খুলনা | সোমবার | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

পুলিশ বাহিনী হতে হবে দক্ষ নিরপেক্ষ ও রাজনীতি মুক্ত

|
১২:০০ এ.এম | ০৮ নভেম্বর ২০২৪


দেশের আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক করতে পুলিশ বাহিনীর কার্যকারীতার বিকল্প নেই। দক্ষ ও নিরপেক্ষ পুলিশ বাহিনী গড়তে সংস্কার কমিশন যে কাজ শুরু করেছে এতে জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। পুলিশ সংস্কার কমিশনের কাছে দেশের অনেক বেশি প্রত্যাশা। ৫ আগস্টের পর দেশের পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার জন্য পুলিশ বাহিনীর অকার্যকারীতা কতটা দায়ী তা দেশবাসী দেখেছে। ১৮৬১ সালের ঔপনিবেশিক পুলিশ আইনের অনেক কিছুই পরিবর্তন করা হয়নি। তখন বৃটিশ রাজের রাজত্ব টিকিয়ে রাখতে পুলিশকে ব্যবহার করা হতো। ন্যায়-অন্যায়, মানবতা, মনুষ্যত্ব ছিল গৌণ। যার ধারাবাহিকতা ৫ আগস্টের পূর্ব পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। একটা স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে কলোনিয়াল আইন থাকতে পারে না। পুলিশ বাহিনীর পুনর্গঠন ও সংস্কার এখন সময়ের দাবি।
গণ আন্দোলনের ৩ মাস হতে হলেও পুলিশকে নিয়ো আলোচনা-সমালোচনা শেষ হয় নি। সত্যি কথা বলতে কি আন্দোলনের সময় অতিরিক্ত বল প্রয়োগের অভিযোগ গোটা বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে পুলিশকে ছাত্র-জনতার মুখোমুখি দাঁড় করানোর ফলে পুলিশ বাহিনীকে পাল্টে ফেলতে গঠন করা হয়েছে ৯ সদস্যের পুলিশ সংস্কার কমিশন। কমিশনের সদস্যরা পুলিশ বাহিনীর শীর্ষ সদস্যদের সাথে বৈঠক করেছে। কেমন পুলিশ চাই এমন ধারণা মাথায় রেখে জনমত জরিপের কাজও চলছে। একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধিসহ এই কমিশন গণমুখী, দক্ষ ও জবাবদিহিতামূলক, রাজনৈতিক নিরপেক্ষ পুলিশ বাহিনী গড়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ৯০ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে।
অপরাধীদের সাথে পুলিশের সম্পর্ক, সরকারের নিয়ন্ত্রণে থেকে তাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া, অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ, নির্যাতনের ঘটনা অনেক দিন থেকে চলমান থাকায় সাধারণ জনগণ পুলিশের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল। বস্তুত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। মাঝপথে সংস্কার কর্মসূচি থেমে যাওয়ার কারণ এখনো অজ্ঞাত।
সংস্কারের পর কেমন পুলিশ বাহিনী হতে বা নিয়ে জনমনে অনেক কৌতূহল আছে। খোদ পুলিশ বাহিনী মধ্যেও অনেক অভিযোগ আক্ষেপ প্রকাশ পেয়েছে। পুলিশের নিম্নস্তরের কর্মীদের সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতার কথা উঠেছে। আর উপরিস্তরের কর্তা ব্যক্তিদের প্রলোভের জাল যা অতিক্রম করা কঠিন ইত্যাদি বাস্তবতার পরীক্ষা-নীরিক্ষা ও সংস্কারের প্রশ্নে বিবেচনায় করা হচ্ছে। নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলী ব্যবস্থারও প্রচলিত নিয়ম পরিবর্তনের কথা বিবেচিত হচ্ছে।
‘কেমন পুলিশ চাই’ ওয়েব সাইটে জনমতের মূল্যায়ন ও মতামত প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রেখে সংস্কার কর্মযজ্ঞে ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। একটা গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যবিরোধী সমাজ বিনির্মানে গণ মানুষের  আকাক্সক্ষাকে প্রাধান্য দেয়ার এমন সুযোগ কেবল ৫ আগস্টের বিপ্লবের ফলেই সম্ভব হয়েছে। গত সরকারের আমলে গত দেড় যুগ পুলিশের নিয়োগ, পদায়ন, বদলী, পুরস্কার ও শান্তির ক্ষেত্রে অর্ধেক অর্থ লেনদেন পুলিশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্বকে ধ্বংস করা হয়েছে।
সংস্কারে দরকার প্রথমে পুুলিশ এ্যাক্ট পরিবর্তন, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের নিরপেক্ষ কমিশন দ্বারা তদন্ত করা, সর্বোপরি নতুন নিয়োগকে নিরপেক্ষ ও রাজনীতি মুক্ত রাখতে হবে। কেমন পুলিশ হওয়া চাই : এ প্রশ্নের উত্তর হবে পুলিশ হবে জনবান্ধব, জনগণের সেবক বন্ধু।

্রিন্ট

আরও সংবদ