খুলনা | বৃহস্পতিবার | ০৮ মে ২০২৫ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

ইউপি চেয়ারম্যান গাজী হালিম হত্যা মামলায় ৭ম দফায় চার্জশিট, শুনানী ২৭ সেপ্টেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক |
১২:৫২ এ.এম | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

জেলা আ’লীগের প্রচার সম্পাদক ও দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চাঞ্চল্যকর গাজী আব্দুল হালিম হত্যা মামলায় ৩০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে সপ্তম দফা চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পরিদর্শক শেখ আবু বকর এ চার্জশিট দাখিল করেন। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চার্জশিট শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক শেখ আবু বকর বলেন, তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করলেও করোনাকালে আদালত বন্ধ থাকায় শুনানি পিছিয়ে যায়। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর চার্জশিটের শুনানী অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি পাঁচ বার এবং থানা পুলিশ একবার নিয়ে ছয়বার এ মামলার চার্জশিট দাখিল করে। কিন্তু বাদীপক্ষের নারাজী পিটিশনসহ বিভিন্ন কারণে আলোচিত এ মামলাটির তদন্ত ও চার্জশিট দফায় দফায় দাখিল করা হয়। 
এদিকে, আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সেনহাটি ইউনিয়নের নির্বাচনে নিহত আব্দুল হালিম গাজীর চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে কয়েকজনকে নিয়ে তার স্ত্রী ফারহানা হালিম নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এ কারনে নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সপ্তম দফায় আদালতে দাখিলকৃত চার্জশিটভুক্ত আসামীরা হচ্ছে দিঘলিয়া উপজেলার চন্দনীমহল গ্রামের গাজী সিরাজুল ইসলামের ছেলে গাজী মোঃ ইমরান হাসান ওরফে মনিরুল, উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের মৃত সোহরাব মোল­ার ছেলে মোল­া জুলকার নাইম ওরফে মারজান আহমেদ ওরফে মুন্না, নগরীর খালিশপুরস্থ কাশিপুর রাজধানী মোড় এলাকার মনোয়ার হোসেন মন্টু শেখের ছেলে মোঃ ইসতিয়াক হোসেন ওরফে ইস্তি, নগরীর দেয়ানা দক্ষিণপাড়ার মৃত আফতাব ঢালীর ছেলে মোঃ শাকিল হোসেন রানা, পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার জোলাগাতী গ্রামের হানিফ হাওলাদারের ছেলে জাহিদ হাওলাদার, নগরীর দৌলতপুর কেশবলাল রোড এলাকার আইয়ূব আলী হাওলাদারের ছেলে তাইজুল ইসলাম ওরফে রাজু, দেয়াড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক শেখের ছেলে মারুফ হোসেন শেখ, নগরীর খালিশপুর মুজগুন্নী উত্তর পাড়ার রুস্তম মলি­কের ছেলে সেলিম মলি­ক, চন্দনীমহল গ্রামের গাজী সিরাজুল ইসলামের ছেলে গাজী রেজাউল ইসলাম ওরফে বাবু গাজী ও গাজী এনামুল হাসান ওরফে মাসুম, আব্দুস সালাম গাজীর ছেলে নূরুল ইসলাম গাজী ওরফে নূরু গাজী, চন্দনীমহল গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান শেখের ছেলে শাহীন শেখ, চন্দনীমহল গ্রামের গাজী জাহিদুল ইসলামের ছেলে গাজী মোঃ ইমরান হোসেন, চন্দনীমহল গ্রামের হাসান গাজীর ছেলে গাজী মোঃ জাহিদুল ইসলাম, সেনহাটি পশ্চিমপাড়ার আব্দুল আউয়াল মোল­ার ছেলে মানিক মোল­া, চন্দনীমহল গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে আনিসুর রহমান, দেয়াড়া গ্রামের শাজাহান শেখের ছেলে মুরাদ ওরফে গালকাটা মুরাদ, চন্দনীমহল গাজীপাড়া এলাকার মোঃ আমজাদ সরদারের ছেলে মাসুদ সরদার, সেনহাটি গ্রামের বাকামিয়ার ছেলে মাসুদ, হাজীগ্রামের মৃত মোস্তফা মোল­ার ছেলে দিদার মোল­া, চন্দনীমহল গোরস্থানের মোড় এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে তরিকুল ইসলাম, স্টার জুটমিল ১নং গেট এলাকার মৃত সিরাজুল হকের ছেলে হুমায়ূন কবির, মোঃ হাসেন আলীর ছেলে শেখ মনিরুল ইসলাম, সেনহাটী গ্রামের সোহরাফের ছেলে মুরাদ, চন্দনীমহল গ্রামের মৃত আঃ মজিদ মলি­কের ছেলে আব্দুল রকিব মলি­ক, নগরীর খালিশপুর এলাকার হানিফের ছেলে মোঃ মনিরুল, চন্দনীমহল গ্রামের মৃত হাশেম গাজীর ছেলে আজগর গাজী ও দৌলতপুরের পাবলা এলাকার মৃত আজিজ শেখের ছেলে শহীদুল ইসলাম শাহীন, চন্দনিমহল গ্রামের রুস্তম আলী মোল­ার ছেলে মোল­া আকরাম হোসেন ওরফে আকরাম মোল­া এবং নগরীর দৌলতপুরস্থ পাবলা ক্রস রোড এলাকার আলতা ভিলা ছাত্রী নিবাসের শহীদুল ইসলাম শাহীনের ছেলে শাওনুল ইসলাম শাওন। অভিযোগপত্রে মোট ৭৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর সেনহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হালিম বিকেল ৩টায় উপজেলা পরিষদ থেকে নূর গাজীর মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে গোয়ালপাড়া নামক স্থানে সন্ত্রাসীরা তার ওপর গুলিবর্ষণ করে। আহত অবস্থায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন তাকে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১১ সালের ২ নভেম্বর রাত ২টার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ৩১ অক্টোবর হালিমের স্ত্রী ফারহানা হালিম তার স্বামীর ওপর হামলার ঘটনায় দিঘলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২৩ নভেম্বর তিনি ১৭ জনের নাম উলে­খ করে একটি সম্পূরক অভিযোগ দাখিল করেন। এছাড়াও ২০১২ সালের ২ জানুয়ারি আসামি আনিসুর রহমান ও অপর একজনের বিরুদ্ধে আদালতে দ্বিতীয় দফায় সম্পূরক এজাহার দাখিল করেন। এ মামলার আসামি শাকিল হোসেন রানা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে ইসতিয়াক হোসেন ওরফে ইস্তিও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। 
এ ব্যাপারে মামলার বাদী নিহত আব্দুল হালিম গাজীর স্ত্রী ফারহানা হালিম সময়ের খবরকে বলেন, “শুনেছি চার্জশিট দাখিল করছে। তবে আমাকে অফিসিয়ালি জানানো হয়নি। এখন তো একটু নির্বাচনী ব্যস্ততায় আছি, নির্বাচনের পর খোঁজ-খবর নেবো।”

্রিন্ট

আরও সংবদ