খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

ভারতকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
১০:৩২ পি.এম | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪


আজিজুল হাকিমের বলে আউট হলেন চেতন শর্মা। বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ নিতেই আনন্দে ভাসল বাংলাদেশ। মাঠে কৃতজ্ঞতার সিজদাহ। উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো যুব এশিয়া কাপ শিরোপা জিতে এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখলো বাংলাদেশ।

আরও একবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। আরও একবার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এশিয়ান ক্রিকেটের সেরা হওয়া। এর আগে যা করেছিলেন মাহফুজুর রহমান রাব্বিরা, সেটাই এবারে করে দেখালেন আজিজুল হক তামিমের দল। তবে এবারে আনন্দের উপলক্ষ্যটাও কিছুটা বেশি। কারণ ফাইনালে যে বাংলাদেশ উড়িয়ে দিয়েছে রেকর্ড ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকেই।

মোহাম্মদ শিহাব জেমস, রিজান হোসেন এবং ফরিদ হাসানের দারুণ তিনটি ইনিংসে যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে ১৯৯ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। শুরুতে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর শিহাব জেমস এবং রিজান হোসেনের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। পরে ফরিদ হাসানের দৃঢ়তায় মাঝারি মানের লক্ষ্য দাঁড় করায় দলটি। জবাবে ইকবাল হোসেন ইমন, আল ফাহাদদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ১৩৯ রানে গুঁটিয়ে যায় ভারত। বাংলাদেশ ফাইনাল ম্যাচটি জিতে ৫৯ রানে। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো যুব এশিয়া কাপ শিরোপা জিতল বাংলাদেশ।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি ভারতের। ২৪ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় দলটি। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম উইকেটটি নেন আল ফাহাদ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে এক রানে থাকা আইয়ুশ মোহাত্রেকে বোল্ড করেন তিনি। পঞ্চম ওভারে ইনফর্ম ওপেনার বৈভব সূর্যবংশীকে বিদায় করেন মারুফ মৃধা। আইপিএলের নিলাম মাতানো ১৩ বছর বয়সী এই ওপেনার সাত বলে নয় রান করে মোহাম্মদ শিহাব জেমসের তালুবন্দি হন।

তারপর আন্দ্রে সিদ্ধার্থ এবং কেপি কার্তিকিয়া প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইলেও পারেননি। আন্দ্রে সিদ্ধার্থকে ২০ রানে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন রিজান হোসেন। ২১তম ওভারে আরও দুই উইকেট হারায় ভারত। ৪৩ বলে ২১ রান করা কেপি কার্তিকিয়াকে বিদায় করেন ইকবাল হোসেন ইমন। এক বল পর শূন্য রানে থাকা নিখিল কুমারকে ঠিক একইভাবে বিদায় করেন ইমন। নিজের পরের ওভারে হারভাশ পাঙ্গালিয়াকেও (৬) একইভাবে বিদায় করেন ইমন।

শেষ তিনটি উইকেটেই ক্যাচ লুফে নেন উইকেটরক্ষক ফরিদ হাসান। স্কোরবোর্ডে ৯২ রান তুলতে নিজেদের সপ্তম উইকেটও হারায় ভারত। কিরন চোরমালেকে এক রানে প্যাভিলিয়নে ফেরান আল ফাহাদ। তারপর অধিনায়ক মোহাম্মদ আমানের সঙ্গে দলের হাল ধরেন হার্দিক রাজ। এই জুটি ভাঙেন অধিনায়ক আজিজুল হাকিম।

ভারতের অধিনায়ক তার অফ স্টাম্পের বাইরের বলটি বুঝতে পারেননি। ব্যাট এবং প্যাডের মাঝ দিয়ে বলটি আঘাত হানে স্টাম্পে। নিজের পরের ওভারে ২১ বলে ২৪ রান করা হার্দিক রাজকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন আজিজুল হাকিম। চাপে পড়া ভারত শেষ উইকেটটি ১৩৯ রানে হারায়।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। সপ্তম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় দলটি। ১৬ বলে এক রান করে জুধাজিত গুহার বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন কালাম সিদ্দিকি। এরপর জাওয়াদ আবরার এবং আজিজুল হাকিম চাইলেও প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। ৩৫ বলে ২০ রান করে চেতন শর্মার বলে ফিরে যান আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারও। আগের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি হাঁকানো আজিজুল হাকিমও এ দিন বিশেষ কিছু করতে পারেননি।

যুবাদের অধিনায়ক ২৮ বলে ১৬ রান করে ফিরে যান। তারপর মোহাম্মদ শিহাব জেমস এবং রিজান হোসেনের ব্যাটে স্বপ্ন বুনতে থাকে বাংলাদেশ। এই দুজন মিলে ৬২ রানের জুটি গড়েন। টাইগারদের ইনিংসে এটাই এ দিনের সর্বোচ্চ রানের জুটি। এই জুটি ভাঙেন আইয়ুশ মোহাত্রে। ৬৭ বলে ৪০ রান করা শিহাব জেমসকে বিদায় করেন তিনি। এরপর দেবাশীষ দেবা এক রানে রানে কেপি কার্তিকিয়ার বলে ফিরে গেলে আবার চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

দলীয় ১৫৫ রানে বিদায় নেন রিজান হোসেনও। হার্দিক রাজের বলে বোল্ড হওয়ায় হাফ সেঞ্চুরি করতে পারেননি তিনি। ৬৫ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন তিনি। শেষদিকে ফরিদ হাসানের ৪৯ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে দুইশ'র কাছাকাছি পৌঁছায় বাংলাদেশ। চেতন শর্মার বলে লেফ বিফোর উইকেটে ফাঁদে পড়েন তিনি। শেষদিকে ১৯ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন মারুফ মৃধা। ৪৯.১ ওভারে ১৯৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

্রিন্ট

আরও সংবদ