খুলনা | শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১

নির্বাচনের পূর্বে টেকসই অর্থনীতির মতো টেকসই সংবিধান জরুরি

|
১২:১৬ এ.এম | ০৪ অক্টোবর ২০২৪


অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রের মেরামত ও সংস্কারের জন্য গঠিত ৬টি সংস্কার কমিশন বিপুল ভাবে বিরাট কর্মকান্ডের কাজ শুরু করেছে। এর ভেতর সংবিধান সংস্কারে মনে হয় সবচেয়ে বেশী মেধা খরচের প্রয়োজন হবে। এ কথা দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ৭১-এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রচিত সংবিধান জাতির আশা আকাক্সক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। বার বার সংবিধন নামক বইয়ের পাতা কাটা ছেঁড়া করা হয়েছে।  
আমরা জানি গণতন্ত্রের প্রসূতিগার বলা হয় গ্রেট বৃটেন বা ইংল্যান্ডকে। অথচ এ দেশে কোনো লিখিত সংবিধান নেই। অলিখিত কনভেনশন বা রাষ্ট্র সমাজের প্রচলিত ও প্রতিপালিত আচার নীতির আলোকে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। দিব্যি সে দেশ চলছে। সাংবিধানিক সংকট শব্দটাকে তারা যাদুঘরে পাঠিয়েছে। যতদূর জানা যায়, ১৭৮৯ সালে ইতিহাস খ্যাত ফরাসী বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পর রচিত ফরাসী সংবিধানে নাকি এখনো কোনো কালির আচড় পড়েনি। কতটা দূরদৃষ্টি সম্পন্ন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা এ সংবিধান রচনা করেছিলেন তা ভাবতে অবাক লাগে। তুলনা করব না। আমাদের দেশের প্রথম সংবিধান রচয়িতাদের মেধা, মনন ও দূরদৃষ্টি ফরাসী সংবিধান রচনাকারীদের সাথে তুলনা করলে অর্বাচিন ছাড়া কি বলা যায় জানিনা।
বস্তুত কোনো জাতির বিধান রচনা করার জন্য বিশ্বাস, প্রত্যয়, আচার-ধর্ম, মনস্তত্তে¡র খবর না জেনে লিখলে যা হয় আমাদের ক্ষেত্রে হয়েছে তাই। মূল কিতাবখানা থাকবে না সংযোজন বিয়োজন হবে এটা নিয়ে নানা কথা হচ্ছে। এ কারণে ছাত্র জনতার রক্তক্ষয়ী বিপ্লবের পর রাষ্ট্র সংস্কার খুব জরুরি বলে উচ্চারিত হওয়ার সবচেয়ে পবিত্র ও জনগণের শেষ আশা ভরসার জায়গা বিচার বিভাগের সংস্কার বিষয়টি জোরালোভাবে সামনে এসেছে। গত ১৬ বছরে  বিচার বিভাগ ন্যায় বিচার প্রদানে নজিরবিহীন ব্যর্থতার সংকটে পড়েছে।
স¤প্রতি সাবেক বিচারকদের ফোরাম বিচার বিভাগ সংস্কারে ১২ দফা পেশ করেছেন। ছাত্র জনতার মূল আন্দোলনের প্রতিপাদ্য বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে এবং অত্যাচারিত নিপীড়িত মানুষের আশ্রয়স্থল বিনির্মাণ। বিচার বিভাগ সংস্কারে বিচার বিভাগের মূল ভিত্তিতে মৌলিক পরিবর্তন আনা আবশ্যক। বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বর্তমান সরকার ছাত্র জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে ম্যান্ডেট পেয়েছে।
১৯৪৭ পরবর্তী ভারতে হাজারেরও বেশী সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে ধর্ম নিরপক্ষেতার আড়ালে। বাংলাদেশও এমন ধর্মসংকটে না পড়ে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা বৈষম্য বিরোধী মৌলিক চেতনার প্রতিবন্ধক হয়ে না দাঁড়ায়। গণতন্ত্রের মূল চেতনা আইনস্টাইনের কথায়-প্রত্যেক ব্যক্তি যথাযোগ্য সম্মান পাবে কিন্তু কেউ পূজিত হবে না।

্রিন্ট

আরও সংবদ