খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

৪২ রানে অলআউট, লজ্জার ইতিহাস শ্রীলঙ্কার

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
১২:৩৮ এ.এম | ২৯ নভেম্বর ২০২৪


ডারবানে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৯১ রানে অলআউট করে দেয়ার পর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট সমর্থকরা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছিলেন; কিন্তু তাদের কপালে কী দুর্ভোগ অপেক্ষা করছিলো, সেটা হয়তো মোটেও টের পায়নি খোদ লঙ্কান ক্রিকেটাররাও।
ডারবানের কিংসমিডে দ্বিতীয়দিন দক্ষিণ আফ্রিকাকে অলআউট করার পর ব্যাট করতে নেমেই শ্রীলঙ্কান ব্যাটাররা টের পেলো, এ উইকেটে ব্যাটিং করা সত্যিই দুরূহ কোনো কাজ। শেষ পর্যন্ত সেটাই ঘটলো। রীতিমত লজ্জা উপহার দিলো লঙ্কান ব্যাটাররা। একা এক মার্কো ইয়ানসেনের হাতে একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা। যার ফলশ্র“তিতে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানের লজ্জা নিয়ে অলআউট হতে হলো ধনঞ্জয়া ডি সিলভাদের। মাত্র ৪২ রানে অলআউট হলো লঙ্কানরা।
দিনের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করেছিল শ্রীলঙ্কার বোলিং লাইনআপ। টেম্বা বাভুমার ৭০ রান ছাড়া আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি এশিয়ান দেশটির পেসারদের বিপক্ষে। ডারবানে সিরিজের প্রথম টেস্টে ১৭১ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু এরপরেই প্রোটিয়া বোলাররা যেন প্রতিশোধ নিলেন। শ্রীলঙ্কাকে ডোবালেন নতুন লজ্জায়। 
শ্রীলঙ্কা নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৪২ রানে অলআউট হলো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। যা দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭১ রানে অলআউট হওয়ার নজির ছিল লঙ্কানদের। ১৯৯৪ সালে ক্যান্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে বিধ্বস্ত হয়েছিল তারা। ডারবানে আজ সেটিকেও ছাপিয়ে গিয়েছে দলটি। 
এছাড়া বলের বিচারে টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন (৮৩ বল) খেলেছে শ্রীলঙ্কা। সেইসঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট ফরম্যাটে তৃতীয় সর্বনিম্ন রানের নজিরও গড়েছে দলটি। 
মূলত পেসার মার্কো জানসেন বিধ্বংসী এক স্পেলেই নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে নতুন লজ্জায় ডুবল শ্রীলঙ্কা। প্রোটিয়া এই পেসার ৬.৫ ওভার বল করে খরচা করেছেন ১৩ রান। নিয়েছেন ৭ উইকেট। বাকি তিন উইকেটের দু’টি গিয়েছে জেরাল্ড কোয়েৎজের কাছে। এক উইকেট কাগিজো রাবাদার। চলতি শতাব্দীতে যেটা দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সেরা বোলিং ফিগার।
দলীয় ৬ রানে ওভারের শেষ বলে দিমুথ কারুনারাতেœকে ফেরান রাবাদা। পুরো ইনিংসে সেটিই তার একমাত্র উইকেট। যদিও ধ্বংসযজ্ঞের শুরুটা করেছেন এরই মাধ্যমে। পরের ওভারে স্কোরবোর্ডে এক রান যোগ হতেই পাথুম নিশাঙ্কা আউট হলেন জানসেনের প্রথম শিকার হয়ে। এরপরেই দীনেশ চান্ডিমাল আর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ফেরান এই পেসার।
কোয়েৎজি যখন ফর্মের তুঙ্গে থাকা কামিন্দু মেন্ডিসকে ফেরালেন, তখনই মূলত লঙ্কানদের প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে যায়। স্কোরবোর্ডে ৩২ রান যোগ করতেই শ্রীলঙ্কা হারায় ৫ উইকেট। পরের ৩ উইকেট হারানোর পথে তারা আর কোনো রানই যোগ করতে পারেনি। ৯ বলের ব্যবধানে ৩২ রানে ৪ উইকেট থেকে শ্রীলঙ্কা হয়ে যায় ৩২ রানে ৮ উইকেট। 
লাহিরু কুমারা ১০ রান করে সেই স্কোর নিয়ে যান ৪২ পর্যন্ত। বিশ্ব ফার্নান্দো আর আসিথা ফার্নান্দো ডাক মারলে ৪২ রানেই থামে শ্রীলঙ্কার ইনিংস। যেটা তাদের টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন সংগ্রহ হয়ে থাকলো। 
৪২ রানে অলআউট হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোরের কীর্তি গড়েছে তারা। শীর্ষে থাকছে প্রোটিয়াদেরই দুই টেস্ট ইনিংস। 
বলের বিচারে টেস্ট ক্রিকেটে এটি গত ১০০ বছরে সর্বনিম্ন ইনিংস। লঙ্কানরা এদিন ডারবানে খেলেছে মোটে ৮৩ বল। আর সামগ্রিক বিচারে এটি টেস্ট ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। সবচেয়ে কম বল খেলে অলআউটের নজিরটাও দক্ষিণ আফ্রিকারই। ১৯২৪ সালে এজবাস্টন টেস্টে মাত্র ৭৫ বলে খেলে ৩০ রানে অলআউট হয়েছিল প্রোটিয়ারা।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ