খুলনা | রবিবার | ১৩ অক্টোবর ২০২৪ | ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি বিতর্ক এখনই মীমাংসা করতে হবে

|
১২:১৪ এ.এম | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪


বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির সুফল-কুফল নিয়ে অনেক আলোচনা  মতামতের বিস্তার চিরকাল চলতে দেয়া চলে না। বিষয়টি সহজ না হলেও তার একটা প্রতিবিধান হওয়ার এখনই অনুকূল সময়। কথায় বলে সময়ের এক ফোড় আর অসময়ের দশ ফোড়। সমাজ সংগঠনের নানাবিধ বৈষম্য অসংগতির সংস্কার কর্মযজ্ঞ চলছে। এক্ষেত্রে ছাত্র রাজনীতির বিষয়টি গতানুগতিকভাবে চললে, সংস্কার হীন হয়ে পড়ে থাকলে সংস্কারের সর্বাঙ্গীণ সফলতার প্রাপ্তি ঘটবে না। কারণ শিক্ষাঙ্গণ আর তার রাজনীতি কোনো তুচ্ছ বিষয় নয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি বন্ধ ঘোষণা। এ সময়ে সবাই লেজুড়বৃত্তি বন্ধের অনুকূলে অবস্থান নিয়েছিলেন। বলা বাহুল্য ছাত্র জনতার আন্দোলনের সাফল্য ও স্বৈর সরকারের পতনের পর এ দাবি বাস্তবায়নের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী ছাত্র সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি দাবি জোরালো করতে তাদের সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে। পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্রের হাতে একজন মানষিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র শিক্ষক নির্বিশেষে সব ধরণের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
দেশের রাজনীতির পট পরিবর্তনের আনন্দের কথা হচ্ছে ১১২ দিন পর আবার প্রাচ্যের অক্সফোর্ট খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ফিরেছে। ২ সেপ্টেম্বর থেকে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অর্থাৎ ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলগুলোকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন হলে মেধা ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আসন বণ্টন সম্পন্ন হয়েছে। প্রথমবর্ষ ছাড়া অন্য বর্ষগুলোর ক্লাস শুরু হচ্ছে ৩০ সে্েপ্টম্বর থেকে। এর মধ্যে ১০টি ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষে মত বিনিময় করেছেন। বিশ্ববিদ্যালায় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সবার সহযোগিতা চায়। ছাত্র সংগঠনগুলো সংস্কারের কথা বলে। ছাত্র নেতারা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) এবং বিভিন্ন হল সংসদ নির্বাচনের জন্য উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান।
মোটা দাগে বলতে গেলে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতি বিশেষ করে শিক্ষাঙ্গনে আধিপত্য বিস্তার ছাত্র রাজনীতিকে নানা বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন দেশ ব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ত্রাসের রাজত্ব কাযেম করেছে। প্রশাসনের উপর দলীয় ছাত্র সংগঠনগুলো অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে হলে সিট বাণিজ্য, ডাইনিং -এ ফাও খাওয়া, আশেপাশের দোকান থেকে এবং ঠিকাদারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের সংস্কৃতি সৃষ্টি করে। এদের ক্ষমতার দাপটে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা কোণঠাসা হয়ে থাকতো। এমনকি বিশ্ববিদ্যালযে অনেক হত্যাকান্ডের ঘটনাও ঘটিয়েছে। ক্যাম্পাসগুলো যেন বিভীষিকাময়। এ কারণেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ এখন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে ছাত্র আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। ছাত্র শক্তিকে দলীয় লেজুড়বৃত্তি থেকে মুক্ত করে জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যোগ্য রূপে গড়ে তুলতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ