সাতক্ষীরার তালায় কপোতাক্ষ নদ অববাহিকার পাখিমারা বিলের পলিদ্বারা ভরাট হওয়া খাল জরুরি ভাবে খনন এবং বাস্তবায়িত টিআরএম কার্যক্রমের বকেয়া ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা। রোববার দুপুর ১২টায় তালা প্রেসক্লাবে এক সাংবাদ সম্মেলনে পাখিমারা টিআরএম বিলের অধিবাসীরা এই দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে পাখিমারা টিআরএম বিল কমিটির বালিয়া এলাকার সভাপতি মোঃ আব্দুল আলীম বলেন, কপোতাক্ষ অববাহিকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলাধীন পাখিমারা বিলে সরকার কর্তৃক জোয়ারাধার তথা টিআরএম কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর ফলে সমগ্র কপোতাক্ষ অববাহিকার ভুক্তভোগী মানুষ জলাবদ্ধতার কবল থেকে মুক্ত হয়েছে। কিন্তু আমরা পাখিমারা বিল অধিবাসীরা টিআরএম দ্বারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। টিআরএম বন্ধ হওয়ার পর ক্ষতিসমূহ এখনও অব্যাহত আছে।
তিনি আরও বলেন, টিআরএম বাস্তবায়িত হওয়ার কারণে বিলের মধ্যে নিষ্কাশন খালগুলো পলি দ্বারা ভরাট হয়েছে। পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কারের নামে কর্তৃপক্ষ বালিয়া কাটপয়েন্ট থেকে ১ কিলোমিটার দূরে সংযোগ খাল বেঁধে টিআরএম কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ফলে এই সংযোগ খাল জোয়ারের পলি দ্বারা দ্রুত ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশনের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এখন নদী থেকে বিলের মধ্যে পানি উঠানো হলে সে পানি যেমন নামতে পারছে না তেমনি বিলের মধ্যে বর্ষার পানিও নিষ্কাশিত হতে পারছে না। ফলে সমগ্র বিল এখন জলাবদ্ধ কবলিত। যার কারণে বিলে ধান চাষ, মাছ চাষ এবং সবজি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। মানুষের জীবিকা ও ভরণ পোষণ নির্বাহের জন্য জরুরি ভাবে সংযোগ খালসহ বিলের খাল খনন করা একান্ত প্রয়োজন।
আব্দুল আলীম আরও বলেন,  পাখিমারা বিলে যতদিন টিআরএম বাস্তবায়িত হয়েছে সেই হিসেবে জমির মালিকরা প্রাপ্য অর্থের মাত্র ১৮ শতাংশ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছে। এখনও ৪৬ কোটি টাকা সরকারের কাছে বকেয়া আছে, যা না পাওয়ায় এলাকাবাসীদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। বকেয়া টাকা পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিকট জনগণের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কোন সিদ্ধান্ত এখনও পর্যন্ত আমরা অবগত হতে পারেনি।
এছাড়া স¤প্রতি বিল এলাকায় জরুরি ভাবে পানি নিস্কাশনের জন্য খাল খননের দাবিতে তালা উপজেলা প্রশাসন এবং বেসরকারি সংগঠন উত্তরণ এর নিকট আবেদন করা হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সংযোগ খালের ১ কিলোমিটার খালে একটি প্রণালী সৃষ্টির জন্য তালা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা এবং উত্তরণ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এজন্য তারা প্রশাসন ও উত্তরণ কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। 
তিনি দ্রুত পাখিমারা বিলে পলি দ্বারা ভরাট হওয়ায় সংযোগ খালসহ অন্যান্য খালগুলো খননের জন্য জরুরীভাবে প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়িত টিআরএম কার্যক্রমের বকেয়া ক্ষতিপূরণ অতিদ্রুত প্রদানের ব্যবস্থা করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।