খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নিরাপদ সড়ক যেন দিবস পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে

|
১২:২৩ এ.এম | ২৫ অক্টোবর ২০২৪


নিরাপদ সড়ক দিবস যতই ঢোল পিটিয়ে পালন করা হোক না কেন সড়ক এখনও যে হয়ে আছে মৃত্যু ফাঁদ। সড়ক দুর্ঘটনা যেন আমাদের জাতীয় জীবনে অদৃষ্টের পরিহাস হয়ে আছে। বিড়ম্বনার এ অক্টোপাস থেকে আমরা যেন বেরিয়ে আসতে পারছি না। এখন প্রতিদিন একটা আতঙ্ক নিয়ে সড়কে নামতে হয়। আপনজনের কাছে ফিরে যাবে কি না মনে জাগে শঙ্কা। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির মত দুর্ঘটনার লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। যদিও এ ক্ষেত্রে কোনো পূর্বাভাস কেউ দিতে পারে না যে এখানে কোনো সিন্ডিকেট আছে।
২২ তারিখ জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২৪ এর প্রতিপাদ্য বিষয়-ছাত্র জনতার অঙ্গীকার নিরাপদ সড়ক হোক সবার। আমরা জানি সড়কে কোনো ছাত্র ঝরলে জনতা ফুঁসে ওঠে। কর্তৃপক্ষও দাবি মেনে নেয়ার দেয় আশ্বাস। দেখা যায় পরের দিনই এ ভরসার নিপাত ঘটেছে। তাই পোষাকী দিবস পালনের মধ্যে আমরা কেউ ভরসা করতে পারছি না। আশার কথা হচ্ছে এ বছরের দিবস পালন গতানুগতিক হবে না। ৫ আগস্ট এর ছাত্র জনতার বিপ্লবী ¯প্রীড সব অচলায়তন ভাঙতে শুরু করেছে। যে ছাত্রশক্তি দেশের দুর্দশার কথা চিন্তা করে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করতে পারে সে শক্তি সংস্কার কর্মযজ্ঞেরও সহায়ক হবে, সন্দেহের সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে ২১ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর ট্রাফিক পক্ষের কার্যক্রমে ৩০০ শিক্ষার্থীকে ট্রাফিক কার্যক্রমে যথাযথ সম্মানিসহ যুক্ত করা হয়েছে। পরে এ সংখ্যা বাড়ানো হবে। ভুক্তভোগীরা জানে রাস্তায় গাড়িওয়ালাদের কি ঘুষ দিতে হয় ট্রাফিক পুলিশকে। নয়া নিযুক্তিতে আশা করা যায় এ ক্ষেত্রে ঘুষের নামে চাঁদাবাজী কমবে। ৫ আগস্টের পর দেশের প্রশাসন হীন অবস্থায় শিক্ষার্থীরা রাস্তায় যে দায়িত্ব স্বেচ্ছায় কাঁধে নিয়েছিল তারা যে নীতিদ্রষ্ট হয়ে মটর সাইকেল, প্রাইভেট, বাস ও ট্রাকের চালকের কাছ থেকে চাঁদা নেবেন তা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রতিপক্ষও বিশ্বাস করবে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২৩’ গ্লোবাল রোড সেফটি রিপোর্টের প্রতিবেদনে প্রকাশ সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ১০ লক্ষাধিক মানুষ মারা যায়। যা প্রতি মিনিটে ২ জন, প্রতি দিন ৩ হাজার ২০০ জনের বেশী। দুর্ঘটনার বেশিরভাগ ঘটে বাংলাদেশের মত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। দুর্ঘটনা কবলিত ১৮৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৬তম। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে বাংলাদেশে ২০২১ সালে সড়কের মরন ফাঁদে জীবনের ইতি ঘটেছে ৩১ হাজার ৫৭৮ জনের। 
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের রিপোর্ট মতে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে সড়কে প্রাণ ঝরেছে ৫৪৮৫ জনের। এর মধ্যে ২০৪১টির মটর সাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৯২৮ জন। পথচারী নিহত হয়েছে ২১২১ জন। দুর্ঘটনা অর্ধেক কমিয়ে আনার জাতিসংঘের পরিকল্পনায় বাংলাদেশ বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে। দুর্ঘটনার মূল কারণ : বেপরোয়া গাড়ি চালানো, অতিরিক্ত গতি, যাত্রী ও পণ্য বোঝাই, সিটবেল্ট না বাঁধা, যান্ত্রিক ত্র“টি, মাদক সেবন কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দুর্ঘটনার ৫টি কারণের একটি শিশুর আসন। অল্প বয়স, ট্রেনিং এর অভাব, হেলমেট প্রভৃতি বিধানকে কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ