খুলনা | সোমবার | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

চলতি বছরে মৃত্যু সংখ্যা ৩১০, ডেঙ্গু কি প্রতিরোধহীন ?

|
১২:০৬ এ.এম | ০৬ নভেম্বর ২০২৪


ডেঙ্গু আতঙ্ক মানুষকে পেয়ে বসেছে। এ ক্ষুদ্র প্রাণির ভয়ে কোনো ঘরই এখন শঙ্কামুক্ত নয়। বাজারে মশারী বিক্রির সংখ্যা বাড়লেও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়লো কিনা নিশ্চিত নয়। আগে ডেঙ্গু রোগের আতঙ্ক ছিল অনেকটা রাজধানী কেন্দ্রিক। এইডস মশাবাহিত এই রোগ রাজধানীর সীমা ছাড়িয়ে গ্রাম-গঞ্জে নিজেদের জানান দিয়েছে কয়েক মাস পূর্বে। ডেঙ্গু মশার বিশেষ গুণ হচ্ছে তা বিস্তারের কোনো মাস ঋতু নেই। বারোমাসি এই মশা মানুষকে গ্রীষ্ণ, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত সব ঋতুতে সর্বোচ্চ সতর্ক করে রাখে। দিনে রাতে কখন কাকে আক্রান্ত করে কোন আদম সন্তান জানতে পারে না। ব্যক্তি মানুষ কেন সরকার ও তার অধিনস্ত সংস্থাগুলোর কার্যকর পদক্ষেপের ঘাটতির কারণে কেবল তটস্থ নয়, পড়ছে কঠিন সমালোচনার মুখে। প্রতি বছর প্রাণহানির সংখ্যা বাড়ছে। এ বছর মনে হয় মৃত্যুর হার বাড়ছে। তাহলে সত্যি কি ডেঙ্গু প্রতিরোধহীন হয়ে পড়ছে।
বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যেমন বাড়ছে সেই সাথে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। কেবল ঢাকা নয়,অন্যান্য জেলায়ও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে এখন ডেঙ্গু রোগীর উপচে পড়া ভীড়। চাপ সামলাতে পারছে না নার্স চিকিৎসকরা। সর্বশেষ প্রতিবেদনে প্রকাশ ডেঙ্গু আক্রান্ত হাসপাতালে রোগীর ৫৫ শতাংশ ঢাকার বাইরে। এ বছর  হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ১৬ জন। এ বছর ভর্তি রোগীর মধ্যে ৩৫ হাজার ৭০১ জন ঢাকার বাইরের ঢাকার উত্তর-দক্ষিণ সিটিতে ভর্তির সংখ্যা ২৬ হাজার ২৬৪ জন। দেখা গেছে বর্ষা মৌসুমের শেষে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। শুধু অক্টোবরেই ৩০ হাজার ৮৭৯ জন ভর্তি হয়েছে। যা সারা বছরের মোট ভর্তি রোগীর অর্ধেক। এ অক্টোবরে ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছে ১৩৪ জন, যা বছরের মোট মৃত্যুর ৪ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু সংক্রান্ত তথ্য রাখছে ২০০০ সাল থেকে। ২০২৩ সালে এ রোগে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। এ সময়কালেই চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীসহ মৃত্যু ঘটেছিল ৩০০ জনের। ২০২০ সালে করোনা কালে ডেঙ্গু সংক্রমণ সংখ্যা তেমন দেখা যায়নি। কিন্তু ২০২১এ আক্রান্ত হয় ২৮ হাজার ৪২৯ জন। এ বছর মৃত্যুর সংখ্যা ১০৫ জন্য। ২০২২ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ৬২ হাজার ৩৮২ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ২৮১ জন।
প্রতি বছরই মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে কীট তত্ত¡বীদও বলেছেন প্রতিবারই আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে তিনটি ব্যবস্থার কথা বলেছেন এটা হতে পারে সর্বশেষ দাওয়াই। (১) রোগী অবস্থিত জায়গার ২০০ মিটারের মধ্যে ক্রাশ কর্মসূচি বা উড়ান্ত এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করতে হবে। (২) সারা ঢাকাতে লার্ভা নিয়ন্ত্রণে জোর দিতে হবে। (৩) এডিস মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস করতে হবে। এটা করতে না পারলে সামনের দিনগুলোর পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ