খুলনা | সোমবার | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

জলবায়ু পরিবর্তন : থার্মোহ্যালাইন সার্কুলেশন

বাহলুল আলম |
০১:২৯ এ.এম | ১৬ নভেম্বর ২০২৪


জলবায়ুর চেনাজানা ধরণ বদলে যাওয়াকেই বলা হচ্ছে আজকের জলবায়ু পরিবর্তন। এই পরিবর্তন দু’ভাবে হয়ে থাকে (১) প্রাকৃতিক ভাবে, এবং (২) মনুষ্য সৃষ্ট। ঐতিহাসিক ভাবে জলবায়ু পরিবর্তন (প্রাকৃতিক ভাবে) হলো একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া যেখানে তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, বায়ু এবং অন্যান্য উপাদান কয়েক দশক বা তার বেশি সময় ধরে ধীরে-ধীরে সহনশীলতার মধ্য দিয়ে পরিবর্তিত হয়। ৮ হাজার বছর পূর্বের সময় থেকে শিল্প-বিপ্লবের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে তাপমাত্রা মোটামুটি স্থির ছিলো। এ-সময়ের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা ৫.৬ থেকে ৮.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বৃদ্ধি পেয়েছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রন্টিয়স এর মতে ২শ’ বছর পূর্ব পর্যন্ত প্রতি শতাব্দীতে গড় তাপমাত্রা ০.০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বৃদ্ধি পেয়েছিলো যা জীব-বৈচিত্রের জন্য সহনশীলতার মধ্যে ছিলো। পাশাপাশি মনুষ্য সৃষ্ট কারনে আজকের পৃথিবীতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান চালিকা শক্তি অনিয়ন্ত্রিত জীবাশ্ব জ্বালানির (প্রধানত-তেল, গ্যাস, কয়লা, এলএনজি) ব্যবহার বায়ু মন্ডলে তথা গ্রীন হাউজে কার্বন-ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন, মিথেনসহ নানা ধরনের ক্ষতিকারক গ্যাস বৃদ্ধি, ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, মেরু অঞ্চলের বরফ বা আইচ ক্যাপ-হিমবাহ গলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি লবণাক্ততার প্রসার (বাংলাদেশ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনিস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের ফলে বিগত ৩৬ বছরে দেশে লবণাক্ত জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২ লাখ ২ হাজার দশমিক ৮১ হেক্টরে)।
ঝড় বন্যা জলাবদ্ধতা সাইক্লোন খরা তাপদাহ দাবানল টর্নেডো নিম্নচাপ ভূমিকম্প অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টি সর্বোপরি জলবায়ু পরিবর্তনের-এর নেতৃত্ব দিচ্ছে। জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন; এভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবী অর্ধেক জীববৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে, যা ইতোমধ্যে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
প্রাণীজগতের ভবিষ্যত বিবর্তনের ইতিহাস নিজেদের অবৈজ্ঞানিক ও অনিয়ন্ত্রিত মস্তিষ্কের চিন্তা দ্বারা লিখে দিচ্ছে। ফলে মানুষের জীবন-জীবিকার উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে, সুপেয় ও মিষ্টি পানির সংকট তীব্রতর হচ্ছে। আহত ও নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, ঘরবাড়িসহ অবকাঠামো-গাছপালা-ফসল ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে, দারিদ্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে, স্থানাস্তরিত হচ্ছে উপকূলের বাসিন্দারা, মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে, বিশেষ করে নারী-শিশু-প্রতিবন্ধীরা অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বাল্যবিবাহ-বহুবিবাহ, শিশুমৃত্য, ডিভোর্স এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রয়েছে বজ্রপাতের প্রকোপ এবং কালবৈশাখীর ছোবল।
এছাড়াও অস্বাভাবিক তাপ ও শৈত্যপ্রবাহ তো আছেই। চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবার অবস্থাও করুন। এমপক্স, মাস্কিপক্ষ, করোনা, এক্স, হাম-রুবেলা, ডেঙ্গুসহ নতুন-নতুন রোগের আবির্ভাবও বিকশিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে; জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের তিন-চতুর্থাংশ বা ১৩ কোটির বেশি মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক নিচে নেমে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে শস্যের গুণাগুণ ও উৎপাদনেও পরিবর্তন আসবে। বর্তমান চাষযোগ্য এলাকায় উৎপাদন হ্রাস পাবে। পানির স্বল্পতা বৃদ্ধি পাবে, হ্রাস পাবে মাটির উর্বরতা। একই সঙ্গে নতুন নতুন রোগবালাই দেখা দিতে পারে। ফলে কৃষিতে কীটনাশক ও সারের প্রয়োগ বৃদ্ধি পাবে। কৃষি জমিতে সেচের ব্যাপকতা বাড়বে, বাড়বে ভূমিক্ষয়। ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ম্যাপলক্র্যাফটের তালিকা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম।
এবার আসা যাক অন্য কথায়; জলবায়ু ব্যবস্থার অতিরিক্ত তাপের বেশির ভাগটাই সমুদ্র শোষণ করে নেওয়ায় সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া, বায়ুমণ্ডলে অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইডের একটি বড় অংশ সমুদ্র গ্রহণ করে। যার ফলে সমুদ্রের পানির পিএইচ মাত্রা কমে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের হিসেব মতে, মানুষের সৃষ্ট মোট কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের প্রায় ২৫% সমুদ্র শোষণ করে নেয় । মহাসাগরের পানি সৌরশক্তি বেশ দক্ষতার সাথে শোষণ করে। বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসগুলির তুলনায় এদের তাপধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি। সমুদ্রের পানি মূলত মিঠা পানি এবং লবণের সমন্বয়ে তৈরি। সমুদ্রের পানিতে লবণের ঘনত্বকে লবণাক্ততা বলা হয়। যেহেতু লবণ বাষ্পীভূত হয় না, তাই মিঠা পানির বৃষ্টিপাত ও বাষ্পীভবন লবণাক্ততাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। তাই জলচক্রের পরিবর্তনগুলো পৃষ্ঠতলের লবণাক্ততার পরিমাপে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়।
সমগ্র পৃথিবীতে আজ আমরা যে পানি দেখি তার শতকরা ৯৭ ভাগই লবণাক্ত আর অবশিষ্ট ৩ ভাগ যে মিষ্টি পানি তার ৭০ ভাগই উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর বরফের মধ্যে বন্দী। সমূদ্রের বরফগুলো গলে গেলে সমূদ্রের উচ্চতা হয়তো খুব একটা বৃদ্ধি পাবেনা কারণ তারা ইতোমধ্যে একটি নির্দিষ্ট জায়গা দখল করে আছে। কিন্তু এন্টার্কটিকা অথবা গ্রীনল্যান্ডের মেরু অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠের উপরের বরফগুলো গলে গেলে তার ফলাফল হবে মারাত্মক ভয়াভহ! সমূদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাবে অন্তত ৭০ মিটার বা ২৩০ (দুইশ’ ত্রিশ) ফুট যা প্রায় ২০-২২ তালা দালানের সমান উচ্চতা সম্পন্ন। প্রশ্ন হলো, সমূদ্র উপকূলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা সভ্যতাগুলো কোথায় মাইগ্রেট করবে ২৩০ ফুট পানির উচ্চতাকে অতিক্রম করে? কোথায় যাবে নিউইয়র্ক, ইস্তাম্বুল অথবা টোকিওর সভ্যতা? তারা কি মাইগ্রেসানের জন্য যথেষ্ট সময় পাবে? নিউইয়র্ক-এর মানুষরা কি বিবর্তিত হয়ে রাতারাতি নীল তিমিতে পরিণত হয়ে যাবে? কোথায় দেবে পৃথিবী তাদের স্থান?
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, সমুদ্রের উচ্চতা শুধু ১০ (দশ) মিটার বাড়লে ৭০-৮০ কোটি মানুষকে উপকূল এলাকা থেকে সরিয়ে নিতে হবে! ২৫ (পচিশ) মিটার বাড়লে সরাতে হবে শতকরা ২০ ভাগ? আর ৭০ মিটার বৃদ্ধি পেলে শুধু বাংলাদেশ নয়, মায়ামি, লন্ডন, নেদারল্যান্ডস, ডেনিস এ সকল এরিয়ার চিহ্নই থাকবেনা! ডুবে যাবে উত্তর চীনের অধিকাংশ শহর, অস্ট্রেলিয়ায় তৈরি হবে নতুন এক সাগর! ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি)-এর তথ্য অনুযায়ী, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে উপকূলের মানুষের ঘরবাড়ি ও জীবিকা বিপন্ন হওয়ার কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় নয় লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার ১৯টি জেলার ১২০ বর্গকিলোমিটার এলাকার ১২ থেকে ১৮ শতাংশ ডুবে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে আর্কটিক অঞ্চলের সমুদ্রের বরফ প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে। সা¤প্রতিক দশকগুলিতে এর আয়তন এবং পরিমাণে ব্যাপক হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে। এই অঞ্চলে এখন গ্রীষ্মে বরফের পরিমাণ যে হারে গলে যাচ্ছে, শীতে তা পুনরায় জমে উঠছে না। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনই আর্কটিকের বরফ হ্রাসের জন্য দায়ী। বর্তমান শতাব্দীর মধ্যেই গ্রীষ্মকালে আর্কটিক সমুদ্রের বরফ সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আফ্রিকার কিছু জায়গায় তাপমাত্রা এমন হারে বৃদ্ধি পাবে যে মানুষ এখানে টিকতেই পারবে না!
আর এছাড়া রয়েছে থার্মোহ্যালাইন সার্কুলেশন সিস্টেম পরিবর্তনের তীব্র প্রভাব! সমুদ্রে বরফ গলে সমুদ্রের লবনাক্ত পানিতে মিশে গেলে সমুদ্রের পানির ঘনত্ব কমে যাবে এবং কমে যাবে লবণাক্ততা। হিমবাহ গলার কারণে, মহাসাগরে মিঠা পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে থার্মোহ্যালাইন সার্কুলেশন প্যাটার্ন বিঘিœত হতে পারে এবং এভাবে মহাসাগরের লবণাক্ততা পরিবর্তিত হতে পারে। এই থার্মোহ্যালাইন সার্কুলেশনই মহাসাগরের গভীর থেকে ঠান্ডা, পুষ্টি সমৃদ্ধ পানিকে ওপরে তুলে আনার জন্য দায়ী। সমুদ্রের পানি মূলত মিঠা পানি এবং লবণের সমন্বয়ে তৈরি। যেহেতু লবণ বাষ্পীভূত হয় না, তাই মিঠা পানির বৃষ্টিপাত লবণাক্ততাকে ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত করে। এখন যেমন, শীতল জল ঘন লবণাক্ত জলের গভীরে ডুবে যায় তা আর ঘটবেনা, সম্পূর্ণ সমুদ্র পরিবর্তন হয়ে যাবে। সামুদ্রিক প্রাণীরা এই নিষ্ঠুর পরিবর্তনের সাথে নিজেদের অভিযোজন করতে পারবে কি? আমরা কি পারবো ক্রমবর্ধমানভাবে বৃদ্ধি পাওয়া সাইক্লোন, ঝড়, বন্যা ও খরা মোকাবিলা করতে?
জার্মানভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা জার্মানওয়াচ থেকে প্রকাশিত ‘বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক-২০২১ শীর্ষক’ প্রতিবেদন মতে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন সপ্তম। গত ২০ বছরে বাংলাদেশে ১৮৫টি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বড় দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। আর অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ৩৭২ কোটি ডলার। আমাদের জন্য কি থাকবে মাইগ্রেসানের সময়? আমরা এত দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে কিভাবে অভিযোজিত হবে? কিভাবে ঘটবে আমাদের বিবর্তন? সবকিছু বিবেচনা করলে দেখা যায়, এমন একটা সময় আসছে যখন আমরা সাইকো হয়েও টিকে থাকার সুযোগ পাবো না!
বিশ্বে ৮০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী জি-২০ ভুক্ত (আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, মেক্সিকো, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, ভারত, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) শিল্পোন্নত দেশগুলো। সেখানে বাংলাদেশ দায়ী মাত্র দশমিক ৪৭ শতাংশ মাত্র। অথচ জলবায়ু পরিবর্তন জনিত বৈশ্বিক ঝুঁকির সুচকে আমরা ৭ম অবস্থানে।
তাহলে কি আমরা এই উপকূলীয় এলাকার জনগোষ্ঠী হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকবো!!! নিশ্চয়ই না, আসুন, সবার মধ্যে এখন থেকেই জনসচেতনতা তৈরি করি। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (National Adaptation Plan – NAP) গ্রহণ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এই জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (NAP-National Adaptation Plan) চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে, যার আওতায় আমাদের অভিযোজন খাতে ২০৫০ সালের মধ্যে ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ডের জন্য এভিডেন্স সহ দাবি তুলতে হবে। ভবিষ্যৎ বাসযোগ্য পৃথিবী বিনির্মানের জন্য সময় হয়েছে প্রাণ-প্রকৃতির পাশে দাঁড়ানোর। 
লেখক : জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে কাজ করা একজন উপকূলীয় বাসিন্দা। 

্রিন্ট

আরও সংবদ