খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

একদিনে সর্বোচ্চ ১৩৮৯ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, প্রাণ গেল ৮ জনের

খবর ডেস্ক |
১২:৪৯ এ.এম | ১৮ নভেম্বর ২০২৪


একদিনে (শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে এ সময়ে ভাইরাসটি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৩৮৯ জন, যা এই বছরের এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু শনাক্ত। এর আগে গত ৫ নভেম্বর ১৩৭০ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছিলে।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১২৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৭২ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৪১২, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৯, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৪৬, খুলনা বিভাগে ১৫৯ জন রয়েছেন। এছাড়াও রাজশাহী বিভাগে ৯৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৪ জন, রংপুর বিভাগে ১৯ জন এবং সিলেট বিভাগে ৯ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে গত একদিনে সারা দেশে ১৫১৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭৫ হাজার ৫৩৪ জন।
নভেম্বরে সাধারণত এডিস মশাবাহিত এ রোগের প্রকোপ কমে আসে; কিন্তু এবার এর ব্যতিক্রম। চলতি মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার এই হার অব্যাহত থাকলে হাসপাতালে রোগী ভর্তি ও মৃত্যু বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
জনস্বাস্থ্যবিদ ডাঃ মুশতাক হোসেন বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন-এ দু’টি কাজের কোনোটিতেই কোনো উন্নতির লক্ষণ দেখছি না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে। স্থানীয় সরকার তো এখন আর দৃশ্যমান নেই। মনে হয় সবাই হাত গুটিয়ে বসে আছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গত বছর। তখন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আর মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৪১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২০৮ জন নারী ও ২০৭ জন পুরুষ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সী ব্যক্তিরা। এ সংখ্যা ১২ হাজার ১৭৮। তবে ডেঙ্গুতে বেশি মৃত্যু হয়েছে ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সী ব্যক্তিদের। এই বয়সী ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে।
বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে কি করা দরকার এমন প্রশ্নের উত্তরে মুশতাক হোসেন বলেন, ‘খুব দ্রুত রোগীর সংখ্যা হয়তো কমানো যাবে না, কিন্তু মৃত্যু কামানো যেতে পারে। আর এর জন্য দরকার চিকিৎসা ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ। রোগী শনাক্ত এবং জটিল রোগীদের জন্য সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ এবং উন্নততর হাসপাতালে প্রেরণ এই ব্যবস্থাটা দ্রুত করতে হবে। তাহলে অন্তত মৃত্যুটা কমানো যেতে পারে। তবে এমন তৎপরতা আমি দেখছি না।’
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকার হাসপাতালগুলোয়, এ সংখ্যা ১৭ হাজার ৫৮। এরপরই আছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। সেখানে রোগীর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ৪৮৬। এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ১৮৩ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার হাসপাতালে। এরপর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ৬৯ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪১৫ জনের। এছাড়াও গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।

্রিন্ট

আরও সংবদ