খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

শিক্ষা সংস্কারে জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে

|
১২:১৯ এ.এম | ২৩ অক্টোবর ২০২৪


বর্তমান সরকার দেশের সার্বিক সংকট ও সমস্যা মোকাবেলায় সংস্কার কমিশন গঠন এবং তার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। সংকটের সর্বগ্রাসীকতা বিবেচনায় কমিশনের ৪টি পরিধি বাড়িয়েছে। এক্ষেত্রে প্রায় ধ্বংশপ্রাপ্ত শিক্ষা ব্যবস্থাকে সু-ব্যবস্থিত ও টেকসই করতে শিক্ষা কমিশন গঠনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। বর্ধিত সংস্কার কমিশনে শিক্ষা সংস্কার কমিশন অগ্রাধিকার পাবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এতকালের শিক্ষা নীতি পরিকল্পনা ছিল শাসক গোষ্ঠীর চিন্তা চেতনাকে জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়ার প্রয়াস। প্রচলিত শিক্ষা নীতিতে দেশের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের গুরুত্ব দেয়া হয়নি। পাঠ্যক্রমে খেয়াল খুশীমত পরির্তন ও অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রায় ধ্বংসের দোরগোড়ায় নিয়ে গেছে।
৫ আগস্ট তরুণ ছাত্র জনতার গণজাগরণে কতৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটায় শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার ও পুনর্গঠনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেছে। শিক্ষানীতি ২০১০-এ মানবিকতা, অসা¤প্রদায়িকতা, যুক্তিবাদ ও দেশ প্রেমের আদর্শ কথা তুলে ধরলেও তা বাস্তবে কার্যকরী হয়নি। বরং এটি ছিল একটি সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সমন্বয়হীন একটা শিক্ষা ব্যবস্থা। ২০১২ সালের শিক্ষানীতি নৈতিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বটে তার সফলতার মুখ দেখেনি। ২০২১ সালের জাতীয় শিক্ষাক্রমে জাতিসত্ত¡ার সাথে সাংঘর্ষিক উপাদান থাকায় এ অদূরদর্শি শিক্ষানীতিও ব্যর্থ হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষানীতিকে জাতীর আশা আকাক্সক্ষা ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রণয়ন করতে হবে। দেশীয় সত্ত¡া ও মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়ে, কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠনে ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পন্ন একটা দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলাই হতে হবে জাতীয় শিক্ষানীতির লক্ষ্য  এবং উদ্দেশ্য।
সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় স¤প্রতি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ভেতরই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। মাত্র ৭টি পরীক্ষার পর আন্দোলনের মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণ স্থগিত করা হয়। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর সচিবালয়ে এক অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির মধ্যে পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর সমাপ্ত পরীক্ষাগুলোর ভিত্তিতে সাবজেক্ট ম্যাপিং পদ্ধতিতে ফলাফল ঘোষিত হয়। অনেক পরীক্ষার্থী আন্দোলনে শহীদ হয়েছে। তারপরও সরকার অটোপাশের দাবি মেনে না নেয়ার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে আমরা মনে করি। শিক্ষার ক্ষেত্রে আপোষনীতি শিক্ষার গুণগতমানকে পঙ্গু করে দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষানীতিতে ৬০ শতাংশ শিখন নির্ভর ও ৪০ শতাংশ গবেষণা নির্ভর হওয়া দরকার। কৃষি নির্ভর এ দেশে কৃষি শিক্ষা কার্যক্রমে স¤প্রসারণ ও গবেষণা কার্যক্রমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে। ইংরেজি, বাংলা, আরবি ও কম্পিউটার শিক্ষাসূচিতে বাধ্যতামূলক করলে মধ্যপ্রাচ্যে বিশাল জনশক্তি প্রেরণে সহায়ক হবে। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের স্বতন্ত্র ও উপযুক্ত বেতন স্কেল নিশ্চিত করতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ