খুলনা | শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১

খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অনিয়ম-দুর্নীতির নেপথ্যে অধ্যক্ষ!

এন আই রকি |
০১:৩৩ এ.এম | ০৩ অক্টোবর ২০২৪


খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে বিভিন্ন সরঞ্জাম চুরি, গাড়ি ও কম্পিউটারসহ নানান ক্রয়ে টেন্ডারে অনিয়ম, শিক্ষার্থীদের জন্য কেনা গাড়ি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার, ঠিকাদারদের নিকট সুবিধা নেওয়াসহ আ’লীগ সরকারের আমলে শেখ পরিবারের সাথে সুসম্পর্ক রেখে প্রতিষ্ঠানটিতে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন অধ্যক্ষ অনিমেশ পাল। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির নানান অনিয়ম ও দুর্নীতিতে অধ্যক্ষের সম্পৃক্তা এনে অভিযোগ করা হয়েছে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে। বিষয়টি নিয়ে খুব দ্রুতই তদন্ত শুরু হচ্ছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন।  
এদিকে গেল ৫ আগস্টের পর ভোল পাল্টাতে শুরু করেছেন অধ্যক্ষ অনিমেষ পাল।  স¤প্রতি ইনস্টিটিউট থেকে বিএনপি ও জামায়াতপন্থী যে সকল শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া শেষ করে রাজনীতিতে সক্রিয় তাদের সাথে তিনি তার অফিস কক্ষে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন। ২০১৮ সাল থেকে এখন অবধি তিনি প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। আ’লীগ সরকারের আমলে স্থানীয় কাউন্সিলর, সংসদ সদস্য এমনকি শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সোহেলের সাথে তার সখ্যতা ছিল বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। 
অনুসন্ধানে জানা যায়, ইনস্টিটিউটের উভ সপ থেকে গত ৯মে ভূগর্ভস্থের মূল সঞ্চালন লাইনের ক্যাবল চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে। অথচ পুরো প্রতিষ্ঠানটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। বিষয়টি হজম করতে না পেরে তড়িঘড়ি করে একটি তদন্ত কমিটি করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এছাড়া গত এপ্রিল মাসে স্থানীয় আ’লীগ নেতা ও কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম মুন্নার আস্থাভাজন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আদর কনস্ট্রাকশন ইনস্টিটিউটের ভিতরে নিলামের মালামালের টেন্ডারের কাজ পায়। এ সময় একটি ২৪ এবং ২৫ তারিখে অতিরিক্ত মালামালসহ গাড়ি বের হলেও সেটার রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা না পড়ার অভিযোগ রয়েছে। এর আগে চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি প্যারিয়াস পিএইচভি/জাপান (Parius PHV/Japan 2018)  এবং  আকিজ দুরন্ত (Akij Duranto) মোটরসাইকেলের টেন্ডার হয়েছিল। যার মধ্যে অধ্যক্ষ ৫৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা বিল প্রদান করেন। প্রাইভেটকারটির জন্য ৫৪ লাখ টাকা প্রদান করা হলেও বাজারে এই মডেলের দাম আরও কম পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় শিক্ষার্থীদের গাড়ির কাজ শেখানোর জন্য ক্রয় করা গাড়িটিও অধ্যক্ষ নিজেই ব্যবহার করেন। এছাড়া ইনস্টিটিউটে কাজ করতে আসা শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের ঠিকাদারের নিকট থেকে অধ্যক্ষ কমিশন নেন বলে অভিযোগ আছে। প্রতিষ্ঠানটিতে কম্পিউটার টেন্ডার নিয়েও নানান অভিযোগ রয়েছে। এর আগে অধ্যক্ষ অনিমেষ পাল পাশ্ববর্তী মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে চাকুরির করার সময় একটি নারী ঘঠিত কারণে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছিল। আরও জানা গেছে, তার বাড়ি বাগেরহাট জেলায় থাকার কারণেও শেখ পরিবারের সাথে সুসম্পর্ক ছিল। শুধু তাই নয় ঠিকাদারী কাজে ছাত্রলীগ ও আ’লীগ নেতারা ইজিপির সময়ে নানান সুবিধা নিয়েছেন। 
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ এসেছে। এটা তদন্ত করার পর বলা যাবে বিষয়টি সত্য কি না। খুব দ্রুতই তদন্ত শুরু হবে।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ অনিমেষ পাল বলেন, তার চুরির বিষয়ে তদন্ত করে কোন প্রমাণ মেলেনি। গাড়ির বিষয়ে তিনি বলেন, ডলার রেট বৃদ্ধিসহ আনুষাঙ্গিক কারণে মূল্য বেড়েছে। কম্পিউটারের বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেননি। ঠিকাদারদের নিকট থেকে তিনি কোন সুবিধা নেন না। শিক্ষার্থীদের গাড়ি ব্যবহারের বিষয়ে তিনি জানান, এটা মাঝে মধ্যে না চালালে ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যাবে। তবে শিক্ষার্থীদের কাজ শেখার জন্য এত দামি গাড়ি কেনার কারণের বিষয়েও তিনি কোন সদুত্তোর দেননি।

্রিন্ট

আরও সংবদ