খুলনা | সোমবার | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বিশ্ববাজারে পণ্যের দামের সাথে স্থানীয় বাজারে সংগতি নেই কেন?

|
১২:২১ এ.এম | ০৫ নভেম্বর ২০২৪


আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো পণ্যের দাম বাড়লে স্থানীয় বাজারে দ্রুত এর প্রভাব পড়ে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো পণ্যের দাম কমলে, স্থানীয় বাজারে এর প্রভাব পড়ে অনেক দেরিতে। আবার কোনো কোনো পণ্যের দাম বিশ্ববাজারে যে হারে কমে, দেশে সে হারে কমে না। আবার কখনো কখনো বিশ্ববাজারে কোনো পণ্যের দাম কমলেও স্থানীয় বাজারে সেই পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়। এ ধরণের প্রবণতা নতুন নয়। জানা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় সব ধরণের পণ্যের দাম নিম্নমুখী। চলতি বছরের বাকি সময়ে পণ্যের দাম আরও কমবে। আগামী ২ বছর কমার এ ধারা অব্যাহত থাকবে। 
আগামী বছরেই পণ্যের দাম আরও কমে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আমদানির দায় পরিশোধে ডলারের দামও কমেছে। বেশকিছু আমদানি পণ্যের শুল্ক কমানো হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম কমায় পণ্য পরিবহণে জাহাজ ভাড়াসহ অন্যান্য খাতেও পরিবহণ ব্যয় কমেছে। সব মিলে পণ্যের আমদানি ব্যয়ও কমে যাচ্ছে। এতে আমদানি নির্ভর পণ্যের দাম স্থানীয় বাজারে কমার কথা থাকলেও দাম কমেনি। উলটো কোনো কোনো পণ্যের দাম আরও বেড়েছে। ভোক্তার পকেট লুট করে ব্যবসায়ীরা নিজেদের পকেট ভারি করছেন। এতে ভোক্তার জীবিকা নির্বাহ করতে নাভিশ্বাস উঠেছে।
মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরণের পণ্যের দাম কমছে। জ্বালানি তেলের দাম কমে প্রতি ব্যারেল ৭৩ ডলারে আসবে। অন্যান্য পণ্যের দামও কমবে। এ ধারা ২০২৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। জানা যায়, ডিসেম্বরে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১ হাজার ১০৫ ডলার। আগস্টে দাম কমে সেপ্টেম্বরে আবার কিছুটা বেড়েছে। তবে সার্বিকভাবে এর দাম নিম্নমুখী। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশের বাজারে এর দাম ঊর্ধ্বমুখী। চালের চাহিদার বড় অংশই মেটানো হয় দেশীয় উৎপাদন থেকে; কিছু অংশ আমদানি করা হয়। তারপরও আন্তর্জাতিক বাজারে এর দাম বাড়লে দেশের বাজারেও বেড়ে যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে দেশে এর প্রভাব পড়ে না। এক মাসের ব্যবধানে সব ধরণের চালের দাম বেড়েছে।
স¤প্রতি অতিবৃষ্টি ও বন্যায় আমনের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাজেই আগামীতে চালের ঘাটতি মেটাতে যথাসময়ে চালের আমদানি নিশ্চিত করতে হবে। অতীতে আমরা লক্ষ্য করেছি, পণ্যের দাম কমাতে আমদানি শুল্ক কমানোসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া সত্তে¡ও বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। এর মূল কারণ সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা। গত বছর বেসরকারি আমদানিকারকদের চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হলেও কাক্সিক্ষত সময়ে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ চাল আমদানি করা হয়েছিল। বেসরকারি আমদানিকারকরা অতীতে নানা অজুহাতে চাল কম আমদানি করেছে। এবারও তারা চালাকির আশ্রয় নিতে পারে। ফাঁদ পেতে অতিরিক্ত মুনাফা লাভ যাদের স্বভাব, তাদের ওপর ভরসা করা যায় না। আবারও তারা যাতে কারসাজির সুযোগ না পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা রোধে সরকারকে কঠোর হতে হবে। বিভিন্ন পণ্যের শুল্কছাড়ের কারণে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। কাজেই এর সুফল যেন ভোক্তারা পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ