খুলনা | সোমবার | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

রপ্তানি আয় অব্যাহত থাকলে জাতীয় অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে

|
১২:০৩ এ.এম | ১০ নভেম্বর ২০২৪


জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর তথ্য মতে আমাদের জাতীয় আয়ের প্রধান উৎস রপ্তানি আয় ক্রমশ বাড়ছে। ৫ আগস্টের পর দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি রপ্তানি মন্থর হয়ে পড়েছিল। নানাবিধ প্রতিকূলতার মধ্যে হালে রপ্তানি আয় ছন্দে ফিরবে বলে মনে হচ্ছে। আগস্টের শুরুতেই বিগত সরকারের পতনের পর শীর্ষ রপ্তানি খাত পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ শুরু হয়। গাজিপুর এবং আশুলিয়ার বেশ কিছু কারখানায় ব্যাপক আকারে শ্রমিক বিক্ষোভ এমন কি ভাঙচুরের ঘটনাই ঘটে। কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করলে ১৯ জুলাই কারফিউ জারি করে আওয়ামী লীগ সরকার। তখন থেকে রপ্তানিতে ছন্দপতন শুরু হয়। উৎপাদনের পাশাপাশি রপ্তানি হতে থাকে বাঁধাগ্রস্ত। ৫ আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে পুনরায় কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হয়। এরপর এসে পড়ে পূর্বাঞ্চলে চট্টগ্রামসহ কয়েক জেলায় বন্যার কারণে ঢাকা সহাসড়ক বেশ কয়েক দিন বন্ধ থাকলে পণ্য পরিবহনে বাঁধাগ্রস্ত হয়। এরপরে আসে আরেক বিপত্তি। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলে আগস্টের শেষে সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন দাবিতে শুরু হয় শ্রমিক বিক্ষোভ। গত মাসে এই বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করে। আশুলিয়ার কারখানাগুলোতে ১২ দিন পর্যন্ত উৎপাদন ব্যাহত হয়। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত হয়েছে তা বলা যায় না।
পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমই এর বক্তব্য হচ্ছে: রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকের একটা বড় অংশ আশুলিয়ার কারখানায় উৎপাদন হয়। গত মাসে শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। গ্যাস সংকটের কারণে বিভিন্ন অঞ্চলের বস্ত্র কারখানা বিপন্ন। ব্যাংকিং জটিলতায় বাড়ছে অনেক। ফলে গত মাসে রপ্তানি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। সংগঠনটির আরও বক্তব্য হলো-নতুন ক্রয়াদেশ আসছে। কিন্তু উৎপাদন খরচের চেয়ে পোশাকের মূল্য কম হওয়ায় সব ক্রয়াদেশ নিতে পারছে না।
জাতীয় অর্থনীতিতে বৈদেশিক বাণিজ্য মূল চালিকাশক্তি। যদিও ব্যর্থতার কোনো অজুহাত থাকতে পারেনা। তবুও বলতে হয় বিগত সরকারের একমুখি পররাষ্ট্র নীতির কারণে আমাদের বৈদেশিক আয় অনেকটা পিছিয়ে পড়ে। বৈদেশিক শ্রম বাজারও আসে সংকুচিত হয়ে। ফলে রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস মুখ থুবড়ে পড়ে।
আমাদের কথা হচ্ছে আগস্ট বিপ্লবের পর অবস্থার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তথ্যানুযায়ী গত সেপ্টেম্বরে ৩৮৬ কোটি ডলার পণ্য রপ্তানি হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে তার পরিমাণ ছিল ৩৩২ কোটি ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় এ বছর সেপ্টেম্বরে রপ্তানি বেড়েছে ৫৪ কোটি ডলার। এনবিআরের তথ্যসূত্রে, গত জুলাই এ ৩৮২ ও আগস্টে ৪০৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থ বছরে প্রথম তিন মাসে (জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে) ১ হাজার ১৭৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। এ রপ্তানি গত বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ বেশি। বস্তুত রপ্তানি আয় বেড়ে চলেছে। যেকোনো প্রতিকূলতা অতিক্রম করে ছন্দে ফিরে আসার এ ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রাখতে পারলে আমাদের জাতীয় অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ