খুলনা | রবিবার | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

আদানিকে আরও ২ হাজার কোটি টাকা দিলো বাংলাদেশ

খবর প্রতিবেদন |
০৫:৩৬ পি.এম | ০৮ নভেম্বর ২০২৪


ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যে অবস্থিত গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে আদানি গ্র“পকে আরও ২ হাজার কোটি টাকার বেশি (১৭৩ মিলিয়ন ডলার) দিয়েছে বাংলাদেশ। বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিত সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস এই তথ্য জানিয়েছে। 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানি গ্র“প বিদ্যুতের বকেয়া হিসেবে বাংলাদেশের কাছে ৮৪৩ মিলিয়ন ডলার পায়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর নানা কারণে সেই বকেয়া পরিশোধে জটিলতা তৈরি হওয়ার পর কিছুদিন আগে, আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে এবং চলতি সপ্তাহে সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দেয়। 
এই অবস্থায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য আদানি পাওয়ারকে ১৭৩ মিলিয়ন ডলারের (২ হাজার ৬১ কোটি টাকার বেশি) একটি নতুন লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) জারি করেছে। এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছে, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের তরফ থেকে এটি আদানি পাওয়ারকে দেওয়া তৃতীয় এলসি। বাংলাদেশের কৃষি ব্যাংকের তরফ থেকে এই এলসি দেওয়া হয়েছে ভারতের আইসিআইসিআই ব্যাংককে। আগের এলসিগুলো বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ছিল না।  
ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় আদানি পাওয়ারের দু’টি ইউনিট রয়েছে। যেগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা ৮০০ মেগাওয়াট করে। এই দু’টি ইউনিটের পুরো বিদ্যুৎ অর্থাৎ ১৬০০ মেগাওয়াটই আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে রপ্তানি করে। আদানি পাওয়ার বাংলাদেশের বিদ্যুতের চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ করে। কোম্পানিটির কাছ থেকে ২৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনতে ২০১৫ সালে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে চুক্তি হয়েছিল।
অপর একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘এই এলসি ছাড়াও আদানি পাওয়ার বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে অতিরিক্ত ১৫-২০ মিলিয়ন ডলার অর্থ দাবি করেছে। বাংলাদেশে এই দাবি পূরণে হলে কোম্পানিটি গত সপ্তাহে বন্ধ করা ৮০০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটি নতুন করে আর চালু করবে না।’ আদানি পাওয়ারের কাছে জানতে চাওয়া হলে এই বিষয়ে তারা মন্তব্য করেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ খাতের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ নেওয়ায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড তুলনামূলক কম অর্থ প্রদান ছাড় করতে পারছে।’ অপর এক কর্মকর্তা বলেছেন, জুলাই-অক্টোবর মেয়াদে বাংলাদেশের কাছে আদানির বকেয়া পড়েছে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার। আর বাংলাদেশ এই বকেয়ার অর্ধেকেরও কম পরিশোধ করেছে।
চুক্তি অনুসারে, আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করায় ঢাকাকে প্রতি মাসে ৯৫ থেকে ৯৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু গত আগস্টে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যায়। অবশ্য রিজার্ভ কমার সূত্রপাত হয়েছিল শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই। ফলে বাংলাদেশ আমদানি করা বিদ্যুৎ ও তেলের অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। সংকট কাটাতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বর্তমান ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ ছাড়াও অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ