খুলনা | শনিবার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭ পৌষ ১৪৩১

পূজামন্ডপে ইসলামী গানের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি, সজল দত্তকে বহিষ্কার

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৪ এ.এম | ১২ অক্টোবর ২০২৪


চট্টগ্রাম নগরের জে এম সেন হলে পূজামন্ডপের অনুষ্ঠান মঞ্চে ইসলামী সংগীত পরিবেশনের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। এ ঘটনায় তাকে পরিষদ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি লায়ন আশীষ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক হিলে¬াল সেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
এর আগে মহানগর পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পূজামন্ডপে পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তের অনুরোধেই গান পরিবেশন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গান পরিবেশনকারী দু’জনকে আটক করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, এই অবাঞ্চিত ঘটনায় হিন্দু স¤প্রদায়ের মানুষ অত্যন্ত বেদনাহত হয়েছে। পূজা পরিষদ এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, পূজা উদযাপন পরিষদ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছে, শারদীয় দুর্গাপূজা যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয় সেজন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। স্বাভাবিকভাবে এই ধরণের ঘটনা সুন্দর প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে পারে। এ ব্যাপারে সরকার, সেনাবাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সমাজকে এক হয়ে কাজ করতে হবে এবং দুর্বৃত্তদের প্রতিহত করতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পূজা উদযাপন পরিষদ ইতোমধ্যে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে ব্যর্থতার অভিযোগে চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি দিয়েছে এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগে মহানগর কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তকে বহিষ্কার করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর জে এম সেন হলে পূজামন্ডপে সংগীত পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির কয়েকজন শিল্পী। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ছয়জনকে পূজামন্ডপের মঞ্চে দাঁড়িয়ে সংগীত পরিবেশন করতে দেখা যায়।
বাংলাদেশ পূজা উদযান পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক হিল¬ুর সেন উজ্জ্বল বলেন, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির ব্যানারে তারা এই গান পরিবেশন করেন। দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশনের কথা বলে তারা ইসলামিক সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মনে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। তাৎক্ষণিক সজল দত্তকে পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম-সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রশাসন বাদী হয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ফেসবুকে ভিডিওটি দেখার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। তাৎক্ষণিক সবার সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনি। সবাইকে আইনগত সহযোগিতার বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ওসি ফজলুল কাদের জানান, ঘটনার পরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আ জ ম ওবায়দুল­াহ বলেন, পূজা পরিষদের নেতারা একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে আমন্ত্রণ দিয়ে নিয়ে গেছে। সংগঠনটি জামায়াত বা শিবিরের কারও নয়। এগুলো তো স¤প্রীতির সংগীত। যদিও এ ধরণের সংগীত পূজামন্ডপে পরিবেশন না করলেও পারত সংগঠনটি।
এদিকে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামানও জানিয়েছেন, পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণেই তাদের একটি দল পূজামন্ডপে গান করতে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, পূজা উদযাপন পরিষদের সজল দত্ত প্রায় দশদিন ধরে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। আমাদের কয়েকজন সেই আহŸানে সাড়া দিয়ে সেখানে গিয়েছিল। আজ তিনি ফোন করে বলেন, আপনারা একটু আসেন। আপনাদের একটু ফ্লোর (সুযোগ) দেবো। কিছু দেশাত্মবোধাক গান গাইবেন।’ সে আমন্ত্রণে গিয়ে আমাদের দলটি দু’টি স¤প্রীতির গান করে। কিন্তু এটি নিয়ে একটি পক্ষ প্রচারণা চালাচ্ছে, ষড়যন্ত্র করতেই আমরা গান করতে গিয়েছি। আমরা জোরপূর্বক কিছুই করিনি। দাওয়াত পেয়েই গিয়েছিলাম।

্রিন্ট

আরও সংবদ