খুলনা | রবিবার | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৪ আশ্বিন ১৪৩১

১৪ মাস পর চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলো ভারত, কমলো শুল্কও

খবর প্রতিবেদন |
০১:১৩ এ.এম | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪


ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাসমতী ভিন্ন সাদা চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। শুক্রবার এই বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে বলা হয়েছে, এই নির্দেশনা অনতি বিলম্বে কার্যকর হবে।
২০২৩ সালের জুলাই মাসে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ নিশ্চিত ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর ১৪ মাস পর তারা সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল।রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন রপ্তানিকারকরা। 
সরকারের এই সিদ্ধান্তে ভারতের চাল রপ্তানিকারকেরা সন্তুষ্ট হয়েছেন। এই সিদ্ধান্তকে তাঁরা চালের বাজারের জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ বা তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। চাল রপ্তানিকারক সংগঠন রাইস ভিলার প্রধান নির্বাহী সুরজ আগরওয়াল বলেন, এই কৌশলগত সিদ্ধান্তে যে শুধু রপ্তানিকারকদের আয় বাড়বে তা নয়, বরং কৃষকেরাও উপকৃত হবেন। খারিফ শস্য (বর্ষাকালীন) বাজারে আসছে; এই সিদ্ধান্তের বদৌলতে কৃষকেরা ভালো দাম পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সুরজ আগার ওয়াল আরও বলেন, চাল রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত ভারতের অভ্যন্তরীণ কৃষি ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা বেয়ে আনবে। কৃষকরা এতে লাভবান হবে। এই কৌশলগত পদক্ষেপটি কেবল রপ্তানিকারকদের আয়ই বাড়াবে না বরং কৃষকদেরও ক্ষমতায়ন করবে। কৃষকরা ধান চাষে লাভের আশা দেখবেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক চালের বাজারেও এই সিদ্ধান্ত বিরাট অবদান রাখবে। 
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রপ্তানিকারকরা বাসমতি ছাড়া অন্য সব ধরনের চাল রপ্তানি করতে পারবেন। পাশাপাশি চাল রপ্তানির ওপর রপ্তানি শুল্কের হারও কমানো হয়েছে। সরকার সিদ্ধ চালের ওপর রপ্তানি শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করেছে।  
আরেক চাল রপ্তানিকারক হালদার গ্র“পের কেশব কেআর হালদার সরকারের এ পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন।
চাল রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার পর আন্তর্জাতিক বাজারে এর দাম বাড়তে শুরু করেছিল। সব ধরনের চালের দাম বেড়েছিল ১১ দশমিক ৭ শতাংশ যা গত ১১ বছরে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধির রেকর্ড।
সরকারি নোটিশে আরও বলা হয়েছে, সিদ্ধ চালের রপ্তানি শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে।
ভারত যে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারে, তার ইঙ্গিত আগেই দেওয়া হয়েছিল। গত আগস্ট মাসের শুরুতে ভারত সরকারের শীর্ষ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান নীতি আয়োগের সদস্য রমেশ চাঁদ বলেন, এবার ধানের আবাদ বেড়েছে, মজুতও আছে পর্যাপ্ত। চাল রপ্তানি হলেও ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।
এদিকে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা সত্তে¡ও বিভিন্ন দেশের অনুরোধে ভারত চাল রপ্তানি করেছে। এ বছর ভারত মালদ্বীপে চাল রপ্তানি করেছে এক লাখ ২৪ হাজার ২১৮ মেট্রিক টন, মরিশাসে রপ্তানি করেছে ১৪ হাজার মেট্রিক টন, মালাওয়েতে এক হাজার মেট্রিক টন, জিম্বাবুয়েতে এক হাজার মেট্রিক টন ও নামিবিয়ায় করেছে এক হাজার মেট্রিক টন।
গত বছর ভারতের চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও কানাডা। দেশগুলো ভারতের ওই সিদ্ধান্তকে অপ্রয়োজনীয় বাণিজ্য বাধা হিসেবে উলে­¬খ করে বলে, এতে চাহিদা আছে, এমন অঞ্চলে খাদ্যের প্রভাব বাধাগ্রস্ত হবে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডবি¬উটিও) কৃষি কমিটির এক সভায় জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, ইইউ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ বৈশ্বিক খাদ্য বাজারে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। তার কারণ, ভারত বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ; বিশ্বের ৪০ শতাংশ চাল রপ্তানি করে তারা। ভারত চাল রপ্তানি না করলে বিশ্ববাজারে প্রভাব পড়ে। খবর এনডিটিভি।

্রিন্ট

আরও সংবদ