। সোমবার থেকে এ অবস্থার কিছুটা উন্নতি হতে পারে বলে জানান তিনি।

্রিন্ট

আরও সংবদ