খুলনা | শুক্রবার | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১২ আশ্বিন ১৪৩১

‘মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ বাংলাদেশ’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়বেন না ড. ইউনূস

খবর প্রতিবেদন |
০১:০৫ এ.এম | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪


বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ প্রসঙ্গে পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘আমাকে দেখে কি মনে হয়, আমি নির্বাচনে লড়বো?’ বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস আয়োজিত ‘ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে করা প্রশ্নে তিনি এসব কথা বলেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেয়া উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেছেন ড. ইউনূস।  
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে কবে নির্বাচন হবে, তার কোনো সময়সীমা তার কাছে নেই। যে কয়েকটি কমিশন গঠন করা হয়েছে, তারা সামনের মাসগুলোতে সংস্কার সুপারিশ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারপর নির্বাচনের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে আছেন। সেখান থেকে তাকে ফেরানো (প্রত্যর্পণ) হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘কেন হবে না?’ অপরাধ করে থাকলে তাকে (শেখ হাসিনা) ফিরিয়ে (প্রত্যর্পণ) এনে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
প্রসঙ্গত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ৭৯তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে যান। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর তার উচ্চ পর্যায়ের সাধারণ বিতর্কে বক্তৃতা দেয়ার কথা রয়েছে। পরে ওইদিনই তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। প্রধান উপদেষ্টা পূর্ববর্তী সরকার প্রধানদের মতো চার্টার ফ্লাইটে নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে এই যাতায়াত করবেন।
শীর্ষ স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের বৈঠক : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তাঁর সরকার দেশে মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ।  স্থানীয় সময় বুধবার এখানে একটি হোটেলে শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বৈঠকে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের সময় সংঘটিত নৃশংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার ও জবাবদিহিতা নিয়ে আলোচনা হয়। মানবাধিকার কর্মকর্তারা স্বৈরশাসকের সময় সম্পাদিত প্রায় ৩ হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের অধিকতর তদন্তের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তারা নিরাপত্তা খাতের সংস্কার, সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রত্যাহার ও নির্বিঘেœ ন্যায়বিচার প্রাপ্তি এবং শেখ হাসিনার স্বৈর-শাসনামলে বলপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের আটক কেন্দ্রের কার্যক্রমের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহŸান জানান।
রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকারের সভাপতি কেরি কেনেডি নয়জন মানবাধিকার কর্মকর্তার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ডও বৈঠকে যোগ দেন।
ক্যালামার্ড বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ‘একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠানো যে, এটি এক নতুন বাংলাদেশ।’
প্রফেসর ইউনূস কীভাবে পূর্বের স্বৈরাচারী শাসনামলে নাগরিকদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার হরণ করা হয়েছিল এবং তাঁর সরকার দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এ পর্যন্ত কী করেছে-তা সংক্ষিপ্ত ভাবে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের জন্য তাঁর সরকার পুলিশ সংস্কার সংক্রান্ত একটি কমিশনসহ বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার তার কর্মকান্ডের যে কোনো সমালোচনাকে স্বাগত জানাবে উলে­খ করে প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন বাকস্বাধীনতা বজায় রাখার অঙ্গীকার করেন।
ড. ইউনূস আরো বলেন, এই সরকার কোনো সমালোচনায় বিচলিত নয়। আসলে আমরা সমালোচনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সরকার দেশে কারো কণ্ঠরোধ করবে না।
হংকং-ভিত্তিক সাবেক মানবাধিকার কর্মী মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র গবেষক জুলিয়া ব্লেকনারও বৈঠকে বক্তৃতা করেন।

্রিন্ট

আরও সংবদ