খুলনা | বুধবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৭ কার্তিক ১৪৩১

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হোক

|
১২:৫৬ এ.এম | ২২ অক্টোবর ২০২৪


ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের ফসল নতুন অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও গত দুই মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ কি ফল দিল তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। বলা বাহুল্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষের মৌলিক চাহিদার প্রথমটিই হল খাদ্য। বিগত সরকারের আমলে অব্যাহত উচ্চ মূল্য গ্রাম ও শহরবাসী সব মানুষের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। স্বৈর সরকার পতনের পর মানুষের মনে আশার সঞ্চার হয়েছিল। দেশের সিংহভাগ নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষের মনে এ পরিবর্তন মুক্তির আলো দেখিয়েছিল। এখন এ প্রত্যাশিত সরকার যদি নিত্যপণ্যের দাম কমাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয় তবে সব সংস্কার ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ অবস্থা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক।
পরিবহন, বাজার ঘাট, সরকারি দফতর সব জায়গায় চাঁদাবাজ কমানো গেলেও এমনকি বিভিন্ন পর্যায়ে পণ্য আমদানি শুল্ক কমিয়ে আনা হলেও নিত্যপণ্যের মূল্যের লাগাম টানা কেন যাচ্ছে না তার প্রতিবিধান জরুরি। তাহলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার কি অপারগ হয়ে পড়েছে? বাজার বিশ্লেষকরা সমস্যার সমাধান করে সিন্ডিকেটের দোহাই ক্ষুধার্থ নিরন্ন মানুষের কোনো কাজে আসবে না।
সরকারি সংস্থা টিসিবি’র হিসেবে গত ৭ থেকে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে ১২টি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে সয়াবিন, পাম, রাইস ব্রান্ড ওয়েল, আলু, ছোলা, পেঁয়াজ, রসুন, জিরা, দারুচিনি, ধনে, গরুর মাংস ও ডিম। অভিযান শুরুর পর কিছু কিছু আড়ৎ ডিম বিক্রি বন্ধ রাখে। তেল, আলু, পেঁয়াজ, মাংসের দাম বেড়েছে। টিসিবি’র হিসেব মতে ৭টি পণ্যের দাম কিছু কিছু কমেছে।
গ্রীষ্ম ও শীতের মাঝামাঝি সময়ে সবজির দাম একুট বেশি থাকলেও এ বছর তা মাত্রাতিরিক্ত। ১৫ অক্টোবর সরকার কিছু দায় কমাতে রাজধানীর ২০টি পয়েন্টে ট্রাক সেলের মাধ্যমে কয়েকটি পণ্যের দাম কিছু কমিয়ে সরবরাহ করছে। কিন্তু শহরের এ সুবিধাপ্রাপ্ত মানুষ ১৭ কোটি মানুষের কত শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারদর স্থিতিশীল থাকলেও দেশের বাজারে চিনির দাম বেড়েছে। ধান চালের পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও চালের দাম উর্দ্ধমুখী। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, মাছ, মাংস, ডাল, চাল ছাড়া সব ধরণের শাক সবজি, তরিতরকারীর দাম উর্দ্ধমুখী। কিছুদিন আগেও শিক্ষার্থীরা বাজার নিয়ন্ত্রণে তদারকির কাজে রাস্তায় নেমেছিল এ সময় নিত্যপণ্যের দামও এত অস্বাভাবিক ছিল না। কিন্তু তারা মাঠ থেকে সরে গেলে রাতারাতি চিত্র পাল্টে গেল। গণ অভ্যুত্থানের পর চাঁদাবাজ চক্র ও বাজার সিন্ডিকেট গা ঢাকা দিলেও ভোল পাল্টে তারা আবার ফিরে এসেছে। ফলে নিত্যপণ্যের বাজার দর লাগামহীন হয়ে পড়েছে।
বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছে, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি সংস্থাগুলো গা ছাড়া ভাব নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিশেষ পদক্ষেপ এবং সমন্বিত পদক্ষেপ না থাকায় পাইকার, মধ্যস্বত্বভোগী ও বিক্রেতারা সবাই যার যার ইচ্ছামত জিনিসপত্রের দাম বাড়াচ্ছে। বিভিন্ন পণ্য মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। সমন্বিত তদারকির অভাবের এ তথ্য কেউ জানতে পারছে না। দেশের উৎপন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সব পর্যায়ে মনিটরিং থাকতে হবে যাতে কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়াতে না পারে। ক্যাব নেতারা বলছেন, অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা মূল্য উর্দ্ধমুখী রেখেছে। রোগ আবিস্কার শুধু নয়, প্রয়োজন পথ্য, দরকার কঠোর ব্যবস্থা।

্রিন্ট

আরও সংবদ