খুলনা | বুধবার | ২৩ অক্টোবর ২০২৪ | ৭ কার্তিক ১৪৩১

সবজি ছাড়াই যশোর ছাড়লো কৃষিপণ্য পরিবহনে স্পেশাল ট্রেনটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর |
১২:২৮ এ.এম | ২৩ অক্টোবর ২০২৪


কৃষিপণ্য পরিবহনে স্পেশাল ট্রেনটি প্রথম দিনেই সবজি ছাড়াই যশোর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। যশোর সদরের কৃষকরা বলছেন, বিশেষ এই ট্রেনের কোনও খবর তারা জানেন না। আর রেল স্টেশন মাস্টারের দাবি, ব্যাপক প্রচারণা চালালেও আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। তবে, আগামীতে সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তারা।
নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী, নাকাল হয়ে পড়ছেন মধ্যবিত্ত শ্রেণি। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দেশের ১৫টি উৎপাদক অঞ্চল থেকে কৃষিপণ্য সংগ্রহ করে দেশব্যাপী সরবরাহ নিশ্চিতের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ।
এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন’। বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে যশোর স্টেশনে পৌঁছানোর কথা থাকলেও ৪০ বিলম্বে পৌঁছায়। তবে প্রথম দিনেই কৃষিপণ্য বা খাদ্যসামগ্রী বুকিং ছাড়াই যশোর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যায়।
সবজি পরিবহনে স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস চালুর বিষয়ে কথা হয় যশোর সদরের ছোট হৈবতপুর গ্রামের সবজি চাষি আব্দুল আলিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম ট্রেনের কথা। কবে থেকে চালু হবে বা হয়েছে, জানিনে।’ 
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ট্রেন মুন্সি মেহেরুল­¬াহ স্টেশনে থামলে আমাদের জন্যে ভালো হয়। এখান থেকে ট্রেনে পণ্য পরিবহন করতে পারলে আমাদের সুবিধা।’ 
জানতে চাইলে যশোর সদরের বারীনগর সাতমাইল হাটের আড়তদার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘সবজির জন্যে স্পেশাল ট্রেন চালুর বিষয়টি আপনার কাছেই শুনলাম। অবশ্য, আমাদের আড়ত থেকে সবজি পাঠানোর জন্যে ট্রাকই ভালো ও সুবিধাজনক। কৃষক তাদের উৎপাদিত পণ্য আমাদের আড়তে দিয়ে যান।  আর  ট্রাক একদম আড়তের সামনে দাঁড়িয়ে লোড দিতে পারে। এতে আমাদের সুবিধা। আর স্টেশনে যাওয়া আমাদের জন্যে কষ্টকর, যদিও ট্রেনে মাল পাঠাতে পারলে আমরা আর্থিকভাবে লাভবান হবো।’ 
এদিকে, যশোর রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করার পর মুন্সী মেহেরুল¬াহ স্টেশনে সবজি ট্রেন থামার কথা। কিন্তু সেখান থেকে স্থানীয় সাংবাদিক তারিক হাসান জানান, সেখানে কোনও সবজি বা ব্যবসায়ী কাউকেই দেখা যায়নি।
পরের স্টেশন ঝিনাইদহের বারবাজার। সাতমাইল বারবাজার এলাকার সবজি চাষি বা ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনের জন্যে এটি সুবিধাজনক।  এই স্টেশনের মাস্টার মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বারবাজার স্টেশন পার হয়েছে বিশেষ ট্রেনটি। এই স্টেশন থেকে কোনও সবজি ওঠেনি।’ মুন্সী মেহেরুল­¬াহ স্টেশন থেকে উঠেছে কিনা জানেন না তিনি। 
রেলস্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান বলেন, ‘যশোরের সবজি চাষি, প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার বিশেষ এ ট্রেন চলাচল করবে। এজন্য ব্যবসায়ী পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছে। পাশাপাশি কৃষি বিভাগকেও নতুন সার্ভিস সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু প্রথম দিন হিসেবে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। তবে আগামীতে সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী আমরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষক বা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি সবজি বা পণ্য ১ টাকা ৪০ পয়সা ভাড়ায় ঢাকায় নিতে পারবেন।’ সাশ্রয়ী ভাড়া হিসেবে ট্রেনকে ব্যবহারের জন্য তিনি কৃষক ও ব্যবসায়ীদের প্রতি আহŸান জানান।
সবজির বিশেষ ট্রেনের বিষয়ে কথা হয় যশোর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. সুশান্ত তলরদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সবজি পরিবহনের জন্যে বিশেষ ট্রেনের খবর আমরা জানি। স¤প্রতি যশোর সদরের আব্দুলপুর গ্রামের সবজি চাষিদের নিয়ে একটি ট্রেনিংয়ে এ বিষয়ে সঙ্গে কথা হয়েছিল। তারা বিষয়টি ইতিবাচক ভাবে নিয়েছেন। যেহেতু ট্রেনে পণ্য পাঠাতে খরচ কম, সে কারণে কৃষকরা আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন।’
এদিকে, ট্রেনের পরিচালক জুলহাস উদ্দিন জানান, খুলনা থেকে ৬৪০ কেজি পণ্য নিয়ে তারা ট্রেনটি ছেড়েছেন। যশোরে ১০ মিনিটের যাত্রাবিরতি ছিল। এখানে কোনও পণ্য পাওয়া যায়নি। তবে আগামীতে পণ্য আসবে বলে তিনি আশাবাদী।

্রিন্ট

আরও সংবদ