খুলনা | রবিবার | ০৫ জানুয়ারী ২০২৫ | ২১ পৌষ ১৪৩১

ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন

শেখ হাসিনার আমলে রাশিয়ার সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি, জড়ালো টিউলিপের নামও

খবর প্রতিবেদন |
১২:৫৩ এ.এম | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪


যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির এমপি-মন্ত্রী ও বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তির পাশাপাশি দেশটির সঙ্গে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার জন্য ১০০ কোটি ডলারের একটি ঋণ চুক্তিও করেন হাসিনা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের অর্থনৈতিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা অর্থমন্ত্রী। চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশের একটি দুর্নীতি বিরোধী তদন্তে তাঁর নাম এসেছে। অভিযোগ, তিনি ২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি সম্পাদনে জড়িত ছিলেন। এই প্রকল্প থেকে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের খালা শেখ হাসিনা সব মিলিয়ে ২০ বছরেরও বেশি সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধেও এই তদন্ত চলছে। পাশাপাশি টিউলিপের মা শেখ রেহানার বিরুদ্ধেও চলছে তদন্ত।
এদিকে, ২০১৩ সালের বিভিন্ন ফুটেজ থেকে দেখা গেছে, টিউলিপ সিদ্দিক ক্রেমলিনে হাসিনা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে চুক্তি সই করতে দেখছেন। এ সময় তাঁর মা শেখ রেহানাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সে সময় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য চুক্তি সই করার পাশাপাশি টিউলিপের খালা বাংলাদেশকে রাশিয়ান অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম কিনতে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার জন্য একটি চুক্তি সই করেন।
হাসিনা-পুতিনের মধ্যে এই চুক্তির পর দেওয়া এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের দেশ দু’টি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী। রাশিয়া (এবং আপনি এই চুক্তি সই হতে দেখেছেন) বাংলাদেশকে রাশিয়ার অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম কিনতে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদান করবে।’
যে সময় চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় সে সময় টিউলিপ সিদ্দিক ছিলেন লেবার কাউন্সিলর। এরপর তিনি ২০১৫ সালে এমপি হন। অর্থাৎ তিনি এমপি হওয়ার ২ বছর আগে এই চুক্তি হয়। লেবার সূত্র বলছে, টিউলিপ সিদ্দিক কেবল তাঁর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য রাশিয়া গিয়েছিলেন এবং তিনি সেই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে কোনো কোনো ভূমিকা পালন করেননি।
লেবার পার্টির এক মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি মেইলকে বলেন, ‘টিউলিপ এমপি হওয়ার দুই বছর আগের দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে এবং এর সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই।’ লেবার পার্টি আরও বলেছে, টিউলিপ দুর্নীতি বিরোধী তদন্ত সম্পর্কিত অভিযোগগুলো পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।তবে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি টিউলিপ সিদ্দিককে যিনি এখন পর্যন্ত অভিযোগের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি সত্য প্রকাশের আহŸান জানিয়েছে। ব্রিটেনের ছায়া মন্ত্রিসভার সদস্য ম্যাট ভিকার্স বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিক এবং কেয়ার স্টারমারকে যে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে হবে-তা ক্রমশ বাড়ছে। স্টারমার কেন সংকটে থাকা আরও এক মন্ত্রীর পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা ব্যাখ্যা করতে হবে।’
এদিকে, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ট্রেজারি বিভাগ নিশ্চিত করেছে যে, টিউলিপ সিদ্দিক দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কিত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন। এক মুখপাত্র বলেন, ‘অর্থনৈতিক সেক্রেটারি এমন কোনো নীতি প্রণয়নে জড়িত নন, যার সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সংযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মুখপাত্র বলেন, ‘মন্ত্রী সরকারে প্রবেশের পর থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কিত কোনো সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত নন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন না, কারণ তিনি সম্ভাব্য স্বার্থের দ্বন্দ্ব এড়াতে নিজেকে বিরত রাখেন। তাঁর স্বার্থ মন্ত্রীদের স্বার্থের তালিকার অংশ হিসেবে সবার সামনে প্রকাশ করা হয়েছে।’

্রিন্ট

আরও সংবদ