খুলনা | বুধবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৭ কার্তিক ১৪৩১

১০ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্র শিগগিরই

খবর প্রতিবেদন |
০১:২১ এ.এম | ২২ অক্টোবর ২০২৪


সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে শেষমেশ দরপত্র আহŸান করতে যাচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে দেশের ১০টি স্থানে ৫০ মেগাওয়াট করে ৫০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য দরপত্র আহŸান করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। বিদ্যুৎ জ্বালানি খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিগত সরকারের সময় ‘বিদ্যুৎ-জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বিশেষ বিধান ২০১০’-এর অধীনে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ দেওয়া হতো। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অতিরিক্ত দরে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিগত সরকারের গৃহীত এমন ৪০টি প্রকল্প বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, এখন থেকে দরপত্র ছাড়া কোনও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে না। উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পর পিডিবি দেশের ১০টি স্থানে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের দরপত্র আহŸানের উদ্যোগ নিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের নীতি এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের সা¤প্রতিক এক চিঠি থেকে জানা গেছে ‘পঞ্চগড়, ঈশ্বরদী, গোপালগঞ্জ, ভালুকা, কক্সবাজার, চকোরিয়া, পীরগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও নীলফামারীর জলঢাকার কাছাকাছি স্থানে খোলা দরপত্র আহŸানের মাধ্যমে প্রতিটি ৫০ (এসি) মেগাওয়াট  ক্ষমতাসম্পন্ন সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
ওই চিঠিতে আরও বলা হয়,  এসব সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রিড সাব-স্টেশনের নিকটবর্তী হওয়ায় বিদ্যুৎ সঞ্চালনে পিডিবির মতামত প্রয়োজন।
বিগত সরকারের সময় প্রতি ইউনিট ১৮ থেকে ১৯ সেন্টেও সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ দেওয়া হয়েছে। সেখানে ভারত এবং পাকিস্তানে এখন প্রতি ইউনিট সৌরবিদ্যুতের দাম তিন থেকে চার সেন্টের মধ্যে। বিগত সরকারের শেষ সময়ে এসেও সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের যে চুক্তি হয়েছে, সেখানে সাড়ে ৯ থেকে সাড়ে ১০ সেন্টে কাজ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু একই সময়ে প্রতিবেশী দেশগুলো অর্ধেক দামে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। তবে ওইসব দেশ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিশেষ কিছু সুবিধা দিচ্ছে। বাংলাদেশ সেই সুবিধা দেওয়ার চিন্তা এখনও করেনি।
উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, ভারত সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার আগে সরকারি ভাবে জমি অধিগ্রহণ করে তা উন্নয়ন করে দিচ্ছে। একই সঙ্গে গ্রিড সাব-স্টেশন পর্যন্ত সরকারি খরচে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করে দিচ্ছে। এতে ঠিকাদার কোম্পানি কেবল প্যানেল এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণ করেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। অপর দিকে বাংলাদেশ জমি অধিগ্রহণ এবং সঞ্চালন লাইন নির্মাণের দায়িত্বও উৎপাদনকারী কোম্পানির হাতে ছেড়ে দিয়েছে। এছাড়া ভারত দেশটিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থের উৎস জানানোর বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়েছে। ফলে সেখানে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ  তৈরি হয়েছে। এতে একদিকে কালো টাকা অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগছে, আবার সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচও কমে আসছে। বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন থেকে সরকারকে এসব পরামর্শ দিয়ে এলেও বিগত সরকার এ বিষয়ে কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র বলছে, বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারে সোলার প্যানেলের দাম উলে­খযোগ্য হারে কমে আসছে। এখন প্রতি ওয়াট প্যানেলের দাম পড়ছে মাত্র ৯ সেন্ট। বিগত সরকারের আমলে ১০ বছর আগে যা ছিল ২৫ থেকে ৩০ সেন্ট। প্যানেলের দাম কমে আসাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ ব্যয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। সঙ্গত কারণে এখন সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করাকে লাভজনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, একবার স্থাপন করলেই এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আর জ্বালানি কিনতে হয় না।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ