খুলনা | শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১

নির্বাচনের পূর্বে অর্থনীতিকে সচল করতে হবে

|
১২:৪৫ এ.এম | ০৯ অক্টোবর ২০২৪


বিগত সরকারের পতনের পর শিল্প কল কারখানা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম এখনো পুরোদমে চালু হয় নি। এ মুহূর্তে সরকারের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত নির্বাচনের পূর্বে অর্থনীতির চাকা পুরোপুরি সচল করা। সরকারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সতর্ক পদক্ষেপ নিতে হবে। নির্বাচন পরবর্তীকালে যদি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন আবার শুরু হয় তাহলে আন্দোলনের ফসল বিফলে যাবে। ভবিষ্যতের মধুর স্বপ্নে বিষয়টাকে ভুলে গেলে চলবে না। বলা হয় ‘‘লাইফ ইজ নট এ বেড অব রোজেজ’’। কথাটা শুধু ব্যক্তিক ক্ষেত্রে নয়  জাতীয় জীবনের ক্ষেত্রেও সমানভাবে সত্য। সরকার গতকাল ১ অক্টোবর থেকে সংস্কার কর্মসূচির বিশাল কর্মযজ্ঞে হাত দিয়েছে। যেকোনো কর্ম বা শ্রমের ফলাফল হবেই। তবে তা কত পরিমাণ হবে তা বিধাতাই জানেন। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের লক্ষ্য যেখানে বৈষম্য হ্রাস করা প্রকৃতপক্ষে তা না হলে এ আন্দোলন স্তব্ধ হবে না তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
স¤প্রতি আল-জাজিরা বাংলাদেশের কর্মস্থানের বিষয়টি উলে­খ করে বলেছে- বাংলাদেশের ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর ৪০ শতাংশ মানুষের কাজের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। ফলে গত দুই দশকে এদেশের অর্থনীতিতে উলে­খযোগ্য হারে প্রবৃদ্ধি হলেও বৈষম্য বেড়েছে অনেক বেশী। গত দেড় দশকের বাস্তবতায় কঠিন এ অনড় পরিস্থিতির উপায়ন্তর না দেখে তরুণ সমাজ এ জন্য দায়ী বিবেচনা করে অপরিবর্তনীয় ক্ষমতার কেন্দ্রীভূতকরণকে। পরবর্তীতে এ পুঞ্জীভূত অসন্তোষের বিস্ফোরণ ঘটে তরুণ জনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে।
শিক্ষিত তরুণ সমাজকে বলা হয় দেশের ভবিষ্যত। শিক্ষার্থীদের কাছে এই ভয় তাড়া করে শিক্ষা শেষে তারা দেশের সম্পদ হবে না বোঝা হবে তা নিশ্চিত নয়। তার উপর রয়েছে কোটা ব্যবস্থা। দেশের ১৭ কোটি মানুষের অর্ধেক বয়স ৩০ বছরের নীচে। এতদিন প্রতিবছর কর্ম বাজারে প্রবেশ করা সংখ্যাগত সুবিধা হিসেবে বিবেচিত হত। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান না হলে আমরা জনসংখ্যার বর্ধনগত এ সুবিধাতো পাবই না বরং তা বোঝাতে রূপান্তরিত হতে পারে। এ উপলব্ধি ছাত্র তরুণ সমাজকে বিস্ফোরণমুখী আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে পারি না। ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে এ আন্দোলন কোনো সরকারের বিরুদ্ধে নয়, ছিল জগদ্দল পাথরের মত চেপে থাকা অনড় দুর্ভাগ্যের বিরুদ্ধে, সরকার ছিল এখানে উপলক্ষ্য মাত্র।
যুক্তরাজ্যের এক গবেষণাপত্র জানিয়েছে বাংলাদেশের ৪৭ শতাংশ স্নাতকই বেকার। উন্নয়নশীল একটা দেশের অর্থনীতির জন্য এটা হুমকি স্বরূপ। এটা সত্যি লজ্জার কথা। গত দেড় দশকে দেশের অর্থনীতিরতে যে উচ্চ প্রবৃদ্ধির চিত্র দেখিয়েছে। বস্তুত এসএমই শিল্প পুনরুদ্ধার করতে না পারলে সবচেয়ে বড় সংস্কার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচনও কোনো সুফল বহন করতে পারবে না। তেমনি পারবে না তরুণ জনতার বুকের আগুন নেভাতে। আগের মত এ আগুন জ্বলতে থাকবে আর খুঁজে ফিরবে বিস্ফোরণের পথ।

্রিন্ট

আরও সংবদ