খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

জিয়াউল আহসানকে ‘বসনিয়ার কসাই’ কারাদজিচের সঙ্গে তুলনা

খবর প্রতিবেদন |
০২:১০ পি.এম | ২০ নভেম্বর ২০২৪


ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানকে বসনিয়া-হার্জেগভনিয়ার ‘কসাই’ রাদোভান কারাদজিচের সঙ্গে তুলনা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

আজ বুধবার (২০ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুনানিতে জিয়াউল আহসানের কর্মকাণ্ডকে রাদোভান কারাদজিচের কাজের সঙ্গে তুলনা করেছেন বলেই শুনানি শেষে তাজুল ইসলাম জানান সাংবাদিকদের। তিনি বলেন, জিয়াউল আহসান বিভিন্ন সময় র‍্যাবের বিভিন্ন পদে ছিলেন, সর্বশেষ তিনি এনটিএমসির মহাপরিচালক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের গুম, গুমের পরে নিয়ে গিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন, হত্যার পরে লাশ ডিসপোজাল করা, এসব কালচারের জনক ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যারা বিরোধী দলে থেকে বিভিন্ন সময় কথা বলার চেষ্টা করেছে তাদের তিনি একের পর এক পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করেছেন, গুম করেছেন, বছরের পর বছর আটকে রেখেছেন। তাদের মধ্যে বহু মানুষ আজও ফিরে আসেনি।

‘জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে বিএনপি নেতা ইলিয়াস গুম’
তাজুল ইসলাম বলেন, জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বে বিএনপি নেতা ইলিয়াসকে গুম করে হত্যা করা হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ ছাড়াও নাম জানা-না জানা অনেক মানুষকে অপহরণের পর নির্যাতন করা হয়েছে। তার পৈশাচিকতা... ৯০-এর দশকে বসনিয়া-হার্জেগভনিয়ার সারফিয়ান বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল , যে ধরনের অত্যাচার করতো, তার সাথে আমরা তুলনা করেছি। ভলকানের কসাইয়ের মতো বাংলাদেশের কসাই হিসেবে এই জিয়াউল আহসান হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে, গুম নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

এদিকে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালকসহ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে তাদের ট্রাইব্যুনালের মামলায় কারাগারে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৯ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

এর আগে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় আট কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তার আগে প্রিজন ভ্যানে করে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

আট কর্মকর্তা হলেন— সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, মিরপুর ডিএমপির সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল হক এবং ঢাকা উত্তর ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।

গত ২৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে এই ৮ কর্মকর্তাকে হাজির করতে নির্দেশ দেন।

পুলিশের সাবেক ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে যারা গ্রেপ্তার রয়েছেন তাদের আনা হবে ট্রাইব্যুনালে।

্রিন্ট

আরও সংবদ