খুলনা | শুক্রবার | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১২ আশ্বিন ১৪৩১

পক্ষপাতিত্ব নয় সাহসী কৌশলী পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করতে হবে

|
০১:১৬ এ.এম | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪


রাষ্ট্র মেরামতে সংস্কার কমিশন কাজ শুরু করছে। তবে পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে যে সংস্কার জরুরি তাকে উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। বর্তমান সরকার পররাষ্ট্রনীতির প্রশ্নে পশ্চিমা বিশ্বের মিত্র হবে, যার প্রয়োজনও রয়েছে। চীন বা রাশিয়ার সাথে শত্র“তা না ডেকে কৌশলে সেটা করতে হবে। এ রকম ভারসাম্য ভারত-পাকিস্তান ও তুরস্ক অনুসরণ করে যাচ্ছে। এ রকম কৌশলগত পররাষ্ট্রনীতি ন্যাটো সদস্যভুক্ত হয়েও তুরস্ক সফলতার সাথে অনুসরণ করে যাচ্ছে। আমাদের এমন কৌশলী না হলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।
ড. ইউনুস সরকার স্পষ্ট জানিয়েছেন তার প্রশাসন পররাষ্ট্রনীতিতে সব দেশের সাথে সমান আচরণ করবে। মূলত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তিই হল পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সহযোগিতা। তবে এই নীতিগত ভিত্তির বাস্তব প্রয়োগই হচ্ছে বড় কথা। অন্তবর্তী সরকারের দিক নির্দেশনা তৈরি করেছেন পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মোঃ তৌহিদ হোসেন। তিনি বৈশ্বিক শক্তির সাথে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্কের উপর জোর দিয়েছেন। বলা বাহুল্য এটা একটি ন্যায়সঙ্গত বৈদেশিক নীতির প্রতি ড. ইউনুস সরকারের বৃহত্তর প্রতিশ্র“তির প্রতিফলন।
অন্তবর্তী সরকারের প্রথমিক পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বর্তমান সরকারের সাথে কাজ করার প্রতিশ্র“তি জানিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নও সরকারের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন। প্রসংগত ইইউ বাংলাদেশ থেকে বছরে ২৪ বিলিয়ন ডলার পণ্য আমদানি করে। পাকিস্তান ইসলামাবাদ ও ঢাকার মধ্যে সহযোগিতা আরও গভীর করার কথা ব্যক্ত করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সংখ্যালঘু স¤প্রদায় ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়ে অধ্যাপক ইউনুসকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী ড. ইউনুসকে অভিনন্দন জানিয়ে যে বার্তা দিয়েছেন এতে সম্পর্কের উষ্ণতার প্রতি সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মিডিয়া ও থিংকট্যাংকগুলো অব্যাহতভাবে যা বলে চলেছে তা হল ভারতের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশে ভারত বান্ধব বা অনুগত সরকার প্রয়োজন। এতে পরিস্কার বোঝা যায় ভারত বিগত ১৫ বছর বাংলাদেশকে যে অনুগত পেয়েছিল তাকে অব্যাহত রাখতে চায়। অন্তবর্তী সরকার যে অধীনতামূলক পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে আসছে তা মনে হয় ভারত আচ করতে পারছে।
চীন বাংলাদেশের নতুন প্রশাসনকে স্বাগত জানিয়েছে। সাথে সাথে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার প্রতিশ্র“তি এবং উন্নয়ন সহযোগি হওয়ার কথাও বলেছে। তবে বিগত সরকারের অতিমাত্রায় দিল­ীর অনুগত মনোভাব চীনকে বিরক্ত করেছে। তাই বেইজিংয়ের সাথে ড. ইউনুস এবং পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক কতখানি সুনজরে ভারত নেবে তা বলা মুশকিল।
তবে ভারতের সাথে বৈরি সম্পর্ক উভয় দেশের পক্ষে ভাল হবে না। পানি বণ্টন চুক্তি আন্তর্জাতিক আইন মেনেই সমাধান করা যায়। সার্ক ও বিমস্টেককে শক্তিশালী করা দরকার। রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক ইতিবাচক রেখে ভারতের  সাথে দেশের সার্বভৌমত্ম্য ক্ষুন্ন না করে কৌশলী সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রাখতে হবে।

 

্রিন্ট

আরও সংবদ