খুলনা | বুধবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৭ কার্তিক ১৪৩১

সিন্ডিকেট ভেঙে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনুন, প্রয়োজনে উপদেষ্টা বাড়ান : তারেক রহমান

খবর প্রতিবেদন |
০৭:২৩ পি.এম | ১৮ অক্টোবর ২০২৪


ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসে আছে। তাদের সেখানে বসিয়ে রেখে অন্তর্র্বতী সরকারের নেওয়া কোনো উদ্যোগই সফলতার মুখ দেখবে না বলে সতর্ক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এজন্য বাজার নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদের আকার বড় করা যেতে পারে বলেও মত দিয়েছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।  শুক্রবার বিকেলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী তথা রজতজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে জেডআরএফের ওভারসিজ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ডাঃ জুবাইদা রহমানও ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ কষ্টে আছে জানিয়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, স্বৈরাচারের দোসরদের বসিয়ে রেখে কোনো উপকার মিলবে না। মাফিয়াচক্র বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে। তবে মানুষ বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। মাফিয়াচক্রের কবল থেকে বঞ্চিতরা অধিকার চায়। শহিদের রক্তের দাগ এখনো শেষ হয়নি। অন্তর্র্বর্তী সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে। সরকারের কিছু সমন্বয়হীনতা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।
তারেক রহমান বলেন, বর্তমানে দেশে কৃষক-শ্রমিক-দিনমজুর এবং স্বল্প আয়ের মানুষ দুর্বিষহ পরিস্থিতির মুখোমুখি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যে দিশেহারা। জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও মানুষের আয় সেভাবে বাড়েনি। সরকারকে বলবো-জিনিসপত্রের দাম কমাতে পদক্ষেপ নিন। সিন্ডিকেট ভেঙে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনুন। প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ানো যেতে পারে।
অগ্রাধিকার নির্ধারণে ব্যর্থ হলে প্রত্যাশিত গণতন্ত্রে উত্তরণ হোঁচট খেতে পারে উল্লেখ করে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে গণমুখী হতে হবে। সংস্কার ধারাবাহিক ও চলমান প্রক্রিয়া। কখনো সময়সাপেক্ষ। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। জনগণের সঙ্গে সংস্কার কাজ করলে সেটি সহজ হয়।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, স্বৈরাচারের আমলে তাদের বিভিন্ন নেতা-কর্মী দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি-জায়গা, দোকান ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান দখল করেছিল। তারা সেগুলো পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়েছে। সেগুলো পুনরুদ্ধারে অন্তর্র্বর্তী সরকারের পক্ষে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। নাগরিকদের প্রতি রাষ্ট্রের যেমন দায়িত্ব তেমনি রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকদের দায়িত্ব রয়েছে। সেজন্য সবাইকে স্বেচ্ছাসেবীর মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। আসুন আমরা প্রতিশোধ-প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে প্রত্যেকে আমরা প্রত্যেকের তরে এই মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যাই। 
অনুষ্ঠানে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আজকে স্বাধীন দেশে আমরা আছি। ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার বিপ্লব হয়েছে। নতুন প্রজন্ম রাজনীতি বিমুখ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে ছাত্রজনতা কিন্তু মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন। তারাই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে লড়েছেন। আজকে তারাই রাজনীতিতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তবে তাদের দায়িত্ববোধ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বিচারের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা দেশকে ভালোবাসি।
মঈন খান বলেন, বিএনপি’র হাল ধরেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার আগে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর বেগম খালেদা জিয়া হাল ধরেছিলেন। তিনি নেতৃত্ব দিয়ে দলকে মানুষের কাছে নিয়ে যান। এই যে ত্যাগের ধারাবাহিকতা সেটি নতুন প্রজন্মকে মনে রাখা উচিত। জিয়াউর রহমান মাত্র চার বছরে দেশের যে পরিবর্তন এনেছিলেন পরর্বর্তী সময়ে ৪০ বছরেও অন্যরা আনতে পারেনি। আজকে পরিবেশের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু জিয়াউর রহমানই তো প্রথম খাল খনন কর্মসূচি করেছিলেন। এটিই তো পরিবেশ বান্ধব কর্মসূচি। তিনি নতুন পরিচয় দিয়েছেন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। যা একটি ফুলের বাগান। সেখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকেরা রয়েছেন। 
রজতজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডাঃ এজেডএম জাহিদ হোসেন, পররাষ্ট্রনীতি এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক অধ্যাপক এম শাহীদুজ্জামান, রাষ্ট্রদূত এস এম রাশেদ আহমেদসহ নিহত ও আহত পরিবারের কয়েকজন। 
এ সময় বিএনপি ও পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, সাইফুল আলম নীরব, গোলাম সারওয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, ড. মোঃ আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ডাঃ হারুন আল রশিদ, ডাঃ মোঃ আব্দুস সালাম, ডাঃ শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডাঃ শাহাদত হোসেন, ডাঃ মোঃ আনোয়ারুল হক, অধ্যাপক এস এম আব্দুল আওয়াল সোহাগ, ড. আব্দুল করিম, ড. আবুল হাসনাত মোঃ শামীম, সাংবাদিক আব্দুল হাই শিকদার, কামাল উদ্দিন সবুজ, আমিরুল ইসলাম কাগজী, আতিকুর রহমান রুমন, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, প্রকৌশলী আইয়ুব হোসেন মুকুল প্রমুখ। 
অনুষ্ঠানের শুরুতে অধ্যাপক ছবিরুল ইসলাম হাওলাদারের কোরআন তিলাওয়াতের পর অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রজতজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক ডাঃ সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী।

্রিন্ট

আরও সংবদ