খুলনা | সোমবার | ০৭ জুলাই ২০২৫ | ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

বিদ্যুতের উন্নয়ন আর অগ্রগতি ধরে রাখা আমাদের নাগরিক কর্তব্য

|
১২:১৮ এ.এম | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি বিশেষভাবে উলে­খের দাবি রাখে। গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী একযোগে ৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন, যেগুলো ৭৭৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। বর্তমানে বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা ৪ কোটির ওপরে। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছিল তখন দেশের ৪৭ শতাংশ মানুষ ছিল বিদ্যুতের আওতায়। গত সাড়ে বারো বছরে এই হার বেড়ে ৯৯.৫ শতাংশে পৌঁছেছে। বলা যায় আজ শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার মধ্যে রয়েছে। তবে এ সত্তে¡ও বিদ্যুৎ যাওয়া ও নিরবচ্ছিন্ন না পাওয়ার সমস্যা এবং বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান উচ্চমূল্যের সঙ্কট এই অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করে রেখেছে। উৎপাদনের সর্বোচ্চ সুফল থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে।
তবে বর্তমান সরকার বসে নেই। কেননা বিদ্যুতের ব্যবহার বহুমুখী হচ্ছে এবং দেশে উৎপাদনমুখী অর্থনৈতিক কাজকর্মও বাড়ছে। ঢাকা মেট্রোরেল থেকে কৃষি সেচ ব্যবস্থার স¤প্রসারণ নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু থেকে কৃষিশিল্পের বিকাশ, ওষুধশিল্প থেকে যোগাযোগ খাত সর্বত্রই বিদ্যুতের ব্যবহার কেবল বাড়ছেই। ফলে বর্তমানে চাহিদার চেয়েও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও ভবিষ্যতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরকার মাতারবাড়ী, পায়রা, রামপাল, রূপপুরের মতো বড় বড় বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিপুল অর্থ ব্যয় করছে। আশা করা যায়, ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবহারে উন্নত বিশ্বের সমকক্ষতায় পৌঁছবে। তবে উৎপাদনের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে এবার মনোযোগ দিতে হবে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার দিকে। আমাদের দেশে সঞ্চালন লাইনের আমূল সংস্কার জরুরি, এ দেশে বিদ্যুতের সিস্টেম লস বোধহয় যে কোনো মানদন্ডে খুবই বেশি। এভাবে কেবল লাভের গুড় পিঁপড়ায় খাবে। আমাদের মনে হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতোই সঞ্চালন, বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যও মেগা প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন আজ সময়ের দাবি।
নতুন ৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে জোর দিয়ে বলেছেন, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাই যেন সতর্ক ও সাশ্রয়ী হন। নিজের দৃষ্টান্ত দিয়ে সবাইকে ব্যবহার শেষে বিদ্যুতের সুইচ অফ করার আহŸান জানান তিনি। এতে গ্রাহকও উপকৃত হবেন, কারণ তার বিদ্যুৎ বিল কম আসবে। কেবল ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে নয়, সরকারি ও অন্যান্য গণস্থাপনাতেও বিদ্যুৎ ব্যবহারে একই রকম সতর্কতা ও সাশ্রয়ী হওয়া জরুরি। সাধারণত আমাদের দেশের মানুষ সরকারি বা এজমালি সম্পদ রক্ষায় ও ব্যবহারে যতœবান নন। কিন্তু উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে তা সংরক্ষণ, সদ্ব্যবহার এবং যথাযথ পরিচর্যা একান্ত প্রয়োজনীয় কাজ। সেদিকে দায়িত্বপ্রাপ্তরা যেমন যতœশীল হবেন, তেমনি সুবিধাভোগীদেরও নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। এসব আমাদের নাগরিক কর্তব্য। দেশের উন্নয়ন সর্বসাধারণের অবদানেই সম্ভব হয়, এ কথা যেন আমরা না ভুলি।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ